২২ দিন পর বিদ্যালয়ে ফিরলেন মুন্সিগঞ্জের ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটকের পর জামিন পাওয়া হৃদয় মণ্ডল।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তদন্ত কাজে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন তিনি।
এর আগে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেন কমিটির একমাত্র সদস্য সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হাই তালুকদার। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রফেসর আব্দুল হাই তালুকদার জানান, তদন্ত সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য, ছাত্রদের ধারণকৃত অডিও রেকর্ডসহ অন্যান্য তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। এটা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।
তিনি আরও জানান, হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর অবগত রয়েছেন। এখানে কী হয়েছে তা উদ্ঘাটন ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। ১১ এপ্রিল চিঠিটি পেয়ে পরদিন থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। আজ সরেজমিনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্তের কাজ শুরু করেছি।
আব্দুলহাই তালুকার জানান, প্রয়োজনে আশপাশের কারো যদি সংশ্লিষ্টতা থাকে তাদের সঙ্গেও বলবো। এ ঘটনার একটি নিরপেক্ষ সত্যাসত্য উদ্ঘাটন করব। তদন্তের কাজে দু-একদিন বেশি সময় লাগলেও নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেটি বাড়িয়ে নেবো।
তিনি জানান, শিক্ষক-ছাত্রদের রেকর্ডটি উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করবো। সে রেকর্ডটিই আসল। সেখানে ছাত্ররা কী বলেছে ও শিক্ষক কী বলেছেন সেটি আছে। রেকর্ডটিই আমার তদন্তের প্রতিপাদ্য হবে। হৃদয় মণ্ডল ক্লাস করতে পারবেন কিনা সেটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয়। আমার শুধু তদন্তের কাজের বিষয়।
গত ২০ মার্চ বিনোদনপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ক্লাস চলাকালে ধর্মীয় বিষয়ে হৃদয় মণ্ডলের বিভিন্ন কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করে শিক্ষার্থীরা৷ ওইসব কথোপকথনে ধর্মের বিষয়ে আপত্তিকর কথা ও অবমাননার অভিযোগ তুলে ক্লাস শেষে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করে শিক্ষার্থীরা। পরে ২২ মার্চ বিদ্যালয় চলাকালীন সমেয় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।
এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে থানায় নেন। একইদিন বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ বাদী হয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে শিক্ষককে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ১৯ দিন হাজতে থাকার পর গত ১০ এপ্রিল আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন পান তিনি।