ইসমাইল
নয়ন।। কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে দু'পক্ষের
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের একজন করে দু'গ্রুপের দুজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে
এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুরুষশূন্য হয়ে গেছে পুরো গ্রাম। এলাকায়
পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা যায়, গত বছর ২৯
ডিসেম্বর নাগাইশ গ্রামে খালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দু'গ্রুপের মধ্যে
মারামারির ঘটনায় মোসলেম উদ্দিন নামে একজন মারা যায়। ওই ঘটনার জের ধরে
নাগাইশ গ্রামের মফিজ মেম্বারের নেতৃত্বে বড় দল ও বাবুল মেম্বারের নেতৃত্বে
ছোট দলের মধ্যে থেমে থেমে হামলা ও পাল্টা হামলা চলে আসছিল। গত ২৫ এপ্রিল
ছোট দলের লোকজন বড় দলের প্রবাসী আশরাফুলের উপর হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে
মারাত্মকভাবে আহত করা হলে তাকে কুমিল্লায় চিকিৎসার পর ২৭ এপ্রিল মঙ্গলবার
ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়
দলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা বাড়িঘর ভাঙচুর এবং পুলিশসহ অন্তত ২০ জন
আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
করাসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী ও সহকারি পুলিশ
সুপার (দেবিদ্ধার সার্কেল) আমিরুল্লাহ, থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু
নাহা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ঘটনার পর থেকে ছোট দলের লোকজন এলাকা ছেড়ে
পালিয়ে যায় তাদের বাড়িঘর বর্তমানে পুরুষশূন্য হয়ে আছে। তারা পাকা ধান
ঘড়ে উঠাতে পারছে না। বাড়িঘরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নারী ও শিশু। ছোট দল
সমর্থিত বাচ্চু মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির থাই গ্লাস ভাঙচুরের
অভিযোগ করেন তার স্ত্রী হেলেনা বেগম। ছেলের বউ ফাতেমা বেগম বলেন, রাতের
বেলায় ১০/১৫ জনের মুখোশধারী লোকজন আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে
স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সাসহ আমাদের একটি বিদেশি গাভী লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগ পাওয়া যায়, দক্ষিণপাড়া দুধ ব্যাপারী সবুজের একটি গাভী, মৃত কেতন
আলীর ছেলে আবদুল আলীমের ১টি গাভী, জসীম উদ্দীনের দুইটি গরু, মনোয়ারা
বেগমের দুটি গরু, পলি আক্তারের অপু মোবাইল ফোন লুটসহ রাজাপ্রবাশের বাড়ির
মহিলাদের গালাগালিও নারী-শিশুকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বাড়িতে পুরুষ মানুষ
থাকতে না পারায় বেশ কয়েক কানি জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না ছোট
দলের লোকজন। পাকা ধান ঘরে তোলা সহ এলাকায় নিজেদের বাড়ি ঘরে ফিরে যেতে চান
ওই গ্রামের লোকজন। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা
বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে। কোন অবস্থাতেই হামলা লুটপাট ও
ভাঙচুরের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। এলাকায় কেউ কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা
সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ কোনো সন্ত্রাসী
কর্মকাণ্ড ঘটাতে চাইলে তাৎক্ষণিক টহলরত পুলিশকে জানালে তারা অবশ্যই
ব্যাবস্থা নিবে। তিনি নির্বিঘ্নে এলাকাবাসীকে পাকা ধান গড়ে তোলার আহ্বান
জানান।