মায়ের কোল ফিরে পাওয়া সেই নবজাতক অসুস্থ
Published : Saturday, 5 February, 2022 at 12:00 AM
চাঁদপুরের
মতলব উত্তর উপজেলায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে বিক্রি করা সেই নবজাতক
মায়ের কোলে ফিরেছে। তবে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে
১০টার দিকে মায়ের কোল ফিরে পাওয়ার আগে থেকেই সে জ্বর, সর্দি-কাশি ও
শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। আজ শুক্রবার সকাল থেকে নবজাতকের শারীরিক অবস্থা আরও
খারাপ হতে থাকে। পরে স্থানীয় এক চিকিৎসক তাকে সেবা দিয়েছেন।
নবজাতক
আব্রাহানের মা তামান্না আক্তার বলেন, জন্মের পর হাসপাতালের পাওনা মিটাতে
উপজেলার ষাটনল এলাকার বাসিন্দা শিমলা আক্তারের কাছে ৫০ হাজার টাকায় তাঁর
নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দেন। ফলে জন্মের পর থেকে সে বুকের দুধ পায়নি।
সেই সঙ্গে তাকে বাইরের খাবার খাওয়ানোয় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত
গতকাল রাতে তিনি তাঁর সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন। বর্তমানে তাঁর সন্তান
সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
আজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসার জন্য শনিবার শিশুটির
কাছে একজন চিকিৎসক পাঠাবেন। তার নমুনা পরীক্ষাও করা হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত
উদ্যোগে শিশুটি ও তার মায়ের জন্য একটি খাটও কিনে দেবেন।
উপজেলা প্রশাসন
সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের
হানিরপাড় গ্রামের দিনমজুর মো. আলমের স্ত্রী তামান্নার (২৮) প্রসবব্যথা উঠলে
স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ছেংগারচর পালস এইড হাসপাতালে ভর্তি করেন
স্বজনেরা। সেখানে অস্ত্রোপচারে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দেন তামান্না। ২৮
জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি। হাসপাতালে বিল আসে ২৬ হাজার
টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তামান্না। এ অবস্থায় ছেংগারচর বাজারের
কাউসার নামের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে মাত্র ৫০
হাজার টাকায় ওই সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন তিনি।
সন্তান বিক্রির পর ওই মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার
বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয় গোটা এলাকায়। নড়েচড়ে বসেন স্থানীয়
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। পরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায়
প্রশাসনের উদ্যোগে নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে
শুক্রবার প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় সন্তানকে বেচে হাসপাতালের ‘পাওনা
মেটালেন’ মা শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া ‘বেচে দেওয়া
সন্তান ফিরে পেলেন মা’ শিরোনামে অপর একটি প্রতিবেদন প্রথম আলো অনলাইন
সংস্করণে ছাপা হয়।