সোয়া দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ, কারাগারে দুই কর্মচারী
Published : Wednesday, 3 February, 2021 at 12:00 AM
ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে দুই কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই কর্মচারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১ জানুয়ারি) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুই কর্মচারিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন।
এদের একজন হলেন, দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘ক্যাশ সরকার’ পদে কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম (৩৪)। অপরজন জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসের ‘অডিটর’ পদে কর্মরত মো. মাহাফুজার রহমান (৪২)।
মামলার অভিযোগ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আমিরুল ইসলাম হাসপাতালের ক্যাশ সরকার পদে কর্মরত থাকার সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন উত্তোলন সংক্রান্ত কাজে হিসাবরক্ষণ অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর মাহাফুজার রহমানের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। এক পর্যয়ে পরস্পর যোগসাজশে হিসাবরক্ষণ অফিসের অনলাইনের বিল ও অন্যান্য কার্য্যক্রমের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করেন। সেই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ডিজিটাল ডিভাইসে বে-আইনীভাবে প্রবেশ করে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে অর্থ জালিয়াতি করে আসছিলেন।
পরবর্তীতে আমিরুল ইসলাম ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে কর্মরত দেখিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার উপস্থাপন করে বিভিন্ন সময় বিল উত্তোলন করেন। সর্বশেষ হিসাবরক্ষণ অফিস হতে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮০ টাকার ভাউচার সরিয়ে ফেলেন। হিসাবসংরক্ষণ অফিসের নিরীক্ষা বিভাগের কাছে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে জেলা অফিসকে অবহিত করেন।
পরে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাকে ওই অর্থ ছাড় না করতে অবহিত করেন। এদিকে সেই বিল ভাউচার খুঁজে না পাওয়ায় জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সন্দেহের সৃষ্টি হয়। হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেখেন গত ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি হতে ৩১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে জাল বিল ভাউচার প্রস্তুত করে সরকারি কোষাগার থেকে দুই কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৮ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পরিচয় গোপন ও প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, সন্দেহের সৃষ্টি হলে প্রাথমিক তদন্তে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকার অসঙ্গতি পাওয়া যায়। ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগীয় তদন্ত চলছে।