এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
কুমিল্লা
(উঃ) জেলার দেবীদ্বার উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে সামনে
রেখে মাঠে নেমেছেন নির্বাচনী প্রার্থিরা। ৭ই ফেব্রোয়ারী সপ্তম দফার ১৩৮ টি
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উপজেলার ১৫টি ইউপির আওয়ামী লীগের
দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে তারা নির্বাচনী মাঠে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন।
তবে
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশিরা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দ্বন্দ্বে প্রার্থীরা হতাশ।
দেবীদ্বার আ’লীগে এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বনাম আ’লীগ কুমিল্লা(উঃ) জেলা
সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ রোশন আলী মাষ্টার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ
আবুল কালাম আজাদ গ্রুপে বিভক্ত।
অবশ্য দেবীদ্বারের আওয়ামী রাজনীতি ২০১০
সালের উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘মামা-ভাগ্নের’ দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
মামা সাবেক মন্ত্রী, এমপি, প্যানাল স্পিকার ও সচিব এবং বর্তমান কুমিল্লা
(উঃ) জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবিএম গোলাম মোস্তফা বনাম ভাগ্নে
সাবেক উপ-মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং বর্তমান আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা
মন্ডলীর সদস্য এ,এফ,এম ফখরুল মূন্সীর মধ্যে আধিপত্বের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
বর্তমানে ওই দুই নেতা এবিএম গোলাম মোস্তফা’র সেল্টারে রওশন-কালাম এবং
এ,এফ,এম ফখরুল মূন্সীর সেল্টারে নিজ পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী
মোহাম্মদ ফখরুল গ্রুপ রয়েছেন। এদের নিয়ন্ত্রণে আ’লীগ ও এর অঙ্গসংঠনগুলোও
বিভক্ত হয়ে আছে। ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দলের দলীয় কর্মকান্ডের ঘাটতির কারনে
নিজ দলের মধ্যে প্রায়ই সংঘাত লেগে আছে।
নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশীরা এখন
উভয় সংকটে। কার কাছে গেলে প্রতীক পাবে না পাবে বা নির্বাচনে ঠকা-জেতা নিয়ে
শংকা প্রকাশ করেছেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশি।
এদিকে স্ব স্ব প্রার্থীর
পক্ষে থেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। তবে এবার দৌড়-ঝাঁপ শুরু হবে
রাজধানী কেন্দ্রীক। কারন ২ জানুয়ারী হতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়
হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন
ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা
সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কুশল বিনিময় করে তাঁরা
নিজেদের প্রার্থিতার কথা ঘোষণা দিচ্ছেন। পাশাপাশি দলীয় সমর্থন নিজের দখলে
রাখতে লবিংয়েও পিছিয়ে নেই তারা। স্ব-স্ব এলাকায় শুরু করেছেন নির্বাচনী
মতবিনিময়, উঠান বৈঠক ও ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময়। সব মিলিয়ে ১৫টি
ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম ও গ্রাম্য হাট-বাজারে এখন নির্বাচনী হাওয়া জোরে-শোরেই
বইতে শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী,
সসপ্তম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ১২ই
জানুয়ারী, মনোনয়ন বাছাই ১৫ জানুয়ারী এবং প্রত্যাহার ২২ জানুয়ারী আর
ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৭ই ফেব্রোয়ারী।
অপরদিকে, আগামী ২ জানুয়ারী হতে ৪
জানুয়ারী সকাল ১০ টা হতে বিকেল ৫ টার মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়
কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে অনুরোধ
করেছেন ২৯শে ডিসেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের দপ্তর সম্পাদক
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের
সাধারণ সম্পাদক এ,কে,এম মনিরুজ্জামান (মাষ্টার) জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান পদে
প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। ১৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে অন্তত
একশতের কাছাকাছি প্রার্থী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন। আমরা
ইতিমধ্যে ১২টি ইউনিয়নে বর্ধিত সভা করে তৃনমুলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী
তালিকা করেছি এবং বাকি তিনটি সম্পন্ন করে জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠিয়ে
দেব, জেলা তা যাচাই বাছাই করে কেন্দ্রে পাঠাবে।
কুমিল্লা (উঃ) জেলা
আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রোশন আলী (মাষ্টার) বলেন, প্রতিটা
ইউনিয়ন হতে ৩-৪ জনের নাম কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তবে এর মধ্যে নিজ
নিজ এলাকার জনপ্রিয়তা ও দলের পরিক্ষিত নেতা এবং মুল ধারার প্রার্থীদের
মূল্যায়ন করা হবে। তবে ইতিমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে তৃনমুলের প্রার্থী বাছাইয়ে
কিছু অনিয়ম এবং বিতর্কিত ব্যাক্তিদের নাম সন্নিবেশীত হয়েছে বলে অভিযোগ
পাওয়া গেছে, সেগুলিও তদন্ত করে দেখে কেন্দ্র পাঠানো হবে।