রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার
চান্দিনায় জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। উপজেলা সদরের ছায়কোট
গরু বাজারটি আশ-পাশের কয়েকটি উপজেলার মধ্যে সর্ব বৃহৎ গরু বাজার। ঈদকে
সামনে রেখে এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করাসহ বাড়তি
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন ও বাজার কর্তৃপক্ষ। নিয়মানুযায়ী
প্রতি শনি ও মঙ্গলবার নির্ধারিত বাজার থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিনই ওই
বাজারে মিলছে বিভিন্ন সাইজের গরু।
ইতোমধ্যে পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা
ব্যবস্থা, নির্বিঘ্নে যাতায়াত, জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন সহ ব্যাপক
প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ। পশুর
হাটে ক্রেতা সমাগম করতে প্রচার-প্রসারণা চালাচ্ছে ইজারাদাররা। মাইকিং এর
প্রতিযোগিতা চলছে আনাচে কানাচে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার
আশ্বাস দিয়ে যার যার মত করে বাজার মাতানোর চেষ্টা করছে বাজার কর্তৃপক্ষ।
১টি
পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চান্দিনা উপজেলায় ৪টি স্থায়ী গরু বাজার
থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি পশুর হাট বসিয়েছে
প্রশাসন। সব মিলিয়ে এখন পশু বেচাকেনায় ব্যস্ত অধিকাংশ মানুষ।
গত শনিবার
(২ জুলাই) চান্দিনা পৌরসভার ছায়কোট গরু বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,
প্রচুর সংখ্যক কোরবানির পশু বাজারে প্রবেশ করেছে। ঈদের আরও সপ্তাহ খানেক
বাকি থাকলেও পশু বিক্রি হয়েছে চোখে পড়ার মতো। আবার অনেক ক্রেতারা শনিবার
গরু না কিনলেও বাজার ঘুরে দরদাম করছেন।
ইজারাদার হাজী মো. শামীম হোসেন
এর তথ্যানুসারে জানাযায়, এবার পশুর দাম মোটামুটি ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার
মধ্যে রয়েছে। শনিবার চান্দিনার ছায়কোট বাজারে গরু, ছাগল ও খাশি মিলিয়ে
৬শতাধিক কোরবানীর পশু বিক্রি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাদের মূল লক্ষ
আগামী মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ও শনিবার (৯ জুলাই) এর বাজার। এই দুইটি বাজার
ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে বাজারের ভিতরে প্রবেশের
প্রধান রাস্তাটি নতুন করে মেরামত করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের থাকা-খাওয়ার
ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের সাথে কথা বলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ক্রেতারা
অভিযোগ করছেন, বিক্রেতারা প্রায় দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছেন। আর বিক্রেতারা
বলছেন, দাম ঠিক রেখেই বিক্রির চেষ্টা চলছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই
বলছেন, ঈদের দুই থেকে তিন দিন আগেই মূলত ভালভাবে বেচা-কেনা শুরু হবে। এবার
কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে ধারণা করা
হচ্ছে। স্থানীয়রা গরুকে বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে বাজারে তুললেও দূরের
ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে প্রচুর সংখ্যক গরু বাজারে তুলেছেন। বাজারে বিভিন্ন
আকারের গরু, খাসি উঠেছে। অপরদিকে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান আগামী বাজারে আরও
আকর্ষনীয় গররু ও খাসী এই চান্দিনা বাজারে তোলা হবে।
চান্দিনা উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৪টি স্থায়ী পশুর
হাট রয়েছে এবং কোরবানিকে সামনে রেখে বিভিন্ন ইউনিয়নে আরও ১৭টি অস্থায়ী
বাজার ইজারা দেওয়া হয়েছে। চান্দিনার উল্লেখযোগ্য বাজার গুলোর মধ্যে
চান্দিনা সদরে ছায়কোট গরু বাজার, এতবারপুর শ্রীমন্তপুর, বদরপুর, নবাবপুর,
মাধাইয়া, রসুলপুর, হাড়িখোলা, মহিচাইল উল্লেখযোগ্য।
এব্যাপারে চান্দিনা
থানার অফিসার-ইন-চার্জ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতাদের
নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ ও বাজার কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে
পৃথক টিম গঠন করা হবে। স্থায়ী বাজারগুলোতে জালনোট শনাক্ত করণ মেশিন বসানোর
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বিঘ্নে ক্রয়-বিক্রয় করার যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া
হবে।’