জয়ের
খুব কাছে তখন আবাহনী স্পোর্টিং ক্লাব। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে এক দর্শক
ক্লাবটির পতাকা উড়াচ্ছিলেন, উজ্জীবিত করছিলেন দলকে। তার সঙ্গে হাতে গোণা
কয়েকজন। দেশের পট পরিবর্তনের পর আবাহনীর দুনিয়াও বদলে যেতে থাকে, মাত্র এক
দর্শকের পতাকা দোলানোই তার প্রমাণ।
তবে পরিবর্তন হয়নি মাঠের
পারফরম্যান্সে। একাগ্রতা, দৃঢতা, হার না মানসিকতায় আবার চ্যাম্পিয়ন আবাহনী!
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) প্রতিপক্ষ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে ঢাকা
প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ২৪তম শিরোপা ঘরে তোলে আবাহনী। জয়ের পর
ডাগআউট থেকে ক্রিকেটাররা দৌড়ে এসে উদযাপনে মেতে ওঠেন।
উৎসব বলতে এটুকুই।
ছিল না ডোলের বাদ্য। অথচ আবাহনী চ্যাম্পিয়ন মানেই অন্যরকম কিছু ছিল। বলা
যায় নিরবে মাঠের ক্রিকেটে দারুণ খেলে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে আবাহানী।
এদিকে বিগ বাজেটের তারকাবহুল দল গড়েও মোহামেডানের ট্রফি সংখ্যা এবারও দুই
অঙ্কের ঘরে যেতে পারেনি!
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে
ট্রফির লড়াইয়ে নামে আবাহনী-মোহামেডান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেম ৭ উইকেটে ২৪০
রান করে সাদাকালো ক্লাবটি। তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪০.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে
লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আবাহনী।
জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক
হোসেন সৈকত। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিথুন। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার
১৩৫ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ শেষে দুজনকেই কাঁধে তোলেন
সতীর্থরা। মোসাদ্দেক ৭৮ ও মিথুন ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অথচ প্রথম
ওভারেই শাহরিয়ার কমলকে হারিয়েছিল আবাহনী। এরপর জিসান আলমকে সঙ্গে নিয়ে
ফিফটির জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন পারভেজ হোসেন ইমন। ২৮ রানে ইমন আউট হলে ভাঙে
জুটি। জিসান ফেরেন ৫৫ রান করে। মাঝে মেহরব ১০ রানের বেশি করতে পারেননি।
এরপর বাকি কাজ সেরে দেন মোসাদ্দেক-মিথুন। মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ ২
উইকেট নেন নাসুম আহমেদ।
এর আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-আরিফুল হকের ফিফটিতে
ভর করে মোহামেডান মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে আবাহনীকে। দুজনের
ব্যাট থেকেই আসে সমান ৫০ রান। তবে তাদের ইনিংস ছিল ধীরগতির।মাহমুদউল্লার এই
রান করতে লাগে ৬২ বল আর আরিফুলের নেন ৫৭ বল। রনি তালুকদারের ব্যাটে শুরুটা
ভালো হলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহ করতে পারেনি।
রনির
ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান। মাঝে ৪২ রান করে ফরহাদ হোসেন। শেষ দিকে নাসুম আহমেদ
৪ ও মোস্তাফিজুর রহমান ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৫ রান করেন আনিসুল ইসলাম।
আবাহনীর হয়ে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত দুটি করে উইকেট নেন।