সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় নিম্নআদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে চেম্বার জজ আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত এ বিষয়ে লিভ টু আপিল আবেদন করার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে লিভ টু আপিলের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, আপিল বিভাগ চেম্বার জজ আদালতের জামিন স্থগিতাদেশ তিন সপ্তাহের জন্য বহাল রেখেছেন। একই সঙ্গে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে ওই দিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে গত ২৫ মে এ মামলায় সাতজনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন।
হাইকোর্টে জামিন দেওয়ার পর সেই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়।
এর আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার ছাড়া অন্যরা হলেন— গোলাম রসুল, আইনজীবী আব্দুস সামাদ ও জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। বাকিদের (১১ জন) জামিনের বিষয়ে ৩০ মে আদেশ দেওয়া হবে বলে দিন ঠিক করেন আদালত।
২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ধর্ষণের শিকার হন। ওই বছরের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছলে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন।
ওই দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন।