ঘটনার সূত্রপাত ১৪ মার্চ। দিনে দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পান্নারপুল এলাকায় ডিবি পরিচয়ে এক মোবাইল দোকানদারকে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে নগদ ২লক্ষ টাকা পরে এটিএম থেকে আরও ১লক্ষ টাকা তুলে দাউদকান্দির হরিপুরে মহাসড়কের উপর ওই ব্যবসায়ীকে ফেলে দিয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায় একদল দৃর্বৃত্ত। পরদিন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ডিবি পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা এটাই প্রথম না। তারা এভাবে নিয়মিত ছিনতাই করতেন। এরপর ২৬ মার্চ রাতে চক্রের সন্ধানে অভিযানে নামেন অফিসার ইনচার্জ মো.আরিফুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক মো.মেজবাহ উদ্দিন, উপপরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেনসহ একদল পুলিশ। অভিযানে ভোরে মুরাদনগরের কাজিয়াতল থেকে কাজী ফরিদ (৫০) নামে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। কাজী ফরিদ মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক ওরফে আছমত আলীর ছেলে। পরে তার দেয়া তথ্যে ২৭মার্চ রাতে ঢাকার দক্ষিনখান কাওলা বাজার চৌরাস্তা থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিসহ গ্রেফতার করেন ভূয়া ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের মূল হোতা অপর সদস্য কাজী রুক্কু মিয়া ওরফে আবদুর রবকে। রুক্কু মিয়া (৪৭) দেবিদ্বার উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামের মৃত কাজী আব্দুল অহিদ মিয়ার ছেলে। পৃথক দুটি অভিযানে তাদের থেকে ৩টি ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, টাকা রাখার ব্যাগ,২টি ডিবি আইডি কার্ড, ২টি বাঁশি, ব্যবহৃত সাদা মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগী মোবাইল দোকানদার মামুন জানান, কোম্পানীগঞ্জ ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে নগদ দুই লক্ষ টাকা উত্তোলন করে দেবিদ্বার আসার পথে পান্নারপুল এলাকায় পৌছলে পিছন থেকে আসার একটি সাদা মাইক্রোবাস সিএনজির সামনে গতিরোধ করে থামিয়ে আমাকে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে পরে আমাকে কিলঘুষি মেরে আমার ব্যাগ থেকে দুই লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে আমার মানি ব্যাগে থাকা এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনে কয়েকটি এটিএম বুথ থেকে আরও এক লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আমাকে দাউদকান্দির হরিপুরে মহাসড়কের ওপর ফেলে দিয়ে মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রটি।
ওসি মো.আরিফুর রহমান জানান, ওরা গ্রুপ করে প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় ডিবির পরিচয় দিয়ে টার্গেটে কৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করার নাম করে টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিস ছিনতাই করে নিত। ওই চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাদের কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামী কাজী ফরিদের বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর থানায় ২টি, রাজৈর থানায় ১টি এবং ডিএমপি কদমতলী থানায় একটি মামলাসহ মোট ৪টি মামলা রয়েছে। তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।