করোনা
মহামারির প্রকোপ কিছুটা কমলেও এখনো তা স্বস্তিদায়ক নয়। বুধবার সকাল ৮টার
আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আরো ৭৯ জন। একই সময়ে করোনা
শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৬২ জনের, নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল
১০.১১ শতাংশ। প্রায় তিন মাস পর শনাক্তের হার ১০ শতাংশের ঘরে নেমেছে।
আক্রান্তের হার কিছুটা কমে আসার জন্য বিশেষজ্ঞরা মূলত কৃতিত্ব দি”েছন
ব্যাপক হারে টিকা প্রদানকে। মাঝখানে টিকার কিছুটা সংকট তৈরি হলেও এখন তা
কেটে গেছে। বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জানিয়েছেন, সরকার এ পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) মোট ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০০
ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যব¯’া করেছে। তিনি জানান, আগামী মাস থেকে প্রতি মাসে
দুই কোটি ডোজ করে সিনোফার্মের টিকা আসবে। বর্তমানে সারা বিশ্বে টিকার যে
সংকট চলছে, তাতে এই পরিমাণ টিকা সংগ্রহ করতে পারা অবশ্যই একটি বড় সাফল্য।
দেশে
১৮ বছরের ঊর্ধ্বে মোট জনসংখ্যা রয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ। এ জন্য প্রয়োজন হবে
জনপ্রতি দুই ডোজ হিসেবে প্রায় ২৪ কোটি ডোজ টিকা। এই পরিকল্পনায় ৬ শতাংশ
মানুষকে দুই ডোজ এবং ১৫ শতাংশ মানুষকে এক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন
করা আছে প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষের। এ পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে প্রায় চার
কোটি। স্বা¯’্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ১৬ থেকে ১৭
কোটি ডোজ টিকা দেশে আসতে পারে। তার ভিত্তিতে প্রতি মাসে দুই কোটি মানুষকে
টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলেও তিনি জানান। খুব কম দেশই টিকা
প্রদানের ক্ষেত্রে এমন সাফল্য দেখাতে পেরেছে। টিকা প্রদানের এই গতি অব্যাহত
রাখতে হবে এবং উত্তরোত্তর আরো বাড়াতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও যেন
সহজেই টিকা নিতে পারে তার ব্যব¯’া করতে হবে। যত দ্রæত সব মানুষকে টিকার
আওতায় আনা যাবে, ততই মঙ্গল। দেশে টিকা উৎপাদনের বিষয়টিও দ্রæততর করা
প্রয়োজন।
আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা মোকাবেলায় টিকাই সম্পূর্ণ সমাধান
নয়। প্রতিনিয়ত করোনাভাইরাসের মিউটেশন হ”েছ। নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট আসছে। সব
ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে সব টিকা সমানভাবে কার্যকর নাও হতে পারে। অন্যদিকে
ইউরোপ-আমেরিকার বেশির ভাগ দেশে অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হলেও সেসব
দেশে আবারও সংক্রমণ দ্রæততর হতে শুরু করেছে। অর্থাৎ টিকা দেওয়ার পরও মানুষ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে এবং হ”েছ। তাই টিকা দেওয়ার পরও যথাযথভাবে
স্বা¯’্যবিধি মেনে চলা জরুরি। সর্বত্র স্বা¯’্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি
নজরদারিতে রাখতে হবে। নো মাস্ক নো সার্ভিসের মতো বিধি-নিষেধ সঠিকভাবে মেনে
চলতে হবে। এই পর্যায়ে ব্যক্তিগত সচেতনতা খুবই জরুরি। সবাইকে নিজের উদ্যোগে
স্বা¯’্যবিধি মেনে চলতে হবে। সম্মিলিতভাবে করোনার নতুন ঢেউ রুখতে হবে।