ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ব্রাহ্মণপাড়ায় সালিশি বৈঠকে হামলা, শিশু ছিনতাইয়ের অভিযোগ
Published : Wednesday, 12 October, 2022 at 12:00 AM
ইসমাইল নয়ন।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়ন অলুয়ায় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে হামলা চালিয়ে গৃহবধুকে পিটিয়ে আহত করেছে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদরা। এছাড়াও ওই গৃহবধুর ১৮ মাসের শিশু সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় গৃহবধুর মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ দিকে ৪ দিনেও দুধের শিশুটি উদ্ধার না হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে আছে শিশুটির মা শাহেনা আক্তারসহ এলাকাবাসী। আহত গৃহবধূ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর পূর্বে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গোপালনগর গ্রামের সফিকুল ইসলামের মেয়ের সাথে পার্শ্ববর্তী অলুয়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মোঃ আবদুল্লাহ এর সাথে বিয়ে দেয়।বিয়ের সময় স্বর্ণালংকার আসবাপপত্রসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল প্রদান করে কনের পরিবার। বিয়ে কিছুদিনপর প্রাইভেটকার ক্রয়ের কথা বলের ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেন আবদুল্লাহ। কনের পরিবারের লোকজন অস্বচ্ছল হওয়ায় যৌতুক হিসেবে ৩ লাখ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। টাকা নিয়ে আবদুল্লাহ বিদেশে চলে যায়। বিদেশে যাওয়ার ৬ মাস পর আবদুল্লাহ দেশে থাকা স্ত্রী ও সন্তানের কোন খোঁজ খবর নেয় না এবং ভরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। এদিকে বাড়ীতে থাকা শ্বশুর-শ্বাশুড়ী ও ননদরা গৃহবধুর উপর শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে।
এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর রাতে মালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে একটি সালিশি বৈঠক বসে । এতে গৃহবধুর পক্ষের ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সালিশের একপর্যায়ে সালিশি রায় উপেক্ষা করে ছেলে পক্ষের লোকজন সালিশ বৈঠকে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা গৃহবধূকে মারধর করে এবং গৃহবধূর দুধের শিশুটিকে জোরপূর্বক ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।
 ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বৈঠকে উভয় পক্ষের কথা শুনে জুড়ি বোর্ডের মাধ্যমে দেন মোহরের ৩ লাখ, স্বার্ণালংকার ও আসবাপপত্রের ৩ লাখ, গাড়ী ক্রয়ের জন্য দেয়া ৩ লাখ ও গৃহবধুর ভরনপোষণ ববাদ ১ লাখ, সর্বমোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে গৃহবধুকে তালাকের রায় ঘোষণা হয়।
রায়ের কিছুক্ষণ পর গৃহবধুর শ্বশুর আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে লাঠি ও দা দিয়ে গৃহবধুর উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা গৃহবধুকে পিটিয়ে আহত করে তার শিশু সন্তানটিকে ছিনিয়ে নেয়। এসময় হামলাকারীরা গৃহবধুকে ঘরের ভিতরে একটি রুমে আটকে মারধর করতে থাকে।
সালিশে উপস্থিত লোকজন ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এদিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা গৃহবধুর ১৮ মাসের শিশু সন্তানটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ আহত অবস্থায় গৃহবধুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে পাঠায়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, 'এ ঘটনায় সোমবার থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারে থানা পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।'