কুমিল্লায়
বজ্রপাতে ৫ জন মৃত্যু হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার বরুড়া,
মুরাদনগর ও দেবিদ্বার উপজেলা বজ্রাঘাতে কৃষক ও শিশু-কিশোরসহ ৫ জন প্রাণ
হারায়।
জানা গেছে, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগচ্ছ
গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে
এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা উভয়েই বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
নিহত
দুই কিশোর হলেন পয়ালগচ্ছ গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং
আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি জিহান হোসেন (১৩)। তার বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা
পিহর গ্রামে বাসিন্দা। বরুড়া পয়ালগচ্ছ গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন।
স্বজনরা
জানান, দুপুরে আকাশ ভর্তি মেঘ ছিল। তবে বৃষ্টি ছিল না। চারদিকে হালকা
বাতাস ছিল।এর মধ্যেই ফাহাদ, জিহানসহ সহপাঠীরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল।
হঠাৎ একটি বজ্রপাতে হলে নিহত ফাহাদ, জিহানসহ তিনজন মারাত্মকভাবে আহত হয়।
স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফাহাদ ও
জিহানকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরায় কৃষি
জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুইজন কৃষক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন
আরো ৩ জন। এঘটনার পর থেকে তারা শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহতরা
হলেন, বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কোরবানপুর গ্রামের বীরচরণ দেবনাথের ছেলে
নিখিল চন্দ্র দেবনাথ ও আন্দকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূইয়ার
ছেলে জুয়েল ভূইয়া।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় মুরাদনগর উপজেলার ৪নং পূর্বধৈইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়
সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে কৃষক নিখিল চন্দ্র দেবনাথ ও জুয়েল ভূইয়া
জমিতে ধান কাটার কাজ করতে যায়। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়ে ঝড়ের সাথে বিকট
শব্দে কৃষি জমিতে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই বজ্রপাতেপৃষ্ট হয়ে
দুইকৃষক নিহত হয়।
অন্যদিকে কুমিল্লার দেবিদ্বারের সাহারপাড়ায় নানার সাথে
ধান কাটা দেখে ফেরার পথে বজ্রপাতে মিম আক্তার নামে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মিম চর্তুথ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। সে সাহারপাড় গ্রামের ইমন মিয়ার মেয়ে
মিম আক্তার (১০)।
জানাযায়, কোটকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ
শ্রেনির শিক্ষার্থী মিম আক্তার দুপুরে নানার সাথে মাঠে ধান কাটা দেখে বাড়ি
ফেরার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি
নিশ্চিত করে বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নু এমং মারমা মং বলেন,
বজ্রপাতে মারা যাওয়া ফাহাদ ও জিহানের দাফনের জন্য পরিবারকে ৫ হাজার টাকা
করে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে। তাদের পরিবার অস্বচ্ছল থাকলে তাদেরকে সহযোগিতা
করা হবে।
মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
মাহফুজুর রহমান জানান, কৃষিকাজ করতে গিয়ে কোরবানপুর গ্রামে বজ্রপাতে দুইজন
নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মৃতদেহ পরিবারের নিকট বুঝিয়ে
দেওয়া হয়েছে।
বজ্রপাতে মিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবিদ্বার
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খান বলেন, ফসলি জমিতে ধান
কাটা দেখে ফেরার পথে বজ্রপাতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।