বিজেপিতে যোগ দিয়ে ব্রিগেড সভায় মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘কারও দিকে আঙুল তুলতে চাই না। কাউকে দোষও দিচ্ছি না। আমারই সিদ্ধান্তে ভুল ছিল।’
রোববার (৭ মার্চ) ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে তিনি এ কথা বলেন। মিঠুন বক্তব্য দেয়ার সময় কোনো দলের নাম উল্লেখ করেননি। তিনি তার আগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে জানান। আগের সিদ্ধান্ত অর্থাৎ তৃণমূলে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা বুঝিয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এমনটি জানা যায়।
প্রসঙ্গত, ব্রিগেড সভার পরে মঞ্চের পেছনে মিঠুনের সঙ্গে আলাদা অন্তত ১৫ মিনিট কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মিঠুনের কথায়, ‘ওনার সঙ্গে আমার খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। সব কথা তো প্রকাশ্যে বলা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলায় বিজেপি যথেষ্ট জায়গা তৈরি করেছে। বাংলার মানুষ বিশ্বাস করছে, ওরা রাজ্যের জন্য ভালো কিছু করবে। তারা ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেটা কখনো মিথ্যা হতে পারে না। তার মধ্যে কিছু সততা থাকে।’
মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, তিনি ‘রাজনীতি’ নয়, ‘মানবনীতি’ বোঝেন। রাজনীতির জন্য সবারই একটা পতাকার প্রয়োজন হয়। প্রধানমন্ত্রী আমায় ডেকে যখন কথা বললেন, আমি বললাম, আমি বাংলার জন্য কাজ করতে চাই। আমি বাংলাকে ভালোবাসি।
একদা অতি বামপন্থী ছিলেন মিঠুন। তিনি প্রয়াত সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হলেও কখনো সিপিএমে যোগ দেননি। তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সদস্যও হয়েছিলেন। মাঝপথে অসমাপ্ত রেখেই তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেন কয়েক বছর আগে। সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে ব্যথিত হয়েছিলেন এই সুপারস্টার। তারপর থেকে তাকে তেমনভাবে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
হঠাৎ বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। যোগদানের পর মিঠুনকে যথেষ্ট অভিভূত এবং আপ্লুত দেখিয়েছে। তা গোপন করারও কোনো চেষ্টা করেননি তিনি।
তবে দলবদল প্রসঙ্গে মিঠুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ভাবনাটা একই আছে। দলের নামটা শুধু বদলেছে। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি। সেই আদর্শ থেকেই বামপন্থী রাজনীতিতে জড়িয়েছিলাম। এখনো তাই করতে চাই। আমি মনে করি, ভাবনা যদি ঠিক থাকে, তবে বাকি কাজও ঠিকই হবে। ম্যায় হুঁ অ্যায়সা আদমি।’
বস্তুত রোববার ব্রিগেডে মোদি যখন তাকে ‘বাংলার ছেলে’ বলে বর্ণনা করে তার পুরোনো কথা বলছিলেন, তখন ক্যামেরা বারবার মিঠুনকে দেখাচ্ছিল। পরে মিঠুন বলেন, ‘এতদিনে মনে হচ্ছে, আমার স্বপ্ন সত্যি হলো। গরিবদের জন্য কাজ করা আমার বরাবরের স্বপ্ন। এতদিনে সেই স্বপ্নপূরণ হতে দেখছি আমি।’ তার বিজেপিতে যোগ দেয়া নিয়ে অন্যান্য মহলের অনেকে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন।