করোনাভাইরাস রূপ বদলে বিশ্বজুড়ে একের পর এক তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনেও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশটিতে মহামারিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুও।
মোট ১৮ লাখ জনসংখ্যার ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রে শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৫১ হাজার ৭৮ জন। মারা গেছেন এক হাজার ১১৯ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা ৭৮ জন। শুধু মে মাসেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৩২ জন বাংলাদেশি।
উল্লেখ্য, দেশটিতে প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন।
বাহরাইনের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে রোববার (৬ জুন) পর্যন্ত বাহরাইনে ২২৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৮ জন, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২১ জন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা যান ৮ জন, আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। স্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এবং ব্রেনস্ট্রোকজনিত কারণে।
প্রবাসীদের হৃদরোগে আক্রান্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সাংবাদিক ফোরাম বাহরাইনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মজুমদার বলেন, প্রবাসে যারা অবস্থান করেন তারা সাধারণত দেশে আর্থিক ঋণ ও পারিবারিক চাপের মধ্যে থাকেন। তাই প্রবাসে সবাইকে কাজের পরে যাতে হাসিখুশিতে থাকতে পারেন এবং প্রবাসীদের সবসময় মানসিক চাপ না দিয়ে উৎসাহিত করার জন্য তিনি দেশে থাকা পরিবারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম সচিব (লেবার কাউন্সিলর) শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে বাহরাইন সরকারের নিয়মানুযায়ী দেশে থাকা স্বজনদের অনুমতি নিয়ে যতদ্রুত সম্ভব লাশ এখানেই দাফন করা হয়।
এছাড়া দুর্ঘটনা বা স্বাভাবিক মৃতদের লাশ যতদ্রুত সম্ভব দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অবশ্য যারা বৈধভাবে এখানে কাজ করছেন তাদের লাশ নিজ নিজ মালিকের সহযোগিতায় এবং যারা অবৈধ ও যাদের মালিক খরচ দিতে অক্ষম তাদের লাশ দূতাবাসের মাধ্যমে কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের আর্থিক সহায়তায় পাঠানো হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, বাহরাইনে বর্তমানে ৪৫ হাজারেরও বেশি ফ্লেক্সি ভিসার বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। তাদের জন্য দূতাবাস ইন্সুরেন্সের পরিকল্পনা করছে বলে তিনি জানান।