লাকসাম প্রতিনিধি: শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষ দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার সকালে লাকসাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম (চৈতি কালাম) গ্রুপ ও সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মানুষজন আতংকিত হয়ে ছুটাছুটি করতে থাকেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষ দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম(চৈতি কালাম) গ্রুপ ও সাবেক সাংসদ কর্নেল আনোয়ারুল আজিম গ্রুপ পৃথক ভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধ নিবেদনের জন্য ফুলের ঢালা হাতে নিয়ে অবস্থান নেয়। সাবেক সাংসদ কর্নেল আনোয়ারুল আজিম গ্রুপ পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম খোকনের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদের উত্তর গেইটে অবস্থান নেয়।
কিছুক্ষণ পর কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম (চৈতি কালাম) গ্রুপ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে ফুলের ঢালা নিয়ে একই সড়ক দিয়ে শহীদ মিনার অভিমুখে আসার পথে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চত্বরে আসা মাত্র উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং পাল্টাপাল্টি ইট পাটক্ষেত নিক্ষেপ শুরু হয়।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ত্যাগ করে লাকসাম সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন সামনির পোল এলাকায় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের ফলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিনত হলে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা দর্শনাথীর আতংকিত হয়ে আর্ত্মরক্ষায় সবাই দিকবিদিক চোটাচুটি করতে থাকেন।
এসময় সাবেক সাংসদ কর্নেল আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের কর্মী ফারুক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম (চৈতি কালাম) গ্রুপের কর্মী বায়জিদসহ বিএনপির নেতা-কর্মী ও দর্শনাথীসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সাবেক সাংসদ কর্নেল আনোয়ারুল আজিম গ্রুপের পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম তাজুল ইসলাম খোকন বলেন, আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম বিএনপি নেতা বাদল রিক্সায় করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসার সাথে সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের কর্মী ফরুকসহ ৫/৬জন আহত হয়েছে।
লাকসাম পৌরসভা বিএনপি সভাপতি( চৈতি কালাম গ্রুপ) মো. মানু মিয়া বলেন, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন সবার নৈতিক দ্বায়ীত্ব। তাই আমরা প্রায় ১ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে প্রবেশের সাথে সাথে যে হামলা হয়েছে এটি নেক্কারজনক ঘটনা।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুর রহমান বাদল বলেন, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম ভাইয়ের নির্দেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফুলের ঢালা নিয়ে যাওয়ার পথে কোন কারন ছাড়া তাজুল ইসলাম খোকনের নেতৃত্বে মিছিলে হামলা চালিয়ে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে।
লাকসাম থানা পুলিশের ওসি মো. মেসবাহ উদ্দিন ভুঁইয়া ঘটনার বিষয়ে জানান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোন পক্ষ থানায় এখনও কোন অভিযোগ দেয়নি।