ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ইভটিজিং প্রতিরোধে অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
Published : Tuesday, 11 October, 2022 at 8:31 PM
ইভটিজিং প্রতিরোধে অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রীনতুন শিক্ষক্রম অসাম্প্রদায়িক ও দক্ষ প্রজন্ম তৈরিতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় কোনোভাবেই মেয়েদের ঘরে আটকে রাখা নয়, ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া।’

মঙ্গলবার (১১ অক্টৈাবর) আন্তর্জাতিক ‘কন্যাশিশু দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের ১০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল— ‘এখনই সময় ভবিষ্যৎ গড়ার, নিশ্চিত করো নিজের অধিকার’।

সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠ্যসূচির পরিবর্তন করা হচ্ছে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কোডিং অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বাল্যবিয়ে রোধে শুধু মেয়েদের নয় ছেলেদেরও সচেতন করতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ তৈরি করতে সরকার নতুন কারিকুলাম পাইলটিং শুরু করতে করছে। যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের পাশাপাশি মানবিক ও সৃজনশীলতাকেও যুক্ত করা হবে। যা শিশু-কিশোরদেরকে বিজ্ঞানমনস্ক করার পাশাপাশি মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও দক্ষ প্রজন্ম তৈরিতে সহায়তা করবে।’

 
ইভটিজিং প্রতিরোধের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় কোনোভাবেই মেয়েদের ঘরে আটকে রাখা নয়, ইভটিজিং প্রতিরোধের উপায় অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া।’

সংলাপ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির ১ দশমিক ১১ অনুপাত হার নিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে রয়েছে। মেয়েদের খেলাধুলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং ২০০৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে নারী শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন ১০ শতাংশ (২৬% থেকে ৩৬%) বৃদ্ধি পেয়েছে। কমে এসেছে নারী ও পুরুষের  মজুরির ব্যবধানও।

সংলাপে বলা হয়, ৯৬.৬২ শতাংশ স্কুলে মৌলিক স্যানিটেশন সুবিধা রয়েছে, যা পিরিয়ড চলাকালীন স্কুলে মেয়েদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মেয়েদের জন্য অতিরিক্ত উপবৃত্তি ও সহায়তা, বিজ্ঞান মেলা, শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগকে  লিঙ্গ সমতার কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

যদিও লিঙ্গ সমতা তৈরি করতে এসব অগ্রগতি অব্যাহত আছে। কিন্তু প্রায় ৫১ শতাংশ মেয়ের সম্ভাবনাকে বাল্যবিয়ের মতো প্রতিবন্ধকতা বাধাগ্রস্ত করছে। বৈষম্য হ্রাসের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণের জন্য বর্তমান গড় বার্ষিক হার  ২ মশমিক ১ শতাংশ এর তুলনায় আট গুণ দ্রুত গতির উদ্যোগ প্রয়োজন। দেশের গ্রামাঞ্চল এবং দরিদ্র অঞ্চলে মেয়েদের পরিস্থিতি আরও খারাপ।

লিঙ্গ সমতা সূচক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ,  পোস্ট সেকেন্ডারি নন-টারশিয়ারিতে শূন্য দশমিক ২৪ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। উচ্চতর শিক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় মেয়েদের কাজের ক্ষমতা এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্বাধীনতা স্থবির হয়ে পড়ে। খুব কম মেয়েই প্রয়োজনীয় কৌশল এবং দক্ষতা শিখতে পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ পায়, যা মেয়েদের নিম্ন আয় এবং উচ্চ বেকারত্বের দিকে ধাবিত করে। কোভিড বিধিনিষেধের কারণে মেয়ে এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে, ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে জেন্ডার বৈষম্য বিশেষ করে ডিজিটাল বিভাজন অত্যন্ত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্য মতে, বাংলাদেশে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের মোট কর্মীর মাত্র ১৬ শতাংশ নারী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মিসেস নাথালি চুয়ার্ড এবং অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত জেরেমি ব্রুর।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি অফিসার ইনচার্জ ডক্টর সাজা আবদুল্লাহ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সেশনটি সঞ্চালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।