![দেবিদ্বারে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’য় ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন ১০৫টি গৃহহীন পরিবার দেবিদ্বারে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’য় ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন ১০৫টি গৃহহীন পরিবার](http://comillarkagoj.com/2021/01/23/1611407286.jpg)
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গৃহহীন-ভূমিহীন ১০৫টি পরিবার পেতে যা”েছ তাদের ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকাঘর।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার হলরুমে প্রথম দফায় ৩৫টি পরিবারকে ঘরের চাবি, জমির দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র তুলে দেন ¯’ানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সারাদেশে প্রায় ৬৬হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
জানা গেছে, দেবিদ্বারে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ও ৮৫টি ঘরের মধ্যে প্রথম দফায় ৩৫টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে ¯’ানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের নিজস্ব অর্থায়নে ২১টি ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে। যা খুব শিগ্রই বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।
এ উপজেলায় ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সর্বমোট ১০৫টি ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রতিটি ঘর ২শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করা হবে। প্রতিটা ঘর নির্মাণে ব্যয় হবে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে ৯ফুট ৩ইঞ্চি বাই ৯ফুট ৮ইঞ্চি এবং ৯ফুট বাই ৯ফুট ৮ইঞ্চি সাইজের দুটি কক্ষ।
এছাড়াও ৫ফুট বাই ৬ফুট ৫ইঞ্চির একটি কিচেনরুম এবং মাঝখানে ইউটিলিটি আছে ৩ ফুট বাই ৩ ফুটের। ৪ ফুট বাই ৩ ফুটের এটাচ একটি বাতরুম এবং ৫ফুট বাই ১৯ ফুট ৬ইঞ্চির একটি বারান্দা। পর্যাপ্ত আলো বাতাসসহ থাকছে বিনামূল্যে বিদ্যুতের ব্যব¯’া। সূত্রে আরও জানা গেছে, যারা সরকারি ঘর পেয়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রকল্পের পাশ^বর্তী সরকারি পুকুরে মাছ চাষসহ প্রতিটি পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষনের উদ্যোগে নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আনন্দিত রাজিয়া বেগম। তিনি কুমিল্লার কাগজের এ প্রতিবেদককে বলেন, নিজের বেশির ভাগ সময় কেটেছে অন্যের জায়গায়, অন্যের ভিটে। একটি ঘরের স্বপ্ন ছিলো বহু দিনের কিš‘ এখন জমিসহ পাকা ঘর পাবো এটা কখনো ভাবেনি! এ কথা বলেই আনন্দে কেঁদে ফেলেন রাজিয়া। তিনি এ প্রতিবেদকে আরও বলেন, আমার এক ছেলে রয়েছে, এতোদিন লেখা-পড়া করার মতো কোন জায়গা ছিলো না, এখন থেকে নিজের ঘরে বসে পড়ালেখা করতে পারবে। মাথা গুঁজার ঠাঁই হয়েছে ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাবো, ছেলেকে নিয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি।
নতুন ঘর পেয়ে বেশ খুশি রহিমা বেগমও। তিনি বলেন, এতোদিন স্বামী সন্তানদের নিয়ে জরার্জিন-খুপরি ঘরে থাকতাম। আজকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর হায়াত আল্লাহ বাড়িয়ে দিক। ঘর পেয়ে আনন্দিত বুড়ির গ্রামের আবুল হোসেন। তিনি বলেন, আজ থেকে আমার পরিবার নিয়ে স্বপ্নের ঘরে থাকব। এটা ভেবেই আনন্দে আত্মহারা আমি। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন, যে বাংলাদেশে কোন গৃহহীন থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা সে স্বপ্ন পূরণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন। আমরা একটি স্বনির্ভর বাঙালি জাতি হিসেবে বিশে^ পরিচিতি পেয়েছি। এভাবে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্ন ছিলো এদেশে কেউ না খেয়ে থাকবে না, আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পন্ন। প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি স্বপ্ন এদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, তাও আজ বাস্তবায়িত। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই বাংলাদেশ আমাদের উপহার দিবেন। আমরা প্রথম পর্যায়ে ৩৫টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর বিতরণ করেছি। আরও ৫০টি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ইউএনও রাকিব হাসানের সভাপতিত্বে ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ওমানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুজ্জামান মাস্টার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.গোলাম মাওলা, সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবু তাহের, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার, জেলা পরিষদ সদস্য মোসা. শিরিন সুলতানা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাজমা বেগম প্রমুখ।