দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রবিবার থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর
সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ৩১ জুলাইয়ের
মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৩৯টি নিবন্ধিত দলের সাথে সংলাপ করতে সময়সূচি চূড়ান্ত
করেছে এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ইসির পক্ষ থেকে প্রথমদিনে ৪টি দলকে
সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে এদের মধ্যে একটি দল সংলাপে অংশ নেবে না
বলে নিশ্চিত করেছেন।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম’র
(নিবন্ধন নং-৪৩) সাথে সর্বপ্রথম সংলাপ করবে ইসি। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে
সকাল সাড়ে ১০টায় এ সংলাপ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ
ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) (নিবন্ধন নং-৪২), বেলা আড়াইটায় বাংলাদেশ
কংগ্রেস (নিবন্ধন নং-৪৪) এবং বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল-এর
(নিবন্ধন নং-৪০) সাথে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ করা আছে। এদের
মধ্যে প্রথম তিনটি দল সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা বললেও বিএমএল যাবে না বলে
নিশ্চিত করেছেন।
গত কয়েকটি নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ
পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কেবল কে এম নূরুল হুদা কমিশন তার সংলাপে নিবন্ধিত
সব দলকে পেলেও অন্য ইসির সংলাপে সবাই অংশ নেয়নি।
ইসির অতিরিক্ত সচিব
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, আগামীকাল (রবিবার) থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে
সংলাপ করবে ইসি। প্রতিটি দল থেকে ১০ জন করে প্রতিনিধি অংশ নিতে পারবেন।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর জন্য এক ঘণ্টা করে
সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই তিন দলের জন্য সময় রাখা হয়েছে দুই ঘণ্টা করে।
আবুল
কালাম আজাদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি বিএনপিসহ কয়েকটি দল যাবে না।
সংলাপে কেউ যাবেন, কেউ যাবেন না— এটা হতেই পারে। আমরা যাওয়া পার্টির মধ্যে
থাকতে চাই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তো অনেকেই ছিল না। আমরা ছিলাম। এবারও আমরা
থাকতে চাই। দেখি কত দূর কী করা যায়।
সংলাপের সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, একঘণ্টা তো কম সময়। আমরা সময় বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। অনেক দল তো
আসবে না। তাদের সময়টা আমাদের মধ্যে ভাগ করে দিলেই তো হয়।
সংলাপের
আমন্ত্রণ পেলেও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল অংশ নেবে না। বিএনপি
নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক বিএমএল’র এর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট
শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা আমন্ত্রণ পেয়েছি।
তবে সংলাপে যাচ্ছি না। আমাদের জোটের প্রধান দল বিএনপি যেহেতু যাবে না,
জোটের ঐক্যের স্বার্থে আমরাও না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাংলাদেশ
কংগ্রেসের সভাপতি কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, আমাদের সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো
হয়েছে। আমরা অংশ নেবো। আমাদের ১০ জনের প্রতিনিধি অংশ নেওয়ার জন্য ইসি থেকে
বলা হয়েছে। তবে আমরা ১২ জন যেতে পারি। আমরা আপাতত লিখিত কোনও প্রস্তাবনা
দিচ্ছি না। আমাদের প্রস্তাবনাগুলো বক্তব্য আকারে তুলে ধরবো।
এনডিএম’র
চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ জানিয়েছেন, তাদের দল ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের
সংলাপের আমন্ত্রণ পেয়েছেন এবং তারা সংলাপে যাবেন। ইসি ১০ জনের প্রতিনিধি
নিয়ে অংশগ্রহণের কথা বলেছেন। আমরা তার মধ্যেই সংখ্যা সীমাবদ্ধ রাখব।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, ইলেকশন প্রসেস এবং ভোটের সময়কালে তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা এই বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়ে আলোচনা করবো।
পরবর্তী সংলাপের সময়সূচি
১৮
জুলাই (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট
(নিবন্ধন নং--৩৫), দুপুর ১২টা থেকে ১টা বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট
(মুক্তিজোট)(নিবন্ধন নং-৪২), আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা খেলাফত মজলিস (নিবন্ধন
নং-৩৮) ও বিকাল ৪টা থেকে ৫টা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
(নিবন্ধন নং-৩৭)।
১৯ জুলাই (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (নিবন্ধন নং-৩১), দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা
ইসলামিক ঐক্যজোট (নিবন্ধন নং-৩২), আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা বাংলাদেশ খেলাফত
মজলিস(নিবন্ধন নং-৩৮), ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল-এমএল
(নিবন্ধন নং-৪০)।
২০ জুলাই (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা
গণতন্ত্রী পার্টি (নিবন্ধন নং-৩১), দুপুর ১২টা থেকে ১টা বাংলাদেশ ন্যাশনাল
আওয়ামী পার্টি (নিবন্ধন নং-৯), বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি (নিবন্ধন নং-৭)।
২১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল
সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (নিবন্ধন নং-১৯), দুপুর
বারোটা থেকে দুপুর ১টা বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (নিবন্ধন নং-২৮), দুপুর
আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (নিবন্ধন নং-১৩)
ও বিকাল ৪টা থেকে ৫টা গণফ্রন্ট (নিবন্ধন নং-২৫)।
২৪ জুলাই (রবিবার)
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (নিবন্ধন
নং-২০), দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাতীয় পার্টি-জেপি(নিবন্ধন
নং-২), আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক
দল-জেএসডি(নিবন্ধন নং-১৫), বিকেল ৪টা থেকে ৫টা ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ
(নিবন্ধন নং-৩০)।
২৫ জুলাই (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (নিবন্ধন নং-২১), দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (নিবন্ধন নং-১০), বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ (নিবন্ধন নং-১৭), বিকাল ৪টা থেকে ৫টা
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এল.ডি.পি (নিবন্ধন নং-১)।
২৬ জুলাই
(মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম
বাংলাদেশ (নিবন্ধন নং-২৩), দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা বিকল্পধারা বাংলাদেশ
(নিবন্ধন নং-১১), বিকাল আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
(নিবন্ধন নং-৩৪), বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি
(নিবন্ধন নং-২১)।
২৭ জুলাই (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা
পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (নিবন্ধন নং-১৮), দুপুর ১২টা থেকে
১টা পর্যন্ত জাকের পার্টি (নিবন্ধন নং-১৬), বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা
পর্যন্ত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (নিবন্ধন নং-৪)।
২৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার)
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা গণফোরাম (নিবন্ধন নং-২৪), দুপুর ১২ থেকে ১টা
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ (নিবন্ধন নং-২৭), বেলা
আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (নিবন্ধন নং-৫)।
সর্বশেষ
৩১ জুলাই (রবিবার) ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত জাতীয় পার্টি (নিবন্ধন নং-১২) ও
বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের (নিবন্ধন নং-৬) সঙ্গে
সংলাপ করবে ইসি।