Published : Tuesday, 26 January, 2021 at 12:00 AM, Update: 26.01.2021 12:39:51 AM
তানভীর দিপু:
জলাশয়
কমে গেলেও ইট-পাথরের শহর কুমিল্লায় এখনো আসে অতিথি পাখি। শীতের শুরুতেই
পৃথিবীর উত্তরের দেশগুলো থেকে হাজার অতিথি পাখির দল দক্ষিণ এশিয়ায় আসে,
তাদের মধ্যে অনেকেই উষ্ণতা খুঁজে বাংলাদেশে। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার অবসর
যাপনে চলে আসে ‘ট্যাংক’ এর শহর কুমিল্লায়। শহরের পরিচিত দীঘি বা জলাশয়ে
উত্তরের অতিথিরা বাসা না বাঁধলেও এবার তাদের অনেককেই দেখা গেছে শহরের
পশ্চিমে চম্পকনগর এলাকার একটি জলাশয়ে। এসব পাখির অধিকাংশই বালিহাঁস বলে
জানিয়েছেন ওই পুকুরের মালিক গাজী রিয়াজ। এছাড়া অন্যপ্রজাতির হাঁসও রয়েছে এই
পুকুরে। সাধারণত মাছ চাষের জন্য ব্যবহৃত হলেও এবছর অতিথি পাখি আসায় এবার
মাছও ধরা হয়নি পুকুরটিতে।
গতকাল সোমবার দুপুরে চম্পকনগর সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গাজী রিয়াজের পুকুরে গিয়ে দেখা যায় পানিতে ভাসছে
শত শত বালিহাঁস। গাঢ় বাদামী, হালকা খয়েরি রঙের হাঁসগুলো আবার একটু শব্দেই
উড়ে গিয়ে বসছে আরো একটু দূরে। কেউ কেউ আবার কচুরিপানার ভিড়ে নিজেকে লুকিয়ে
খাবার সংগ্রহে ব্যস্ত। পাখিগুলো যখন আকাশে উড়ে কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠে পুরো
এলাকা।
পুকুরের মালিক গাজী রিয়াজ জানান, গত ৩ বছর ধরেই পাখিগুলো আসছে।
শীতকালে অতিথি পাখি থাকায় পুকুর থেকে মাছ তোলা হয় না। লোকজন যেন তাদেরকে
বিরক্ত না করে এলাকাবাসী সতর্ক আছে। এছাড়া কোন পাখি শিকারী যেন পুকুরের
আশেপাশে ঘেঁষতে না পারে সে জন্য সিসি ক্যামরাও লাগানো হয়েছে।
জানা
গেছে, গত দুয়েক বছর আগেও চিড়িয়াখান-জেলখানার পার্শ্ববর্তী জলাশয়ে অতিথি
পাখির বিচরণ দেখা যেত। ধর্মসাগরেও আসতো অতিথিরা। এবছর সেখানে দেখা যায়নি।
জলাশয় ভরাট আর জলাশয়ের আশেপাশে লোকালয় বেড়ে যাওয়ায় এসব পাখিরা আর আসছেও না।
তথ্য মতে, চম্পকনগর এলাকায় আসা অতিথি পাখিগুলো বালিহাঁস বা রুডি
শেলডাক। বালি হাঁসেরা বাস করে ইউরোপ, মধ্য এশিয়া আর উত্তর-পশ্চিম চীনে। আর
শীত এলেই আমাদের দেশে এসে ঘুরে যায়। অবশ্য দিনদিন ইউরোপে বালি হাঁস কমে
যাচ্ছে। তবে গিরিয়া হাঁস যেমন দলবেঁধে থাকতে পছন্দ করে, এরা কিন্তু ঠিক তার
উল্টো। এদের পছন্দ একা একা থাকা, কিংবা জোড়ায় জোড়ায় থাকা। পরিভ্রমণে বের
হওয়া ছাড়া এরা সাধারণত বড়ো একটা দল বাঁধে না। তবে তিব্বত ও মঙ্গোলিয়ায় এই
পাখিকে কিন্তু পবিত্র পাখি বলে মনে করা হয়। বৌদ্ধদের কাছেও এই পাখির বিশেষ
গুরুত্ব আছে। এই পাখি তাদের কাছেও এক পবিত্র পাখি, নাম ব্রাহ্মিণী পাখি।