চাঁদপুর সদর উপজেলার মমিনপুর মিয়াজী বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা ভাবীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে দেবরের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এস.এম জিয়াউর রহমান। গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এ রায় প্রদান করেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে মমিনপুর মিয়াজী বাড়িতে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ফরিদগঞ্জ উপজেলার কোয়া গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির তাজল ইসলাম পাটওয়ারীর কন্যা শারমিন আক্তার (২১) কে মমিনপুর মিজি বাড়ির নুরজাহান বেগমের ছেলে ইউসুফ মিজির সাথে ইসলামী শরীয়ত মতে বিবাহ দেওয়া হয়। বিয়ের পর শারমিনের স্বামী ইউসুফ মিজি প্রবাসে চলে যায়। ইউসুফের ছোট ভাই ইয়াছিন মিজি তাকে বিদেশ নেওয়ার জন্য ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। এ সময় সৌদিআরবের ভিসা বন্ধ হয়ে গেলে ইউসুফ মিজি তার ছোট ভাই ইয়াছিন মিজিকে বিদেশে নিতে পারেনি। ইয়াছিন ভেবেছে ইউসুফের স্ত্রী শারমিন আক্তার তার স্বামীকে বারণ করেছিল দেবর ইয়াছিনকে বিদেশ না নেওয়ার জন্য। এই নিয়ে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে ইয়াছিন মিজি উত্তেজিত হয়ে বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তারকে ঘটনার দিন সকালে উপযোপুরি ছুরিকাঘাত করলে সে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ইয়াছিন মিজিকে আটক করে। ততক্ষনে শারমিন আক্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ঘটনার দিনই নিহত শারমিনের পিতা তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৯, তারিখ : ০৬/০৯/২০১৭ইং। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর মডেল থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম তদন্ত শেষে আটক আসামী ইয়াছিন মিজির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর মামলাটি বিচারাধীন থাকার পর ১৬ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এস.এম জিয়াউর রহমান বিকেল সাড়ে ৪টায় আটক আসামী ইয়াছিন মিজির উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও নগদ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড রায় ঘোষনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাড. মুক্তার হোসেন অভি ও আসামী পক্ষে অ্যাড. মোঃ মাসুদ ভূইয়া।