তানভীর
দিপু: সারা দেশে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা-২০২২। কুমিল্লা শিক্ষা
বোর্ডের অধীনে ৬ জেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৪ জন। এর
মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ১৪৫ জন এবং ছেলে
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১ হাজার ৫২৯ জন। নোয়াখালী, ফেণী, লক্ষ্মীপুর,
চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭৪ টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
হবে। এই ৬ জেলার ১ হাজার ৭৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ
নিচ্ছেন। এবছর এসএসসি’র জন্য ২ লাখ ২০ হাজার ২৮৮ জন রেজিষ্ট্রেশন করলেও
পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী। ২০২১
সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ২ লাখ ১৯ হাজার ৭০৪ জন।
কুমিল্লা
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা বোর্ডে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী
কুমিল্লা জেলায়- ৬৫ হাজার ১৫৪ জন। এছাড়া নোয়াখালী জেলায় পরীক্ষার্থীর
সংখ্যা ৩২ হাজার ৮১৭ জন, ফেণী জেলায় ১৮ হাজার ৫৩৯ জন, লক্ষ্মীপুর জেলায় ১৬
হাজার ৭৫৮ জন, চাঁদপুর জেলায় ২৮ হাজার ১৮৫ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ২৮
হাজার ২১১ জন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ আবদুস
ছালাম জানান, কুমিল্লা বোর্ডের এসএসসির সকল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন
করার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সবাই যথা সময়ে
পরীক্ষায় আসবেন বলেই আশা করছি।
এদিকে ২০২২ সালের কুমিল্লা শিক্ষা
বোর্ডের অধীনে ৬ জেলায় এসএসসির জন্য রেজিষ্ট্রেশনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা
ছিলো ২ লাখ ২০ হাজার ২৮৮ জন, এর মধ্যে পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছেন ১ লাখ
৮৩ হাজার ৩৪৩ জন। রেজিষ্ট্রেশন করলেও পরীক্ষায় বসছে না প্রায় ৩৭ হাজার
শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজারেরও বেশি। পরীক্ষায়
না বসা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ঝরে গেছেন শিক্ষা জীবন থেকে। বোর্ডের পরীক্ষা
নিয়ন্ত্রক ও স্কুল প্রধানরা বলছেন, মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার মূল কারণ
বাল্য বিবাহ, আর ছেলেরা ঝুঁকছে উপার্জনে। আর প্রত্যন্ত এলাকায় এই ঝরে পড়ার
হার বেশি। ১৫ সেপ্টেম্ব থেকে শুরু হচ্ছে এবছরের এসএসসি পরীক্ষা।
কুমিল্লা
শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, পরীক্ষার
জন্য ফম পূরণ না করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবাই শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে
এমন নয়, এর মদ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীও
রয়েছে। তবে বেশির ভাগই পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছেন এমন।
তিনি আরো বলেন, করোনা
মহামারির পর যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনেক
শিক্ষার্থীকেই দেখা যাচ্ছে অষ্টম শ্রেণী পাশের সনদ দিয়ে কোন না কোন চাকরি
খু^ঁজছেন। যে কারণে অনেকে রেজিষ্ট্রেশন করলেও পরীক্ষায় বসছে না। আর মেয়ে
শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার মূল কারণ বাল্য বিবাহ।
১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ
মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে. কুমিল্লা ফেণী, নোয়াখালী, চাঁদপুর,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং লক্ষীপুর জেলায় এসএসসির জন্য মোট রেজিষ্ট্রেশনকারীর
সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার ২৮৮ জন। কিন্তু পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছেন ১ লাখ
৮৩ হাজার ৩৪৩ জন। রেজিষ্ট্রেশন করলেও পরীক্ষায় বসছে না ৩৬ হাজার ৯৪৫ জন
পরীক্ষার্থী। রেজিষ্ট্রেশন করা ৮৯ হাজার ৫৮১ জন ছাত্রের মধ্যে ফরম পূরণ
করেছেন ৭৮ হাজার ৩৯৬ জন; ঝরে পড়েছে ১১ হাজার ১৮৫ জন। অপরদিকে রেজিষ্ট্রেশন
করা ১ লাখ ৩০ হাজার ৭০৭ জন ছাত্রীর মধ্যে ফরম পূরণ করেছেন ১ লাখ ৪ হাজার
৯৪৭ জন; এর মধ্যে ঝরে পড়েছে ২৫ হাজার ৭৬০ জন। পরিসংখ্যান বলছে, ছেলে
শিক্ষার্থীদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সংখ্যা বেশি। ঝরে পড়া মেয়ে
শিক্ষার্থীর হার ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ছেলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ১২
দশমিক ৪ শতাংশ।
এদিকে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে এসএসসি
পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে ৩০ হাজার, যদিও বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে- অনিয়মিত
পরীক্ষার্থী না থাকায় কমে এসেছে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা।
কুমিল্লা
শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের
পরীক্ষা পদ্ধতিতে পাশের হার প্রায় শতভাগ থাকায় অকৃতকার্যের সংখ্যা নেই, যে
কারনে এবছর অনিয়মিত হিসেবে পরীক্ষার্থী নেই।