করোনাভাইরাসের উৎস সন্ধানে চীনের উহানে পৌঁছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
একটি বিশেষজ্ঞ দল। উহানে দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর কাজ শুরু
করবেন বিশেষজ্ঞরা। চীন এই বিশেষজ্ঞ দলকে অনুমতি দিতে বেশ গড়িমসি করার পর
অবশেষে বৃহস্পতিবার তারা উহানে পৌঁছালেন। খবর এএফপির।
চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিজিটিন এর ফুটেজে দেখা যায় সিঙ্গাপুর
থেকে বিশেষজ্ঞ দলটি হাজমাট স্যুট (পিপিই) পরিহিত অবস্থায় উহানে পৌঁছে চীনা
কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।
তারা এমন এক সময় চীনে পৌঁছালেন যখন দেশটির দুই কোটিরও বেশি মানুষ
লকডাউনে রয়েছে এবং একটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। গত সাত মাস
ধরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর সম্প্রতি সেখানে আক্রান্তের
সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান পিটার বেন এমবারেক জানান, চীনের অভিবাসন নিয়ম
অনুযায়ী তারা আগে একটি হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তিনি
বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পর আমরা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গের সাক্ষাৎ করব এবং
বিভিন্ন জায়গায় যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিক কী ঘটেছিল তা পুরোপুরি বুঝতে বেশ দীর্ঘ সময় লাগতে
পারে। আমার মনে হয়না প্রাথমিক মিশনেই আমরা পরিষ্কার ধারণা অর্জন করতে পারব,
তবে আমরা কাজে লেগে থাকব।’
‘আমাদের উদ্দেশ্য হল, কী হয়েছিল তা বুঝতে কয়েক মাস আগে যে গবেষণাগুলোর
পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি সেগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া’,
বলেন এমবারেক।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির শুরুর দিকেই বিশেষজ্ঞ দলটির চীনে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেদ্রস আধানম গেব্রেয়েসুস হতাশা প্রকাশ করে তখন
জানান, বেইজিং অনুমতি না দেয়ায় বিশেষজ্ঞ দলটির চীনে পৌঁছাতে দেরি হবে।
গেব্রেয়েসুসের এই বক্তব্যের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়,
‘কোথাও সম্ভবত ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’
এরপর গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিশেষজ্ঞ দলকে উহানে যেতে দিতে প্রস্তুত
বলে জানায় চীন। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপমন্ত্রী জেং ইজিন বলেন,
‘নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা হয়েছে এবং আমরা এখানে প্রস্তুত আছি।’
২০১৯ এর ডিসেম্বরে উহানে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর সারা
বিশ্বে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যায়। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ২০
লাখ মানুষ মারা গেছেন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৯ কোটি ২৭ লাখেরও বেশি মানুষ।