তানভীর সাবিক, কুবি ||
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের উপস্থাপনকে কেন্দ্র করে হল গ্রুপ এবং মেস গ্রুপের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (০২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের উপস্থাপনকে কেন্দ্র করে একই বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়র ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দু'গ্রুপের মাঝে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর ১২ টায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের উপস্থাপনের জন্য যায়। এক পর্যায়ে মেসের শিক্ষার্থীরা হলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম থেকে বের হতে বলে এবং তাদেরকে রেখে কেন পরিচয় পর্বে গেল এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিভাগের অন্য সিনিয়রদের দারস্থ হলে বিষয়টি সন্ধ্যার মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে উভয়পক্ষ তা মেনে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে মার্কেটিং বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিয়া সানজানা নামের এক শিক্ষার্থী তার বান্ধবী লামিয়াকে দিয়ে একই ব্যাচের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী পাবেল রানাকে ডেকে আনে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সানজানার বন্ধু এবং মেসের শিক্ষার্থী শহীদুল ইসলাম, উৎচা বড়ুয়া, সাফায়ত রহমান, তুষার, রাজন, ইমন, মুজাহিদ পাবেল রানাকে হামলা করে। এতে পাবেল, সুমন, দ্বীন ইসলাম এবং শরীফ গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেসের শিক্ষার্থীদের পুনরায় মীমাংসার কথা বলে ডেকে এনে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী পাবেল রানা এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিফাত, মুরসালিন, শাকিল, মাহবুব এবং মার্কেটিং বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দ্বিন ইসলাম, শরীফ এবং পাবেল রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের কাছে মেসের শিক্ষার্থীদের উপর পুনরায় হামলা করে। এতে রাজন, শাফায়াত, উৎচসহ মোট ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী পাভেল রানা বলেন, ১৫তম ব্যাচের সাথে পরিচিত হওয়াকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে দুপুরের দিকে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টা সিনিয়ররা সমাধান করে দিবে বলে। কিন্তু সন্ধ্যায় আমাদের ক্লাসের বান্ধবি লামিয়া কথা বলার জন্য মুক্তমঞ্চে আসতে বলে। সেখানে গেলে তুষার ও রাজনসহ কয়েকজন আমাদের ধরে ফেলে এবং মারধর করে। পরে আমরা পালিয়ে হলে চলে আসি। এসময় তারা আমাদের ৪ জনকে মারধর করেন।
মেসের শিক্ষার্থী শাফায়েত রহমান বলেন, ব্যাচের ছোট একটা ইস্যু নিয়ে হলের বন্ধুরা আমাদের কে মারধর করেছে। প্রথমে তারা ৫ জন এসে কথা বলার এক পর্যায়ে আমাদেরকে মারতে আসলে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে গেলে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে আমরা দৌড়ে ক্যাফে ক্যাম্পাসের সামনে চলে আসলে তারা ৩০ জন এসে আমাদের ফের মারধর করে। এতে আমাদের প্রায় ৫ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। আমরা এর একটি সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনায় লামিয়াকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। সানজানা হিয়াকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, হলের কিছু ছেলের সাথে বাইরের ছেলেদের হাতাহাতি শুনে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছে। এরপরও যদি কেউ অভিযোগ ছাত্রলীগ সাংগঠিক ব্যবস্থা নিবে।
ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, মুক্তমঞ্চে ছেলেদের হাতাহাতির খবর শুনে সাথেসাথে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়ে কাউকে পাইনি। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে কোন পক্ষ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাক্ষেপে আমরা প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।