গত রোববার (১৫ আগস্ট) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে কার্যত পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানের সরকার গঠনের অপেক্ষা। এর মধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে যে, বিভিন্ন দেশ তালেবানকে স্বীকৃতি দেবে কীনা। আর এই তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে আফগানিস্তানে নতুন তালেবান সরকার গঠিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির অপেক্ষায় আছে অনেক দেশ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তালেবানের পরবর্তী আচরণের ওপর নির্ভর করছে যে, তাদের নতুন সরকারকে ওয়াশিংটন স্বীকৃতি দেবে কীনা। তালেবানের নতুন সরকার যদি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখায় বিশেষ করে নারী অধিকার রক্ষা করে তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বীকৃতি দেবে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নিড প্রাইস সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, তালেবান সরকার গঠনের পর তাদের আচরণ ও কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের আন্তর্জাতিক মিত্র দেশগুলো।
এক সংবাদ সম্মেলনে নিড প্রাইস বলেন, তালেবান সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দিলে এবং দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার বিশেষ করে এর অর্ধেক জনগোষ্ঠী অর্থাৎ নারী ও কন্যা শিশুদের মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখালে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। তবে তালেবান গঠিত সরকার যদি এসব শর্ত মেনে না চলে তবে তাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে সর্বশেষ দেশ হিসেবে এবার আফগানিস্তান ছাড়ছে ভারত। বিশেষ বিমানে করে কাবুল দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মীদের সরিয়ে আনা হচ্ছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক টুইট বার্তায় বলেন, তাদের খুব তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
বিদেশি দূতাবাসগুলো চলে যাওয়ার ফলে কাবুলে মাত্র তিনটি দেশের দূতাবাস থাকছে। এগুলো হলো- রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান। ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে যে, তারা দেশটিতে ছোট একটি কূটনৈতিক মিশন রাখবে, তবে এর মধ্যেই তারাও দূতাবাস খালি করে ফেলছে।
এর আগে রাশিয়া জানিয়েছিল যে, তারা তাদের দূতাবাস কর্মীদের একটি অংশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। দেশটির রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি যিরনভের মঙ্গলবার তালেবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
চীনের দূতাবাস জানায়নি যে, তারা কী করতে যাচ্ছে। তবে দেশটিতে থাকা চীনের নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে যে, তারা যেন নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক থাকে।
অপরদিকে রাজধানী কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার একদিন পর বিশ্বের সব দেশকে আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি তাদের নির্বাসিত করা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।