ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
উদ্ভাবনী পুরস্কার পেলেন বার্ডের তিন গবেষক ইফকাস পদ্ধতি প্রান্তিক কৃষকের দারিদ্র্য বিমোচনে মডেল হতে পারে
Published : Friday, 1 July, 2022 at 12:00 AM
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) কর্তৃক ২০২১-২২ অর্থবছরে উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিন জন অনুষদ সদস্যকে ‘ইনোভেশন পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। এ সময় বার্ডের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ শাহজাহানের নিকট হতে ইনোভেশন পুরস্কার গ্রহণ করেন উপ-পরিচালক মোঃ রিয়াজ মাহমুদ, সহকারী পরিচালক আনাস আল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক আবদুল্লা-আল-মামুন। গবেষকগণ চলতি অর্থবছরে চরাঞ্চলের মানুষের জীবিকার মানোন্নয়নের একটি উপায় হিসেবে নদীতে ‘ইফকাস’ (ওঋঈঅঝ -ওহঃবমৎধঃবফ ঋষড়ধঃরহম ঈধমব অয়ঁধমবড়ঢ়ড়হরপং ঝুংঃবস) বা ভাসমান খাঁচায় মাছ ও সবজি চাষের সমন্বিত পদ্ধতির সফল প্রদর্শনী স্থাপন করেন। ইনোভেশন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বার্ডের মহাপরিচালক বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও গবেষকদের সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে সরকার ইনোভেশন পুরস্কার প্রবর্তন করে। বার্ডের গবেষকদের উদ্ভাবনী কার্যক্রমের প্রশংসায় তিনি বলেন, পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতিতে ইফকাস পদ্ধতি প্রান্তিক কৃষকের দারিদ্র্য বিমোচন ও পুষ্টি নিশ্চিতের একটি মডেল হতে পারে।
বার্ডের রাজস্ব বাজেটের আওতায় পরিচালিত ‘অভিযোজন পদ্ধতিতে চরাঞ্চলের মানুষের জীবিকার মানোন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নদীতে খাঁচায় মাছ ও সবজি চাষের এ লাভজনক প্রযুক্তিটি সম্প্রসারণ করা হয়। ইফকাস পদ্ধতিতে তিনটি স্তরে অভিযোজিত কৃষি উৎপাদন করা হয়েছে। নীচের স্তরে ভাসমান খাঁচায় মাছ উৎপাদন করার পাশাপাশি দ্বিতীয় স্তরে খাঁচায় উপরিভাগে প্লাস্টিক ট্রেতে উচ্চমূল্যের পাতা জাতীয় (লেটুস, পুদিনা ইত্যাদি) এবং তৃতীয় স্তরে বিভিন্ন লতানো সবজি (মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, করলা ইত্যাদি) উৎপাদন করা হয়েছে। বর্ষাকালে চাষযোগ্য জমি তলিয়ে যাওয়ার ফলে দেশের চরাঞ্চলের অনেক কৃষক ও শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পরেন। একই ধরনের চিত্র বাংলাদেশের হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলে বিদ্যমান। ‘ইফকাস’ পদ্ধতিতে নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ ও উচ্চমূল্যের শাক-সবজি  চাষের মাধ্যমে চরাঞ্চল ও সমধর্মী এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে গবেষকগণ মনে করেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইতোপূর্বে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বদ্ধ জলাশয়ে এই প্রযুক্তিটির অভিযোজিত ট্রায়াল সম্পন্ন করা হলেও উন্মুক্ত জলাশয় বা চরাঞ্চলে এ প্রযুক্তির ট্রায়াল পূর্বে করা হয়নি। যেহেতু স্বল্প পুঁজিতে ‘ইফকাস’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা যায়, ফলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় অধিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া নিরাপদ উপায়ে মাছ ও শাক-সবজি  চাষ করার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য ও পারিবারিক পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এ প্রযুক্তিটি জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়া কৃষকদের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে। এছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ও বহুবিধ ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে ইফকাস প্রযুক্তি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।