প্রেমের বিয়ে, শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে পালালেন বর
Published : Thursday, 4 March, 2021 at 12:00 AM
১০ বছর প্রেমের সম্পর্ক করেও সালিশ বৈঠকে কাবিননামার (রেজিস্ট্রি) মাধ্যমে বিয়ের পর শহরের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথেই বউকে রেখে পালিয়েছে প্রতারক বর। মঙ্গলবার (২ মার্চ) রাতে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি পর থেকেই এলাকাজুড়েই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জাহিদ হাসান শোভন নামের ওই বরের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা (সরোবরোপাড়) এলাকায়। স্থানীয় মিল-চাতাল ব্যবসায়ী রেজাউনুল হক লিটনের ছেলে শোভন ঢাকার একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নলডাঙ্গা চালক সমিতির কার্যালয়ে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। এরপর নলডাঙ্গা থেকে গাইবান্ধা শহরের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে সাদুল্লাপুরের কালিবাড়ি মন্দিরের পাশে রাস্তায় অটোরিকশা থেকে নেমে কৌশলে পালিয়ে যায় জাহিদ হাসান শোভন।
ঘটনার পর থেকেই মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায় বর শোভনের। পরে নিরূপায় হয়ে প্রতিকার চেয়ে রাত ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নববধূ। তার বাড়ি সদর উপজেলা শহরের মহুরিপাড়া (গোবিন্দপুর) গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিয়ের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে প্রেমিক জাহিদ হাসান শোভন ও তার বাড়ির খোঁজে নলডাঙ্গায় অবস্থান নেয় ওই তরুণী। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি শোভনসহ তার পরিবারকে জানায়। বাবার সম্মতি না পেলেও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ইতিকে বিয়ে করতে রাজি হয় শোভন। পরে বিকালে নলডাঙ্গার চালক সমিতির কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে তিন লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণে রেজিস্ট্রি এবং স্থানীয় মৌলভী দ্বারা তাদের বিয়ে হয়। এরপর রাতেই বউকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়ি গাইবান্ধা শহরে যাওয়ার কথা জানালে তাদের একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় তুলে দেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, গত ১০ বছর ধরে শোভনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। কিছুদিন ধরে শোভন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, এমনকী তার সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে। বিয়ের দাবিতে তার বাড়ির এলাকায় গেলে পরিবারসহ স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে শোভন আমাকে বিয়ে করে। এরপর বাড়ি যাওয়ার পথে সাদুল্লাপুরে পৌঁছে প্রস্রাবের কথা বলে শোভন আমাকে রেখে পালিয়ে যায়। প্রেমের অভিনয় আর বিয়ের পর শোভন এমন প্রতারণা করবে তা বুঝতে পারিনি আমি।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পালিয়ে যাওয়া বর শোভনের অবস্থান চিহ্নিতসহ তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।