ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
একটি ভ্রমণের সাতকাহন
Published : Tuesday, 19 October, 2021 at 12:00 AM
একটি ভ্রমণের সাতকাহনশান্তিরঞ্জন ভৌমিক ||

তৃতীয় অধ্যায়
গয়া নামে মহা বলশালী এক অসুরের দেহের উপর মহাতীর্থ গয়া স্থাপিত হয়েছে। এজন্য এই পুণ্যভূমির নাম গয়াধাম।
    রায়ুপুরাণে উল্লেখ আছে-একদা দেবর্ষি নারদ শৌনকাদি মুনিগণের সঙ্গে কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে উপস্থিত হলেন ঋষি সনৎকুমার সমীপে। প্রশ্নগুলো হলো-
ক. গয়াসুর কীভাবে জন্মগ্রহণ করল?
খ. তার প্রভাব ও স্বরূপ কীরূপ?
গ. কেনই বা তার দেহ পবিত্র হলো?

সনৎকুমার বলতে শুরু করলেন-
    জগতের আদিম যুগে শ্বেতকল্পে গয়াসুরের জন্ম। গয়ার পিতা ত্রিপুরাসুর, মাতা শুকদৈত্যের কন্যা প্রভাবতী। গয়াসুরের উচ্চতা একশত পঁচিশ যোজন, স্থূলতা ষাট যোজন। সে একসময় কোলাহল পর্বতে কুম্ভক সমাধিযোগে কঠোর তপস্যা শুরু করে। কেটে গেল সহস্র বৎসর। এদিকে গয়াসুরের তপস্যায় দেবতারা শঙ্কিত। কিন্তু তপস্যায় প্রীত হলেন ভগবান বিষ্ণু। দেবতাদের শঙ্কার কারণ, গয়াসুর দুর্লভ বর যদি কিছু চেয়ে বসে। দেবতাদের হাতেই নিহত হয়েছে তারই পিতা ত্রিপুরাসুর। ফলে নতুন কোনও বরে বলীয়ান হয়ে গয়াসুরের প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠতে আর কতক্ষণ। এরপর একরাশ আশঙ্কা নিয়ে দেবতারা গেলেন ব্রহ্মলোকে। পিতামহ ব্রহ্মাকে সকল বৃত্তান্ত নিবেদন করলেন-‘হে দেব! গয়াসুর থেকে আমাদের রক্ষা করুন।’ ব্রহ্মা দেবতাদের বললেন-‘হে দেবগণ, চলুন আমরা ভগবান শংকর সমীপে গমন করি।’ ব্রহ্মা দেবগণসহ কৈলাসে এসে উপস্থিত হলেন।
    সকলে কৈলাসপতিকে প্রণাম করে বললেন, ‘হে দেব! এই মহাসুর থেকে আমাদের যেভাবেই হোক রক্ষা করুন।’ তখন শম্ভু অর্থাৎ শংকর ব্রহ্মাদি দেবগণকে বললেন-‘ক্ষীর পয়োনিধিতে শ্রীহরি শয়ান আছেন। চলুন আমরা তাঁর নিকটে উপস্থিত হয়ে আমাদের যাবতীয় সমস্যার কথা ব্যক্ত করি। তিনিই আমাদের মঙ্গলবিধান করবেন।’ তারপর মহাদেব ব্রহ্মা ও অন্যান্য দেবতারা বিষ্ণুর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁর স্তব করতে লাগলেন। বিষ্ণু মধুর হেসে জিজ্ঞাসা করলেন-‘আপনাদের এখানে আগমনের হেতু কী’? উত্তরে দেবতারা বললেন-‘হে দেব, গয়াসুরের ভয় থেকে আমাদের রক্ষা করুন।’
    সমস্ত বিষয় অবগত হয়ে মহাদেব, ব্রহ্মা ও অন্যান্য দেবতাদের নিয়ে বিষ্ণু গরুড়ারোহণে উপস্থিত হলেন গয়াসুরের কাছে। তখন বাসুদেব প্রমুখ গয়াসুরকে বললেন-‘হে গয়াসুর! তুমি কী জন্য তপস্যা করছ?’ গয়াসুর দেবতাদের আশ্বস্ত করে করজোড়ে বলল, ‘হে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর প্রমুখ সুরগণ। যদি আমার প্রতি আপনারা প্রসন্ন হয়ে থাকেন, তবে আমাকে এই বর প্রদান করেন, আমি যেন সকলদেব, দ্বিজাদি, নিখিল যজ্ঞশিলা, ঋষি, অব্যয় শিব, মন্ত্র, দেবদেবী, সকল প্রকার যোগী, কর্মত্যাগী, কর্মী, ধার্মিক এবং অতি পুতগতি অপেক্ষাও সর্বদা অতি পবিত্র হই।’ দেবগণ তখন ‘পবিত্র হও’ বলে গয়াসুরকে এই বর প্রদান করলেন। গয়াসুর এই বরও চাইল-তাকে স্পর্শ ও দর্শন করে প্রাণিকুল যেন বৈকুণ্ঠে যেতে পারে। বিষ্ণু এ প্রার্থনাও মঞ্জুর করলেন।
    এরপর বিষ্ণু ব্রহ্মাকে একটি যজ্ঞের আয়োজন করতে বললেন এবং পরামর্শ দানও করলেন-‘হে ব্রাহ্মণ! আপনি গয়াসুরের কাছে যান। যজ্ঞের জন্য তার দেহ প্রার্থনা করুন। কারণ, গয়াসুর বেঁচে থাকলে যমপুরী চিরকাল শূন্যই থাকবে।’ তারপর ব্রহ্মা ও অন্য দেবতাগণ গয়াসুরের কাছে গেলেন। দেবতাদের দেখে গয়াসুর বিধিবৎ প্রণাম ও শ্রদ্ধাসহকারে পূজার পর বিনম্র ভঙ্গিতে বলল, ‘আজ আমার জন্ম ও তপস্যা সফল হলো। প্রজাপতি ব্রহ্মা স্বয়ং আমার অতিথিরূপে এখানে এসেছেন। প্রভু, আপনি যে কারণে আমার কাছে এসেছেন তা আমি অবশ্যই সম্পাদন করব।’
    ব্রহ্মা এবার সেই অমোঘ কথাটি উচ্চারণ করলেন। গয়াসুরকে বললেন, ‘আমি পৃথিবী পরিভ্রমণকালে যে সকল তীর্থ দর্শন করেছি, তার মধ্যে যজ্ঞের উপযুক্ত পবিত্র কোনও তীর্থই দেখিনি। হে মহাসুর! ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদে তোমারই দেহ সর্বতোভাবে পবিত্র হয়েছে। অতএব যজ্ঞের নিমিত্ত তোমার পবিত্র দেহ আমাকে অর্পণ করো।’ গয়াসুর সানন্দে স্বীয় দেহ দান করল সমগ্র জগতের কল্যাণের জন্য। বলল, ‘হে প্রভু, আপনি যজ্ঞের নিমিত্ত আমার দেহ প্রার্থনা করছেন। আমি ধন্য হলাম। আপনি আমার দেহ যাগ করবেন, এজন্য আমার পিতৃকুলও ধন্য হলো। সকলের উপকারের জন্য আমার দেহে অবশ্যই যজ্ঞ হবে।’ এবার যোগবলে দেহ বিস্তার করল গয়াসুর। কোলাহল পর্বতের নৈঋত ভাগে মাথা ও উত্তর দিকে পদদ্বয়। পাষাণে পরিণত হলো তার দেহ। লোক-পিতামহ ব্রহ্মা যজ্ঞসম্ভার আহরণ করলেন ও গয়াসুরের মস্তকের উপর একখণ্ড শিলা স্থাপন করে যজ্ঞ সম্পন্ন হলো। কিন্তু কী আশ্চর্যের ব্যাপার। প্রজাপতি ব্রহ্মা স্থাপিত শিলা বারংবার নড়তে লাগল। এই ঘটনায় স্বয়ং ব্রহ্মা চিন্তান্বিত হলেন। তারপর ব্রহ্মা ব্যাকুল হয়ে বিষ্ণুর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে সমস্ত ঘটনা নিবেদন করলেন। এ কথা শুনে শ্রীহরি নিজ দেহ থেকে এক মূর্তি আকর্ষণ করে গয়াসুরকে নিশ্চল করার জন্য ব্রহ্মাকে তা অর্পণ করলেন। ব্রহ্মা এই মূর্তি এনে শিলার উপর স্থাপন করলেন। কিন্তু গয়াসুর নিশ্চল হলো না দেখে আবার বিষ্ণুর শরণাপন্ন হলেন। গয়াসুরের দেহ কম্পিত হতে থাকায় বিষ্ণু এবার তাঁর আদি গদার আঘাতে অসুরের দেহ নিশ্চল করলেন। এজন্য তার আর এক নাম হলো আদিগদাধর। তাতে গয়াসুরের দুটি ইচ্ছা পূরণ করলেন বিষ্ণু।
    এক,    অসুরের বুকের উপর শ্রীচরণ রাখলেন।
দুই,    গয়াসুরের বক্ষস্থিত শ্রীচরণপদ্মে আত্মার
        উদ্দেশ্যে তর্পণ ও পিণ্ডদানে আত্মার
অক্ষয় স্বর্গলাভ হবে।
ব্যাসদের বলেছেন, ‘ফল্গুতীর্থে স্নান করে আদিগদাধর দেবতাকে দর্শন-পূজন করলে সুকৃতিকামনাকারী মানুষের কোনো কামনা না পূর্ণ হয়? পৃথিবীতে যেসব মহাতীর্থ আছে তাদের মধ্যে গয়াতীর্থই সর্বপ্রধান। এখানে জনার্দন পরম পিতারূপে বিরাজ করেন।... গয়াক্ষেত্র পঞ্চক্রোশব্যাপী। এর মধ্যে এক ক্রোশব্যাপী গয়াশির। এই শিরে পিণ্ডদান করলে পিতৃলোকের চিরগতি লাভ হয়।’
    তাই যাঁরা গয়াধামে আসেন, তাঁরা এই বিশ্বাস নিয়েই আসেন- ফল্গুতীর্থে স্নান করে গদাধর ভগবান (বিষ্ণুর পাদপদ্ম) দর্শন করলে মানুষ পূর্বের দশপুরুষ ও পরের দশপুরুষ এবং স্বয়ং এই একুশ পুরুষকে ত্রাণ করতে সক্ষম হয়।
    শ্রী বিষ্ণুপাদপদ্মে ঊনিশটি পিণ্ডদানের নাম ষোড়শী পিণ্ডদান। কুশ দিয়ে ২০টি ঘর এঁকে তাতে কুশ রেখে সতিল জল ছিটিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে গন্ধপুষ্প নিবেদন। কুশের মূল থেকে অগ্রভাগ পর্যন্ত ক্রমানুসারে পিণ্ডদান। পিতৃষোড়শী ও মাতৃষোড়শীর ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১৯টি ও ১৬টি পিণ্ডদান।
পিতৃষোড়শী-তে কোন কোন আত্মার সদগতিলাভের জন্য পিণ্ডদান করা হয়?
১.    মাতামহকুলে মৃত যাদের কোনওরূপ গতি হয়নি।
২.    বন্ধুবর্গকুলে মৃত।
৩.    যাদের দাঁত ওঠার আগেই মৃত্যু হয়েছে কিংবা যারা মাতৃগর্ভেই মারা গিয়েছে।
৪.    যারা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। যাদের মৃত্যুর পর অগ্নিসংস্কার হয়নি। যারা চোর-ডাকাতের হাতে কিংবা বজ্রাঘাতে মারা গিয়েছে।
৫.    যারা বন-জঙ্গলে আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছে কিংবা বাঘ-সিংহের আক্রমণে প্রাণত্যাগ করেছে।
৬.    যারা গলায় দড়ি দিয়ে, বিষ খেয়ে অথবা অন্য কোনও ভাবে আত্মহত্যা করেছে। অস্ত্রঘাতে মারা গিয়েছে।
৭.    যারা অরণ্যে, পথিমধ্যে, যুদ্ধস্থলে, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মারা গিয়েছে।
৮.    কালের নিয়মে যাদের নরকে ঠাঁই হয়েছে।
৯.    যারা প্রেতলোকে গিয়ে প্রচুর কষ্টভোগ করছে।
১০.    যারা যমের শাসনাধীন হয়ে কষ্ট পাচ্ছে।
১১.    নরকে থেকে যারা যাতনা সহ্য করছে।
১২.    যারা পশুযোনি, পক্ষীকীট, সরীসৃপাদি প্রাপ্ত হয়েছে। বৃক্ষ থেকে জন্মলাভ করেছে।
১৩.    যারা নিজ কর্ম ফলে শত-সহস্র জাতিতে পরিভ্রমণ করছে, অথচ দুর্লভ মনুষ্য জাতিতে জন্মগ্রহণ করতে পারেনি।
১৪.    স্বর্গে, অন্তরীক্ষে, পৃথিবীতে আমার পিতা-পিতৃব্যগণ অথবা বন্ধু-বান্ধবদের যাঁরা অবস্থান করছেন, মৃত্যুর পর যাঁদের অগ্নিসংস্কার হয়নি।
১৫.    আমার পিতা-পূর্বপুরুষদের মধ্যে যাঁরা প্রেতরূপে অশেষ যন্ত্রণাভোগ করছেন তাঁরা অক্ষয় তৃপ্তিলাভ করুন।
১৬.    আমার যারা মৃত বন্ধু-বান্ধব, যারা আমার অন্যান্য জন্মে বন্ধু-বান্ধব ছিলেন।
১৭.    আমার পিতৃবংশ, মাতৃবংশ, গুরুবংশ শ্বশুরবংশে যাঁরা মারা গিয়েছেন। আমার কুলে যাঁদের পিণ্ডলোপ হয়েছে। যাদের স্ত্রী, পুত্র-কন্যা কেউ নেই, যারা পঙ্গু, যাদের আমি চিনি না জানি না।
১৮.    ব্রহ্ম থেকে শুরু করে আমার পিতৃবংশে যারা আমার দাস, আশ্রিত ও সেবক। যাঁরা অদৃশ্য থেকে আমার উপকার করেছেন।
১৯.    জন্ম জন্মান্তরে যাদের সঙ্গলাভ করেছি।

মাতৃষোড়শী-তে কোন জননীদের আত্মার সদ্গতি লাভের জন্য পিণ্ডদান করা হয়?
১.    আমি গর্ভে জন্মগ্রহণ করার পর যিনি অসম পথে চলাফেরা করতে কষ্ট পেয়েছেন।
২.    পুত্রলাভ না হওয়া পর্যন্ত যে জননীর মন:কষ্টের শেষ ছিল না।
৩.    যিনি আমাকে গর্ভে ধারণ করে মাসে মাসে অশেষ কষ্ট ভোগ করেছেন। প্রসবকালের দারুণ যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।
৪.    গর্ভ দশ মাস পূর্ণ হলে যাঁর অত্যন্ত কষ্ট হয় তাঁর নিস্তার লাভে।
৫.    মাঘ মাসে ও গ্রীষ্মকালে শীত ও রোদের জন্য যিনি প্রচুর কষ্টভোগ করেছেন।
৬.    পুত্র-কন্যা পীড়িত হলে দিনরাত যিনি সেবা-শুশ্রƒষায় ব্যস্ত থেকেছেন।
৭.    যিনি পরম মমতায় স্তন্যপান করিয়েছেন।
৮.    গর্ভবাসকালে যিনি আমার মঙ্গলের জন্য কত কটুকথা সহ্য করেছেন।
৯.    পুত্র, ক্ষুধার কাতর হলে যিনি অন্নপ্রদান করেছেন।
১০.    গর্ভবাসকালে আমার পদসঞ্চালনের জন্য আমার গর্ভধারিণীর যে অশেষ কষ্ট হয়েছিল।
১১.    পুত্র যতদিন অল্পবয়স্ক থাকে ততদিন তার মঙ্গলের জন্য যিনি বিবিধ দুর্লভ খাদ্যদ্রব্য ত্যাগ করেছেন।
১২.    রাতে মল-মূত্র ত্যাগ করে আমি যাঁর বস্ত্র সিক্ত করেছি।
১৩.    গাত্র ভঙ্গে যাঁর মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।
১৪.    আমাকে প্রসব করার পর যাঁকে অগ্নিসেক নিয়ে, তিন রাত উপবাসী থেকে শুদ্ধ হতে হয়েছিল।
১৫.    প্রসব করার সময় প্রসবের বিলম্ব হওয়ার জন্য যাঁর কষ্ট হয়েছিল।
১৬.    মহাঘোর যমদ্বারে যাওয়ার সময় জননীর যাতে কষ্ট না হয়।
উল্লেখ্য যে, দ্বাদশ পুরুষের পিণ্ডদানের পর পিতৃষোড়শী ও মাতৃষোড়শী করতে হয়। ফল্গুতীর্থ, শ্রীবিষ্ণুপাদপদ্ম ও অক্ষয় বট-এই তিন জায়গায় দ্বাদশ পুরুষের পিণ্ডদানের জন্য মোট ৩৬টি (১২ল্প৩) পিণ্ডের প্রয়োজন। এছাড়া পিতৃষোড়াশীর জন্য ৫৭টি (১৯ল্প৩) ও মাতৃষোড়শীর জন্য ৪৮টি (১৬ল্প৩) পিণ্ডের দরকার হয়।
    যাঁরা সন্ন্যাস নেন তাঁদেরও আত্মপিণ্ডদান করার নিয়ম। নিজের পিণ্ডদান নিজেকেই সম্পন্ন করে এই সংসারবন্ধন থেকে মুক্ত হতে হয়। সন্ন্যাসীর মৃত্যুর পর তাঁর আত্মার উদ্দেশে আর পিণ্ডদানের প্রয়োজন হয় না।

(ক্রমশঃ)
লেখক: সাহিত্যিক, গবেষক ও সাবেক অধ্যাপক
 মোবাইল: ০১৭১১-৩৪১৭৩৫