ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চান্দিনায় অধ্যক্ষের উপর হামলা ঘটনা; পাল্টা মামলা ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ
Published : Saturday, 26 March, 2022 at 12:00 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ এর অধ্যক্ষ মো. মনিরুল ইসলাম ভূঁঞা’র উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার জের ধরে  শিক্ষার্থীদের কাউন্টার মামলা ও সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচারের অভিযোগে প্রতিবাদ করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ। এসময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবীসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।  
শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকেলে লিখিত ভাবে প্রতিবাদ জানান তিনি। এসময় অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম ভূইয়া জানান, দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবৎ আমি এই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। যেহেতু কলেজটি একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত সেহেতু আমাদের কলেজে কোন ছাত্র সংসদ নেই। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার মানসিকতা নিয়ে সকল শিক্ষকদের সমন্বয়ে নিরলস ভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি কয়েকজন বিপদগামী ছাত্র শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করতে ‘ছাত্রলীগ’ ব্যানারে সংগঠন তৈরি করে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। কখনও কলেজে তাদের জন্য পৃথক কক্ষ দিতে, কখনও মিছিল মিটিং-এ শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে দিতে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। কিন্তু আমরা শিক্ষার মান অক্ষুন্ন রাখতে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনঢ়।
সম্প্রতি গত ১৪ মার্চ কলেজের ২য় ক্যাম্পাস মমতাজ আহমেদ ভবনের প্রধান ফটকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে অত্র কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আজাদ হোসেনসহ আরও কয়েকজন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল এলোপাথারী রেখে শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তখন কলেজ পিয়ন রাজন ছাত্রদের মোটরসাইকেলগুলো সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করলে একমাত্র আজাদ হোসনে ছাড়া বাকি সকল ছাত্ররা তাদের নিজ নিজ মোটরসাইকেলগুলো সরিয়ে নেয়। ছাত্র আজাদ হোসেন তার মোটরসাইকেল না সরিয়ে উপরন্তু পিয়ন রাজনকে গালিগালাজ করে এক পর্যায়ে মারধর করে। বিষয়টি আমি জানার পর ছাত্র আজাদ ও তার অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করার আশ^াস দেই। পরদিন ১৫ মার্চ সকালে আজাদ হোসেন আরও কয়েকজন বহিরাগতকে সাথে নিয়ে এসে পকেট থেকে সুইচ গিয়ার ছুড়ি বের করে পিয়ন রাজনকে ঘাই দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় প্রাণ ভয়ে পিয়ন রাজন দৌঁড়ে পালানোর সময় পিছনে ছুড়ি হাতে ধাওয়া করে ছাত্র আজাদ হোসেন। এক পর্যায়ে টিউবওয়েলের পাকায় পড়ে মাথায় আঘাত পায় আজাদ হোসেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৬ মার্চ কলেজের ছাত্র সামিরুল খন্দকার রবি, কাজী জামিল আহমেদ ও বহিরাগত আক্তার হোসেন রানা এর নেতৃত্বে কলেজের ২য় ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন শুরু করে। তারা কলেজের ক্লাস চলাকালিন সময়ে শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে বাহির করে মানববন্ধনে যুক্ত করার চেষ্টা করে। এসময় আমি বিষয়টি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও থানা অফিসার ইন-চার্জকে অবহিত করি এবং তাদের পরামর্শ মোতাবেক আমি কলেজের প্রধান ক্যাম্পাস থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরাতে গেলে আমার উপর হামলা করে রবি, রানা ও জামিল।
ওই ঘটনায় আমি ২১ মার্চ বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করার পর বিজ্ঞ আদালত ওই তিন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা দেয়। পরদিনে ২২ মার্চ আঘাতপ্রাপ্ত ওই শিক্ষার্থীকে বাদী করে আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করে ওই দুই বিপদগামী শিক্ষার্থী। আমার উপর হামলা ও মামলার মোড় ঘুড়াতে গত ২৪ মার্চ বিকেলে শিক্ষার্থী সামিরুল খন্দকার রবি ও কাজী জামিল বহিরাগতদের সাথে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। ওই সংবাদ সম্মেলনে মনগড়া মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনা করে। পরদিনে শুক্রবার কুমিল্লার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ওই সংবাদ সম্মেলনটি প্রকাশ হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের জন্য ১৫ মার্চ আমার কাছে অনুমতি চাইতে গেলে আমি খারাপ ব্যবহার করি এবং আমি আমার অফিস থেকে ছেনি এনে শিক্ষার্থীর মাথায় কোপ দেই! যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট, উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর। প্রকৃতপক্ষে আমি কলেজের প্রধান ক্যাম্পাসে বসি। ১৪ মার্চ মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে ছাত্র ও পিয়নের সাথে হাতাহাতির ঘটনায় ১৫ মার্চ ২য় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী আজাদ হোসেনসহ আরও কয়েকজন ছুড়ি নিয়ে পিয়ন রাজনকে মারতে আসে। এসময় প্রাণ ভয় পিয়ন রাজন দৌঁড়ে পালায় ছুড়ি হাতে পিছু ছুটে ছাত্র আজাদ। এক পর্যায়ে টিউবওয়েল এর পাকায় পড়ে মাথায় আঘাত পায় শিক্ষার্থী আজাদ। আর সেটিকে পূঁজি করে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠে ওই দুই শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা। শিক্ষার্থীদের এমন মিথ্যাচার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, শিক্ষকদের উপর হামলা করে ষড়যন্ত্র মূলক পাল্টা মামলা ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্টকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানাই। এছাড়া শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।