ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করুন
Published : Tuesday, 4 May, 2021 at 12:00 AM
টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করুনপ্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনার থাবা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। দৈনিক মৃত্যু সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে বহু রোগী। ভারতে ট্রিপল মিউট্যান্ট যে ভেরিয়েন্ট বা ধরনটি পাওয়া গেছে তার সংক্রমণমতা প্রায় ৩০০ গুণ। ফলে সারা দুনিয়ায় এখন সবচেয়ে বেশি ভয়ের কারণ এই ভারতীয় ধরন। অন্য অনেক দেশ ভারতের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশও দুই সপ্তাহের জন্য ভারতের সঙ্গে জল, স্থল ও আকাশপথে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষ েেত্র ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা ভারতে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র নিয়ে আসতে পারবেন। ২৬ এপ্রিল এই ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৯৭৫ জন বাংলাদেশি ভারত থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে তাঁদের সরাসরি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে, বাকিদেরও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরন যদি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। অথচ এখনো দেশে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব চরম পর্যায়ে।
রাজধানীর শপিং মল, মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে। হাতে গোনা দু-একটি শপিং মল ছাড়া কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বললেই চলে। অনেক শপিং মলেই হাত ধোয়ার বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা নেই। তাপমাত্রা মাপারও ব্যবস্থা নেই। ক্রেতাদের প্রায় কেউই সামাজিক দূরত্ব মানছে না। একই অবস্থা রাস্তায়ও। বাস না থাকায় মানুষ সিএনজি, অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ আর কিছু যানবাহনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোর অবস্থা রীতিমতো শোচনীয়। সেখানে ন্যূনতম নিয়ম-কানুনও মানা হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতা অনেকেই মাস্ক পর্যন্ত পরে না। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদে বাড়ি ফেরা। নৌপথে লঞ্চের বদলে যাত্রী বহন করছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট। মহাসড়কে যাত্রী বহন করছে মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক। ঢাকার বাইরে নসিমন, করিমনসহ নানা ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনও ঈদে ঘরমুখো যাত্রী পরিবহন করছে। এরই মধ্যে ফেরিঘাটগুলোতে যাত্রীদের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি এর মধ্যে সতর্ক করেছে, এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি শিগগিরই খুব খারাপ হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ অবস্থায় টিকাদান কর্মসূচি যত ব্যাপক করা যাবে, করোনা নিয়ন্ত্রণে তা তত বেশি সহায়ক হবে। কিন্তু ভারতের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়ায় বাংলাদেশে টিকার সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে টিকা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ঘোষণা করেছেন, যত টাকা লাগে লাগুক, বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য টিকার জোগান নিশ্চিত করা হবে। চীন, রাশিয়াসহ অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা আশা করি, অচিরেই আমাদের টিকার সংকট কেটে যাবে।