রিয়ালের গোল উৎসবে ভিনিসিউসের হ্যাটট্রিক
Published : Saturday, 14 May, 2022 at 12:00 AM
নিয়মিত
খেলোয়াড়দের অনেকেই না থাকায় আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে আগের ম্যাচে চেনাই
যায়নি রিয়াল মাদ্রিদকে। করিম বেনজেমা, ভিনিসিউস জুনিয়র, লুকা মদ্রিচরা
ফিরলেন শুরুর একাদশে, তাদের হাত ধরে স্বরূপেই ফিরল ইউরোপের সফলতম দলটি।
একপেশে ম্যাচে উড়িয়ে দিল তলানির দল লেভান্তেকে।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে
বৃহস্পতিবার রাতে ৬-০ গোল জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল। হ্যাটট্রিক করেছেন
ভিনিসিউস জুনিয়র। একটি করে গোল করেছেন বেনজেমা, রদ্রিগো ও ফেরলঁদ মঁদি।
তাদের চেয়ে অবদান কম নয় অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক করা লুকা মদ্রিচের।
আগেই
শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় লা লিগার শেষ ম্যাচগুলো রিয়ালের জন্য এক রকম
প্রস্তুতির মঞ্চ। পরিকল্পনা অনুযায়ীই সবাইকে সেখানে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে
খেলাচ্ছেন আনচেলত্তি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মহাগুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের আগে
দলের সবাইকে যথেষ্ট বিশ্রাম দিতে চান তিনি, একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে চান
সবার ছন্দে থাকা।
নিয়মিতদের অনেকেই না থাকলেও আগের ম্যাচে আতলেতিকোর
বিপক্ষে হার বড় একটা ধাক্কা হয়েই এসেছিল। তবে লেভান্তেকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে
বেনজেমা-ভিনিসিউসরা জানান দিলেন, ঠিক পথেই আছেন তারা।
শীর্ষ দলের সঙ্গে তলানির দলের লড়াই। পয়েন্ট টেবিলে যে বিস্তর ব্যবধান সেটাই যেন অনূদিত হলো মাঠে। পাত্তাই পেল না লেভান্তে।
দ্বিতীয়
মিনিটেই প্রথম সুযোগ পায় রিয়াল। তবে বেনজেমার শট কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন
লেভান্তে গোলরক্ষক। তবে বেশিক্ষণ ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি তিনি। ত্রয়োদশ
মিনিটে রিয়ালকে এগিয়ে নেন মঁদি।
বলের জন্য অনেক নিচে, অনেকটা লেফট
ব্যাকের জায়গায় চলে গিয়েছিলেন মদ্রিচ। বল কেড়ে নিয়ে তিনি বাড়ান উঁচু করে।
বল পায়ে এগিয়ে গিয়ে অন্য সময় হয়তো ক্রস করতেন মঁদি, এবার দুরূহ কোণ থেকেও
নেন শট। কাছের পোস্ট ঘেঁষে বল জড়ায় জালে।
দুই মিনিট পরেই বাড়তে পারত
ব্যবধান। কিন্তু বেনজেমার শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। পরের মিনিটে
মদ্রিচের ক্রসে ফেদে ভালভেরদের শট ফিরে আসে পোস্ট লেগে।
গোলের জন্য
বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বেনজেমাকে। ১৯তম মিনিটে ভিনিসিউসের ক্রসে
চমৎকার হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। আসরে যা তার ২৭তম
গোল।
এই গোলে রিয়াল কিংবদন্তি রাউল গনসালেসের পাশে বসলেন বেনজেমা।
রিয়ালের হয়ে দুই জনেরই গোল সংখ্যা ৩২৩। তাদের বেশি গোল আছে কেবল
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর (৪৫০)।
৩০তম মিনিটে জালে বল পাঠান রদ্রিগো। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি।
চার
মিনিট পর ঠিকই গোল পেয়ে যান রদ্রিগো। ডি বক্সে ঢুকে মদ্রিচকে বল বাড়িয়ে
ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ছুটে যান গোল মুখে। একটু সময় নিয়ে তাকে খুঁজে নেন
মদ্রিচ। বাকিটা অনায়াসে সারেন রদ্রিগো।
৩৮তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে
থেকে ভালভেরদের শট গোলরক্ষক ঠিক মতো ফেরাতে পারেননি, তবে তার হাতে লেগে
ক্রসবার ছুঁয়ে বল ফেরে মাঠে। আরেক দফা হতাশ হতে হয় উরুগুয়ের মিডফিল্ডারকে।
৪৫তম
মিনিটে স্কোর লাইন ৪-০ করে ফেলেন ভিনিসিউস। ক্রোয়াট মিডফিল্ডার মদ্রিচকে
বল বাড়িয়ে এগিয়ে যান তিনি। এবারও নিখুঁত পাসে তাকে খুঁজে নেন মদ্রিচ। সঙ্গে
লেগে থাকা খেলোয়াড়দের এড়িয়ে আড়াআড়ি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান
ভিনিসিউস।
গোলে অবদানের হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসেন মদ্রিচ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলও পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। তবে বুলেট গতির শটেও
পরাস্ত করতে পারেননি লেভান্তে গোলরক্ষককে।
৫৮তম মিনিটে জালে বল পাঠান
ভিনিসিউস। তবে তিনিই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। ১০ মিনিট পর আর হতাশ হতে
হয়নি। গোলে অবদান বেশি বেনজেমার। পায়ের কারিকুরিতে গোলরক্ষককে এড়িয়ে ফাঁকা
জালে বল পাঠানোর সুযোগ করে দেন তিনিই।
৮৩তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন
ভিনিসিউস। লুকা ইয়োভিচের কাছ থেকে বল পেয়ে লেভান্তের দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে
কাছের পোস্ট দিয়ে জালে পাঠান তিনি। এই অর্ধে রিয়াল বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া
না করলে ব্যবধান হতে পারতো আরও বড়। এই জয়ে ৩৬ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট হলো
৮৭।