
এডভোকেট গোলাম ফারুক ||
১৯৫২ খ্রি: ২১ শে ফেব্রুয়ারির মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৯ বৎসর পর কুমিল্লায় সন্ধ্যান মিলল এক ভাষা সৈনিক ও একুশের প্রথম উপন্যাস এর লেখক কুমিল্লা জেলার সন্তান আবদুল অদুদ চৌধুরীর।
মাতৃভাষা আন্দোলন ও আর্šÍজাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতিষ্ঠায় কুমিল্লার সূর্য্য সন্তান শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ও বন্ধু রফিকুল ইসলামের রয়েছে এক সোনালী ইতিহাস এই সূর্য্য সন্তানদের সাথে একুশের প্রথম উপন্যাস এর লিখক ভাষা সৈনিক আবদুল অদুদ চৌধুরীর নাম আজ সংযুক্ত হলো।
মহান ভাষা আন্দোলনের পঁয়ষট্টি বছর পর জানা গিয়াছিল একুশের প্রথম উপন্যাস লিখেছিলেন তৎকালিন ত্রিপুরা কালেক্টরেট (বর্তমান কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রাজস্ব অফিসের নকল নবিস (বর্তমান পদবী কারনিক) কুমিল্লা কোতয়ালী (বর্তমান আদর্শ সদর উপজেলা)র রসুলপুর গ্রামের সন্তান ভাষা সৈনিক আবদুল অদুদ চৌধুরী। এতদিন আমরা জানতাম ১৯৬৯ সালে জহির রায়হান রচিত ‘আরেক ফাল্গুন’ ই প্রথম একুশের উপন্যাস।
ইতিহাস সন্ধ্যানে জানা যায় কুমিল্লার এই কৃতি ভাষা সৈনিক একুশের প্রথম উপন্যাস ‘বীজাঙ্কুর’ প্রথম প্রকাশ করেছিলেন ১৯৫৪ সালে। যা ছিল জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুনের’ ১৫ বছর পূর্বে।
এবার আসি কি ভাবে খুঁজে পেলাম আবদুল অদুদ চৌধুরী কে। ভাষা সৈনিক আবদুল অদুদ চৌধুরীর জেষ্ঠ সন্তান আবদুল আহাদ চৌধুরী, পিতা আদর করে তার নাম দিয়েছিল কিষাণ, ১৯৬৯ সনে আহাদ চৌধুরী নব গঠিত কুমিল্লা বেসরকারী কলেজের ছাত্র। তখনকার পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের তুখোর কর্মী ও নেতা। সেই সময় থেকে তার সাথে পরিচয়। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও গন অভ্যুত্থান এর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠা ছাত্র নেতা। ১৯৭০ সালে কুমিল্লা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মনোনিত মকবুল- আহাদ কেবিনেটে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সেই একই বৎসরে আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদে ছাত্র ইউনিয়ন এর মনোনয়নে ফারুক- নাসরুল কেবিনেটে ভিপি পদে নির্বাচন করি। আহাদের সাথে আমার ঘনিষ্টতা অনেক দিনের। সদালাপি অত্যন্ত বিনয়ী এই অনুজ জীবন সংগ্রামে কবে যে হারিয়ে গেল তা স্মৃতি পটে ধারন করতে পারিনি। স্বাধীনতার পরবর্তী কালে এসে দেখা হলে কুশল বিনিময় হতো এই যা।
দীর্ঘ সময় পেড়িয়ে ২০১৯ সালে আমার সাথে তার দেখা, তার সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে তার জমির হুকুম দখলের পাওনা টাকা আদায়ের আইনী জটিলতা নিয়ে। আমার বাসায় আইনী আলাপ চারিতার মাঝে ভেষে উঠল কৃষানের বাবার ভাষা সৈনিক হওয়ার কথা ও তার বাবার লিখা একুশের উপন্যাস ‘বীজাঙ্কুর’ নিয়ে কথা। দেখতে দেখতে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাস চলে এলো কিষাণ তার বাবার লিখা ‘বীজাঙ্কুর’ উপন্যাস খানা আমার কাছে হাজির করতে সক্ষম হলো। পেশা ও জীবিকার কাজে এ বিষয়ে আর কিছু লিখা হলো না। এর ই মধ্যে ২০২০ এর মার্চ এ চলে এলো বিশ^ ব্যাপি করোনার থাবা বন্ধ হয়ে গেল সব।
গত একুশের(২০২০) কথা মনে করে কৃষান এর সাথে যোগাযোগ। বেরিয়ে এলো কৃষাণ এর বাবা আবদুল অদুদ চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবনের কথা। আবদুল অদুদ চৌধুরী পাকিস্তান আমলে সরকারী চাকুরী করে ও কিভাবে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন সেই সময়ের বাম ধারার রাজনীতির সাথে। অদুদ চৌধুরীর সেই সময়ের রাজনৈতিক ঘনিষ্ট জনেরা ছিলেন-ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি- সুখেন্দু চক্রবর্তী (শিল্পী), সহ-সভাপতি শাহ আবদুল অদুদ (ন্যাপ), সম্পাদক- ধীরেন্দ্র দত্ত, সদস্য- ওয়াজি উল্লাহ (ন্যাপ), চিত্ত বসু (কমরেড)। তমুদ্দুন মজলিসের- সভাপতি- সফিউল হক, সম্পাদক- নুরুল্লাহ। গনতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (ডি.এস.এফ) ফয়েজউল্লাহ (ন্যাপ), মোহাম্মদ উল্লাহ (নিরক্ষণ সম্পাদক), চিত্ত বসু (কমরেড), আমীরুল ইসলাম মজুমদার, আলী আক্কাস (বাগমারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক), জালাল উদ্দিন সানু (ভারত কেন্দ্রীয় সরকারের-সচিব), পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগের: সভাপতি-জিয়াউল হক, সহ- সভাপতি ফয়েজউল্লাহ (ন্যাপ), সাধারণ সম্পাদক- মোহাম্মদউল্লাহ (নিরক্ষণ) সৈয়দ আমিরুল ইসলাম(বিচারপতি) আলী তাহের মজুমদার (কৃষক লীগ) কালের বিবর্তনে এদের মধ্যে অদুদ চৌধুরীর সাথে ঘনিষ্টতা ছিল ফয়জুল্লাহ, মোহাম্মদ উল্লাহ ও আলী তাহের মজুমদার এর সাথে তখনকার রাজনীতিতে জেল অথবা আতœগোপন ছিল রাজনৈতিক নেতাদের জীবনাচার। ফয়জুল্লাহ সাহেব বঙ্গবন্ধুর মৃত্যূর পর এ দীর্ঘ সময় অদুদ চৌধুরীর বাড়ীতে আশ্রয়ে ছিলেন। অদুদ চৌধুরীর ছেলে কিষাণ এর প্রদত্ত তথ্য থেকে আরো জানা যায়, ১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে ন্যাপ এর প্রার্থী ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহাম্মদ রসুল পুরের জনসভা উপলক্ষে আবদুল অদুদ চৌধুরীর বাড়ীতে আতিথ্য গ্রহন করেছিলেন।
এবার অদুদ চৌধুরীর একুশের উপন্যাসের কথায় আশা যাক-১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন শেষ হলে ও তার রেশ শেষ হয়নি। যার ছোয়া পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন ও তৎসময় বাম ধারার রাজনীতির সাথে তার গোপন সম্পর্ক। তার মধ্যে ভবিষ্যত রাজনীতির চিত্র তার মানষ পটে স্থান করে নেয়। এই সুগভির চিন্তা থেকে ই তিনি ১৯৫৪ সালে লিখেন এদেশের প্রথম একুশের উপন্যাস ‘বীজাঙ্কুর’। উপন্যাসটি প্রকাশের পর ই নিষিদ্ধ হলো। গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হলো। অদুদ চৌধুরী গ্রেফতার হলেন এবং তিনি চাকুরি হারালেন।
দ্বিতীয় বার ‘বীজাঙ্কুর’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৭ সালে তবে ‘বীজাঙ্কুর’ নামে নয়; এবার উপন্যাসের নাম করন করা হলো “ তুমি কি সুন্দর” এই নামে। কিন্তু ভিতরের মূল আখ্যান হুবাহু ঠিক রাখা হয়। শিরোনাম পাল্টানোর কারন ‘বীজাঙ্কুর’ কে সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষনা, লেখকের উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং লেখককে চাকুরিচ্যুত করা। লেখককে রক্ষা করার জন্য বইটি হযরত মুহাম্মদ স: কে উৎসর্গ করা। বইটি যে কারনে নিষিদ্ধ হয়েছিল-
এই উপন্যাসের নায়ক এক অন্ধ গায়ক মতিন। গায়ক মতিন মাতৃ ভাষা বাংলার গান গেয়ে ভাষা আন্দোলনের সময় প্রাণ দেয়। উপন্যাসটির অনুসঙ্গে রয়েছে গ্রামীন পটভূমি। রেহেনার ভালবাসার গল্প, আরো আছে মিনু, মাহমুদ, নয়নী, পারভিন, শ্যামল নাছির, এর ঘটনা এবং রবিন্দ্রনাথের অনবদ্য প্রসঙ্গ। ঘটনার বর্ণণায় নজরুল ও জসিমউদ্দিনের কবিতার প্রয়োগ এবং বিণ্যাসে মধুসুধন, শরৎচন্দ্র, মাইকেল এর স্ত্রী হেনরিয়েটার কথা তার সাহিত্য জ্ঞানের কথা জানিয়ে দেয়। আরো আছে ৫০ এর মনমন্তরের ছবি। উপন্যাসের শব্দের গাথুনি ও বাক্য বিন্যাস সহজ সরল। ভাষার কোন কাঠিন্য নেই। লেখক অদুদ চৌধুরী ছিলেন প্রচন্ড ভাবে রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান।
অদুদ উপন্যাসের ৮২ পৃষ্টায় লিখেছে- মতিন গলায় হারমুনিয়াম ঝুলিয়ে বেড়িয়ে পরল রাস্তায় সাধারণ অন্ধ ভিকারির বেশে লাঠি টুকে টুকে। ছেলে মেয়েদের দল ও চলছিল পাঠশালায়। ঘিরে ধরল, এই ফকির আমাদের একটি গান শুনাও! তুমি যেখানে যাবে সেখানে পৌঁছে দেব। এগিয়ে চলল গান গাইতে গাইতে। রাস্তার লোকেরা হা করে চেয়ে থাকে; এ কি! যেন হেমিলনের বংশী বাদক।
তখন পূর্ব পাকিস্তানের ঘরে ঘরে চলছিল রাষ্ট্র ভাষার আলোচনা, মোল্লাদের কেউ কেউ সমর্থন করল উর্দ্দু। একজন আরেকজনকে বুঝাতে লাগল রাষ্ট্র ভাষা যদি উর্দ্দু হয়, তা হলে হ্যাটওয়ালা ইংরেজি পড়–য়াদের কোন দাম ই থাকবে না। আর এই অবহেলিত কোর্ত্তা ওয়ালারাই হবে রাষ্ট্রের মেরুদন্ড।
অন্য দিকে বলতে লাগল, হে ইমান ওয়ালা মুসলমান ভাইগন। তোমরা এই কথা নিশ্চয় জান যে, আরবী , ফারসী ও উর্দ্দু ভাষীদের মধ্যেই যতসব বুজর্গান পীর আওলিয়া জম্ম হয়েছে কিন্তু বাংলায় তো কোন দিন হয় নাই, হবে ও না। আর আরবী হরফে অর্থাৎ যে হরফ দিয়ে কোরআন লেখা হয়েছে সেই হরফেই উর্দ্দু ভাষায় লেখা হয়। উর্দ্দুকেই তোমরা সমর্থন কর। কয়েকটা হিন্দু ঘেষা লেংটা ছাত্রের কথায় বিভ্রান্ত হইওনা। ধর্ম ভিরু পাকিস্তানী মোসলমানদের রক্ত ঠান্ডা হয়ে এল প্রায়।
এমনি সময়ে ছোট ছোট ছেলেদের দলে মিশে গান গেয়ে চলল মতিন.......................
যে ভাষাতে গান গাহিয়া ঘুম পারাতেন মা
নমি : মোরা সেই ভাষারে চুমি ভাষার পা।
ভুলতে কি ভাই পারি মোরা
মোদের মায়ের ভাষা
যে ভাষাতে সুখে দঃুখে
করব কাঁদা হাসা।
এই ভাষাকে ভুলিয়ে দিতে
বুলেট যদি আসে
রক্ষা পেতে দিব মোরা
ফুলের মত হেসে।
এক পর্যায়ে মতিন ভাষার মিছিলে শরীক হলো। এখন সে অন্ধ নয়। কিছুদিন পূর্বে তার চোখ অপারেশনের ফলে অন্ধত্ব দূর হয়। মিছিলে পাকি সরকার প্রথমে লাঠি চার্জ, পরে গুলি করে। এতে মতিন শহীদ হয়।
এখানে ই উপন্যাসের সমাাপ্তি।
তবে শেষ পাতায় এবং আবদুল অদুদ লিখেছেন : মতিন তাহার বুকের তাঁজা খুন মিশিয়ে যে বীজ বপন করে গেছে তা ‘বীজাঙ্কুরিত’ হবে।
বীজাঙ্কুরের সন্ধানে মিলল যে ভাবে- কুমিল্লা বেতার কেন্দ্রের নাট্য প্রযোজক সৈয়দ মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন বুড়িচং উপজেলার আনন্দপুর ইত্তর পাড়াস্থ দশ দিগন্ত পাঠাগারে একুশের প্রথম উপন্যাস বীজাঙ্কুরের সন্ধান পান। যা প্রকাশিত হয়ে ছিল ১৯৫৭ সালে(যা ছিল বীজাস্কুরের ২য় প্রকাশনা) বইটির অবস্থা এতটাই লাজুক ছিল যে পাতা উল্টালেই ছিড়ে যেত। তাই তিনি বীজাস্কুর পুনঃ প্রকাশনার উদ্দ্যেগ নেন এবং ২০১৯খ্রিঃ বইটি পুনঃ প্রকাশিত হয়।
এইবার এই অদুদ চেীধুরীর পরিচয় এর পালা
আব্দুল অদুদ চেীধুরী
পিতা: মরহুম আব্দুল হাকিম চেীধুরী
মাতা: খোদেজা বেগম
গ্রাম: রসুল পুর
ডাক ঘর : সদর রসুল পুর
থানা : আদর্শ সদর
জেলা : কুমিল্লা।
জম্ম : ১ লা জানুয়ারী ১৯১৩ খ্রি:
রসুলপুর জুনিয়র মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে, মাধ্যমিক শিক্ষা কুমিল্লা বঙ্গ বিদ্যালয় (বর্তমানে কুমিল্লা হাই স্কুল) হতে সমাপ্ত করে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উর্ত্তীন হন। শুরু হয় জীবন ও জীবিকার সংগ্রাম তিনি ত্রিপুরা কালেক্টরেট (বর্তমান জেলা প্রশাসক) কার্যালয় নকল নবিস এর কাজ যোগদান করেন। সরকারী চাকুরী জীবী হয়ে ও তিনি ভাষা আন্দেলনে বলিষ্ট ভূমিকা রাখেন। (যা পূর্বে আলোচিত হয়েছে)।
১৯৫৪ সালে তিনি প্রকাশ করেন ভাষা আন্দোলন এর প্রথম উপন্যান ‘বীজাঙ্কুর’ এর পর ই তার উপর নেমে আসে জেল- জুলুম ও হুলিয়া। চাকুরীচ্যুত হন আবদুল আদুদ চেীধূরী।
১৯৭১ নালে মুক্তিযুদ্ধা শুরু হলে তিনি তার চাকুরী স্থল কসবা থানার বায়েক তহসিল বন্ধ করে দিয়া স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। তার জেষ্ঠ্য ছেলে আব্দুল আহাদ চেীধুরী কিষাণ ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী, ৭১ সালে পাক বাহিনীর দখলে থাকা রসুলপুর মুক্ত হলে ভারতীয় বাহিনীর সাথে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন আঃ অদুদ চৌধুরী। ১৯৭২ সালে চাকুরী ফিরে পেলে এ.ডি.সি.(রাজস্ব) মনিরুজ্জামান অদুদ চেীধুরী কে তহসিল নোয়াখালী বদলীর আদেশ দিলে তিনি বলেন আমার ফেলে যাওয়ার বায়েক তহসিল অফিসেই আমি যোগ দিব। তাকে আবারো স্বাধীন বাংলাদেশে চাকুরীচ্যুত হতে হয়। চাকুরিচ্যুতির ১৭ বৎসর পর তাকে সামান্য পেনশন দিয়ে চাকুরী থেকে বিদায় দেওয়া হয় । বিক্ষুদ্ধ অদুদ চৌধুরী : এ বিষয়ে কমিশনারের নিকট মামলা করেন। যার ফলাফল আজও হয় নি।
১৯৯৬ সনে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে এই নিভৃতচারি মানুষটি ২০০৮খ্রি: ১২বছর শষ্যাশায়ী থেকে ১৩ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান। যৌবনে আব্দুল অদুদ চৌধুরী ঐশী বিশ^াসের প্রতি আস্থাহীন ছিলেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি আধ্যাত্ম সাধনার জীবন অতিবাহিত করেছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে এই ভাষা সৈনিক ও মুুক্তিযোদ্ধা না পেলেন ভাষা সৈনিক এর মর্যাদা, না পেলেন মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা। উপরন্তু তার সন্তান আবদুৃল আহাদ চেীধুরী কলম যুদ্ধ করে যাচ্ছেন সরকারের সাথে তার পৈত্রিক সম্পত্তির বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃক একোয়ার কৃত টাকার ন্যায্য প্রাপ্তির জন্য।
তথ্য সূত্র- পরিবার
লেখক পরিচিতি
এডভোকেট গোলাম ফারুক
লেখক ও গবেষক
প্রাণের ভাষা
মাসুদা তোফা
অনাদরে অবহেলায় চলছে মায়ের ভাষা
লিখছি বানান যে যার মতন খেলছি যেনো পাশা।
সালাম বরকত রফিক জব্বার জীবন দিল আশায়
ভাষা হবে, বলবে কথা বাংলা মায়ের ভাষায়।
শিমুল পলাশ ফুলে হলো বর্ণমালার মালা
বায়ান্নতে রক্ত ঢেলে গাঁথলো ভাষার মালা।
শহিদদের সে রক্তের দামে বাংলা ভাষায় লিখি
ভালোবাসা কৃতজ্ঞতায় তাঁদের স্মরণ রাখি।
প্রাণের ভাষা পেলাম যখন রাখি তারে প্রাণে
বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস মানে।
ভাষা এলো , স্বাধীন দেশের স্বপ্ন আশা এলো,
রক্তের দামে সোনার দেশের স্বপ্ন পূরণ হলো।
বিশ্ব সেরা হবে এদেশ স্বপ্ন শুধু দেখি
বুকের মাঝে এই ছবিটি সারাণই রাখি ।
বাংলা আমার প্রাণের ভাষা, প্রাণ জুড়ানো দেশটা
জনম জনম থাকুক মাগো ভালবাসার রেশটা
গর্ব যত ঋণ যে তত তোমার তরে আমার
বিপদ এলে রাখবো তোমায় বুক পকেটে জামার।
একুশ মানে
ডা.মল্লিকা বিশ্বাস
একুশ মানে দৃপ্ত মিছিল স্পর্ধিত যৌবন
একুশ মানে আগুন রাঙ্গা
শিমুল পলাশের বন।
একুশ মানে প্রথম প্রতিবাদী শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ।
একুশ মানে কবি নজরুল,
জাতীয় সঙ্গীতে রবীন্দ্রনাথ।
একুশ মানে রফিক,
শফিক, সালাম,জব্বার
একুশ মানে মায়ের ভাষার অধিকার
তোমার আমার সব্বার।
একুশ মোদের বুঝতে শেখায় পরাধীনতার ব্যথা
একুশ মোদের ভাবতে শেখায় স্বাধীনতার কথা।
স্বাধীনতায় একুশ আছে বিজয়েতেও একুশ।
বায়ান্নতেও একুশ ছিল একাত্তরেও একুশ।
একুশ মানে ভাষার জন্য রক্ত দেয়ার সাহস
একুশ শুধু বাংলার নয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।