রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার
চান্দিনায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের উঠান বৈঠকে ‘১০টি মার্ডারের’ হুমকিদাতা
চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আশানুরূপ ব্যবস্থা
নেয়নি প্রশাসন। উল্টো তিনি ওই ‘ভিডিও’ ক্লিপের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ
ডায়েরী করেন!
‘১০টা মার্ডারের’ হুমকির ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরালের পরদিন
ওই হুমকি দাতার পিতা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান
প্রার্থী ইঞ্জি. আব্দুল আউয়াল খান’কে শোকজ করেছেন রিটার্নিং অফিসার মাসুদ
আলম সিকদার।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) শুক্রবার বিকেলে ওই
প্রার্থীকে শোকজসহ প্রার্থীর ছেলে মিজানুর রহমানকে ডেকে এনে মুজলেকা নেন
তিনি। শনিবার (১ জানুয়ারী) দুপুরে ওই শোকজ এর জবাব দেন চেয়ারম্যান প্রার্থী
ইঞ্জি. আব্দুল আউয়াল খান।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর প্রার্থীর ছেলে
হুমকিদাতা মিজানুর রহমান ওই ভিডিও ক্লিপটির বিরুদ্ধে উল্টো থানায় সাধারণ
ডায়েরী করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার বক্তব্য এডিটিং করে সোস্যাল
মিডিয়াতে অপপ্রচার করে ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যত
নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ডায়েরী করা প্রয়োজন’।
এদিকে, ‘যদি ১০টা মার্ডার
করা লাগে, তা-ই করবেন, বাকিটা আমি দেখবো’ প্রতিপক্ষের প্রতি হুমকি দিয়ে
নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলে মিজানুর রহমান এর ভিডিও ক্লিপটি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় শুধুমাত্র মুচলেকা ও
শোকজে সীমাবদ্ধ থেকে উল্টো থানায় জিডি করার বিষয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
ওই
ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক
বাসিন্দা জানান, ‘এটা কোন কথা হলো! একটা উঠান বৈঠকে প্রকাশ্যে মার্ডারের
হুমকি দিল, আর প্রশাসন শুধু মুচলেকা নিল!’
রিটার্নিং অফিসার মাসুদ আলম
সিকদার জানান, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী আমরা প্রার্থীকে ডেকে শোকজ করেছি।
শনিবার তিনি শোকজের লিখিত জবাব দিয়েছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘বিষয়টি
অত্যন্ত দুঃখ জনক। ভবিষ্যতে এমনটি ঘটবে না’ মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
এছাড়া প্রার্থীর ছেলে হুমকি দাতাও মুচলেকায় উল্লেখ করেন, তিনি ভুল করেছেন।
আর কখনও এমন বক্তব্য দিবেন না এবং ভবিষ্যতে তার দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হবে
না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার জানান, আমরা তাকে
(মিজান) ডেকেছি। সে বলছে বক্তব্যটি তার না। এ সংক্রান্ত তিনি একটি জিডিও
করেছেন। যে কারণে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি না। তারপরও আমরা
ওই নির্বাচনী এলাকায় যাব, যদি স্বাক্ষী প্রমাণ পাই ভ্রাম্যমান আদালতে
ব্যবস্থা নিব।
এদিকে, ওই হুমকি দাতা উল্টো থানায় জিডি করার বিষয়ে জানতে
চাইলে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন,
‘জিডি একটা হইছে। সে করলো না তার বাবা করলো করছে আরকি। আর জিডি যে কেউ করতে
পারে’। তার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নে তিনি
জানান, ‘দেখা যাক কি হয়’।
এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান জানান, ‘এ বক্তব্য
আমরা নয়। আমার কথার কিছু অংশ সামনে পিছনে বাদ দিয়ে কম্পিউটারে এডিটিং করে
কুচক্রি মহল এমনটি করেছেন।’ ১মিনিট ২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও’র কোন অংশটি আপনার
এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কোনটাই আমরা না!’