বহু আলোচনার পরও ইসরাইল এবং হামাসের লড়াইয়ে যুদ্ধবিরতির বিবৃতি ঘোষণা করতে পারল না জাতিসংঘ।
ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, মঙ্গলবার জাতিসংঘে এ নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
খবরে বলা হয়, জাতিসংঘে এ দিনের বৈঠকে ১৫ দেশ আলোচনায় বসেছিল। এর মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ দেশ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিবৃতি প্রকাশ করতে গেলে ৯ দেশকে পক্ষে ভোট দিতে হয়। স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর কেউ ভেটো দিলে বিবৃতি প্রকাশ করা যায় না।
মঙ্গলবারের বৈঠকে বিবৃতির বিরুদ্ধে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তা প্রকাশ করা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক বিপরীত অবস্থান নিয়েছিল ফ্রান্স। যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান নেয় দেশটি। একই সঙ্গে মিসরকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যবহারের কথা বলা হয়। কিন্তু বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া যায়নি।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবশ্য দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পক্ষে ব্লকের ২৭টি দেশের বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র পলিসির প্রধান জোসেফ বরেল জানিয়েছেন, হাঙ্গেরি ওই প্রস্তাবে সই করতে রাজি হয়নি।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং জর্ডনের রাজা দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ঘটনার রাজনৈতিক সমাধানের রাস্তা খোঁজা উচিত বলে মত প্রকাশ করেছেন।
সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রশাসনের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনার কথা বলেছিলেন বাইডেন। কিন্তু মঙ্গলবার প্রকাশ্য বিবৃতিতে আপত্তি জানায় দেশটি।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্ট দাবি করছে, হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে আপত্তি নেই। কিন্তু যুদ্ধবিরতির যে শর্ত ইসরাইল চাপাতে চাইছে, তাতে তাদের আপত্তি আছে।
অন্যদিকে বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে গাজায় হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ’ইসরাইলে শান্তি ফেরাতে’ যতদিন প্রয়োজন ততদিন হামলা চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইলের সব নাগরিকের জন্য শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। গাজায় ইসরাইলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ২২০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে ৬৩ জন। অন্যদিকে ইসরাইলে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন।