Published : Tuesday, 4 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 04.05.2021 12:41:08 AM
মীম
আক্তার। খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারখালী গ্রামের মনির মিয়া ও হেনা
বেগম দম্পতির সন্তান। বয়স ৯ বছর। মা, বাবা আর তিন বোন মিলে ছিলো তাদের
সংসার।
শনিবার (১ মে) দিবাগত রাতে খুলনায় মীমের দাদি মারা যায়। সেই খবর
পেয়ে পরিবারের সবাই খুলনায় যাচ্ছিলেন ঢাকা থেকে। কিন্তু পদ্মা নদীতে
দুর্ঘটনায় দাদির লাশ দাফনের আগে পরিবারের সবাইকে হারালো মীম। এই দুর্ঘটনায়
নিহত হয়েছে মীমের বাবা মনির মিয়া (৩৮), মা হেনা বেগম (৩৬), বোন সুমী আক্তার
(৫) ও রুমি আক্তার (৩)। বেঁচে গেছে শুধু মীম।
সোমবার (৩ মে) ভোররাতে
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার পুরনো ঘাটে পদ্মা নদীতে
বালুবোঝাই বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে স্পিডবোট ডুবে তিন শিশু ও দুই
নারীসহ ২৬ জন নিহত হয়।
কাঁঠালবাড়ীর হাজী ইয়াসিন মোল্লাকান্দি দোতার
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে লাশ এনে রাখা হয়। সেখানে স্বজনদের
আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
দুর্ঘটনায় স্পিডবোট দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ
সময় ছিটকে নদীর তীরে বালুর মধ্যে পড়ে মীম। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। দুপুর ৩টার দিকে তাকে নিয়ে
আসা হয় বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে। সেখানে রাখা ছিলো দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ।
মীম বাবা, মা ও দুই বোনের মরদেহ শনাক্ত করে। তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে মীম।
মীমের কান্না দেখে অনেকে অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি।
মীম বলে, ‘দাদির লাশ দেখতে খুলনা যাচ্ছিলাম বাবা-মার সঙ্গে। দাদির লাশ দাফনের আগে সবাই মারা গেলো। আমি এখন কার কাছে থাকবো?’