সংযুক্ত আরব আমিরাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় দুবাই সরকারের কাছ থেকে ‘ফ্রন্টলাইন হিরো’ স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ।
তার নাম মোশাররফ শহীদ (৩৮), বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির পেস্ট কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মী।
ব্যক্তিগত ত্যাগের বিনিময়ে দুবাইয়ে নাগরিক সুরক্ষায় কাজ করার জন্য শহীদের ভূমিকাকে আমিরাত সরকার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে জানিয়ে দেশটির শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকা ‘গালফ নিউজ’ ও ‘দ্য ন্যাশনাল’ শহীদকে নিয়ে তাদের কাভার স্টোরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে দুবাই মিউনিসিপ্যালিটির এমার্জেন্সি পেস্ট কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টে কাজ করছেন শহীদ। অ্যারাবিয়ান গালফ উপকূলের এ দেশটিতে যখন করোনাভাইরাস এসে হানা দিল তখন তাকে আত্মসুরক্ষা এবং জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মিশ্রণ ও ব্যবহারের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত বছর ২৪ এপ্রিল দুবাইর জুমেইরাহ রোডে যখন স্টেরিলাইজেশানের কাজে ১৬ ঘণ্টার শিফট করছিলেন শহীদ তখন বাংলাদেশে তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠে।
স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে শহীদ বলেন, “মাস্ক, গ্লাভস, ফেইস শিল্ড, প্রটেক্টিভ স্যুটে সজ্জিত হয়ে কারফিউ চলাকালে কখনও হেভি ভেহিকলে, কখনো বাইকে, কখনো ড্রোনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করতে হতো আমাদেরকে। কাজগুলো সহজ ছিল না। কিন্তু আমি দিনের পর দিন রাতের পর রাত কাজ করে যেতাম, বুঝতে পারতাম এটা কত জরুরি।
“অন্যদিকে আমার পরিবার-পরিজন উৎকণ্ঠায় থাকত আমি আবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হই কিনা! ৭ ভাই ২ বোনের বড় পরিবার আমাদের। সবাই আমার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আমি জানি আমার দায়িত্ব কত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে। আমি স্বপ্নে দেখি আমার শিশুকন্যাকে একদিন বুকে জড়িয়ে ধরবো, সে দিনটির স্বপ্নে আমার সময় কাটে।”
শহীদ আরও বলেন, “আমি মার্চ থেকে দুবাইকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মুক্তির টাস্ক ফোর্সে একজন ফ্রন্টলাইনার হিসেবে কাজ করছিলাম। সেদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে পুরো সময় অনাগত কন্যা ও স্ত্রীর জন্য দোয়া করছিলাম, উৎকণ্ঠায় কেটেছে পুরোটা দিন। রাতে ডরমেটরিতে ফিরে গিয়ে যখন জানতে পারলাম স্ত্রী ও কন্যা সুস্থ আছে কেবল তখনই একটু স্বস্তি পেলাম।”