বিশ্বব্যাপী ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি উদযাপিত হয়ে ক্রিসমাস বা বড়দিন হিসেবে। খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান এটি। এদিন নানান আয়োজনের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান করেন তারা। তবে সেই উপহারের বক্স তারা খোলেন পরদিন অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর।
তাই বক্স খোলার দিন হিসেবে ২৬ ডিসেম্বর তারিখকে বলা হয় বক্সিং ডে আর এই তারিখে বিশ্বে যত ম্যাচ হয় সেগুলোকে বলা হয় বক্সিং ডে ম্যাচ। মেলবোর্নে তেমনই এক বক্সিং ডে টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। যেখানে নিজেদের বক্স থেকে বড়দিনের বড় উপহারই পেয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
এরই মধ্যে ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেইড টেস্ট জিতে অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া, মেলবোর্নেও প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে। সফরকারী ইংল্যান্ডকে মাত্র ১৮৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছে তারা। পরে ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে ৬১ রান করেছে স্বাগতিকরা।
করোনাভাইরাসজনিত কারণে আগের ম্যাচটি খেলতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিনস। এই ম্যাচ দিয়ে দলে ফিরে টসও জেতেন তিনি। আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান সফরকারী ইংল্যান্ডকে। আর ফিল্ডিং করতে নেমে ইংলিশ ইনিংসে তাণ্ডবের শুরুটা করেন কামিনস নিজেই।
দুই ওপেনার হাসিব হামিদ ও জ্যাক ক্রলির পর তিন নম্বরে ডেভিড মালানও সাজঘরে ফেরেন কামিনসের বিষাক্ত ছোবলে। হাসিব হামিদ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন ডাক মেরে। প্যাট কামিন্সের দারুণ এক ডেলিভারিতে ব্লক করতে চেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত হামিদ।
শুরুতেই উইকেট হারিয়ে খোলসে ঢুকে পড়ে ইংল্যান্ড। ৭ ওভারে তোলে মাত্র ১৩ রান। তবে কাজের কাজ হয়নি। অষ্টম ওভারে কামিন্সের ফের আঘাত। এবার জ্যাক ক্রলিকে (১২) গালিতে ক্যাচ বানান অসি গতিতারকা।
বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে ডেভিড মালানকে (১৪) নিয়ে ৪৮ রানের একটি জুটি গড়েছিলেন অধিনায়ক জো রুট। মালান কামিন্সের তৃতীয় শিকার হলে ভাঙে এই জুটি। সেটিই ছিল ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি।
দলীয় ৮২ রানের মাথায় ফিরে যান রুটও। কাটায় কাটায় ৫০ করে ইংলিশ অধিনায়ক মিচেল স্টার্কের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিলে একশর আগে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। বেন স্টোকসও ২৫ রানের বেশি এগোতে পারেননি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন। ৭৫ বলে ৩৫ করা এই ব্যাটারকে ফেরান স্টার্ক। শেষদিকে ওলি রবিনসনের ২২ রানে ১৮৫ পর্যন্ত গেছে ইংলিশরা। লেজটা মুড়ে দেন নাথান লিয়ন।
অসি বোলারদের মধ্যে প্যাট কামিন্স আর নাথান লিয়ন পান ৩টি করে উইকেট। মিচেল স্টার্কের শিকার ২টি।
পরে দিনের শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে সাবলীল শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্কাস হ্যারিস। মাত্র ১৪ ওভারেই ৫৭ রান করে ফেলেন এ দুজন। তবে ১৫তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দেন জিমি অ্যান্ডারসন। আউট হওয়ার আগে মাত্র ৪২ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার।
দিনের আর মাত্র ১১ বল বাকি থাকায় বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের পরিবর্তে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নাথান লিয়নকে নামায় অস্ট্রেলিয়া। তিনি মুখোমুখি ৫ বল কাটিয়ে দেন নির্বিঘ্নে। অপরপ্রান্তে ৫১ বলে ২০ রান করে অপরাজিত রয়েছেন আরেক ওপেনার হ্যারিস।