এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
কুমিল্লার দেবীদ্বারে কোভিড-১৯ সুরক্ষা টিকা দেয়াকে কেন্দ্র করে ২ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় অন্ততঃ ১০/১২ জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুরে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ ভবনের হল রুমের সামনে।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, ওই প্রশাসনিক হলরোমে তখন দুয়ারীয়া এজি মডেল একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ’র শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ সুরক্ষা টিকা দেয়া হচ্ছিল। টিকা দেয়ার শেষ পর্যায়ে গঙ্গামন্ডল রাজ ইনিষ্টিটিউশনের শিক্ষার্থীরা শৃংখলা ভেঙ্গে টিকা নেয়া শুরু করে। প্রথমে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা পরে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে অন্ততঃ ১০/১২ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুরো উপজেলা পরিষদ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক- শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সাধারন মানুষ প্রাণভায়ে দ্বিক-বিদিক ছুটা ছুটি করতে দেখা যায়। এসময় বিআরডিবি অফিসের এক কর্মচারীসহ আরো কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে উভয় পক্ষকে ধাওয়া করে এবং হামলাকারীদের হাত থেকে আবু মুছা নামে দুয়ারীয়া এজি মডেল একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ’র নামে এক (এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থী) শিক্ষার্র্থীকে উদ্ধার করে বিআরডিবি অফিসে নিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন বলেও তারা জানান। প্রশাসনিক ভবনের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোভিড- ১৯ সুরক্ষা টিকা প্রদানকালে আগে পড়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটে।
সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক-উন-নবী- তালুকদার এবং দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আরিফুর রহমান’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পুলিশ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বিকেলে ওই ৩ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে আর এজাতীয় ঘটনা না ঘটানোর শর্তে মুচলেকা রেখে তাদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
ধামতী ইউপি সদস্য ইব্রাহীম মেম্বার জানান, দুয়ারীয়া এজি মডেল একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজে তার মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে। সে ওই হামলার প্রতিবাদ করায় তাকেও লাঞ্ছিত করে। বিকেলে ওসি সাহেব আমার মেয়েকে ডেকে এনে আটক ৩জন থেকে হামলাকারীকে সনাক্ত করতে বলেন। আমার মেয়ে ওদের কাউকে চেনেনা বলে জানান।
এ ব্যাপারে দুয়ারীয়া এজি মডেল একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ’র প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সেলিম ভূঁইয়া বলেন, কোভিড-১৯ সুরক্ষা টিকা দিতে আমার বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ৪/৫ হাজার শিক্ষার্থী উপজেলা কমপ্লেক্সে উপস্থিত ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু করে। আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকাদানের শেষ পর্যায়ে গঙ্গামন্ডল ইনিস্টিটিউশন’র শিক্ষার্থীরা জোর করে লাইনে ঢুকে পড়লে ওই ঘটনা ঘটে। ওই অনাকাঙ্খীত ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক-উন-নবী তালুকদার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ,কে, এম,আলী জিন্নাহকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে জাফরগঞ্জ গঙ্গামন্ডল রাজ ইনিস্টিটিউশন’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন’র সেল ফোনে যোগাযোগ করে কথা বরার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ওই ঘটনায় দেবীদ্বার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমি সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এসময় পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অভিযুক্ত ৩ শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে এসে অভিভাবকদের ঢেকে এনে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক উন-নবী তালুকদার বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে ঘটনার মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে।