করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা প্রতিদিনই কয়েক হাজার করে কমতে থাকায় সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, সোমবার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় সেখানে এক লাখ ছয় হাজার ৬৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আর একই সময় মৃত্যু হয়েছে ২৪২৭ জনের।
আগের দিনের চেয়ে এদিন নতুন রোগীর সংখ্যা ১২ শতাংশ কমেছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৮৯ লাখ নয় হাজার ৯৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে আছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে থাকা দেশটিতে মোট তিন লাখ ৪৯ হাজার ১৮৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ভারতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা, যাকে পজিটিভিটির হার বলা হয়, এখন ছয় দশমিক ৩৩ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশটিতে টানা ১৪ দিন ধরে পজিটিভির হার ১০ শতাংশের নিচে আছে।
বিভিন্ন সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এআইআইএমএস) সোমবার থেকে শিশুদের ওপর কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করবে। ভারতে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ শুরু হলে শিশুরা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হতে পারে, বিশেষজ্ঞরা এমন উদ্বেগ জানানোর পর এই ট্রায়ালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভারতে টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় এ পর্যন্ত ২৩ কোটিরও বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এখন দেশটির এ কর্মসূচীতে যে দুটি কোম্পানির টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে সেগুলোর ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সংক্রমণ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও উত্তর প্রদেশের করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। অপরদিকে হরিয়ানা ও সিকিম তাদের করোনাভাইরাসজনিত লকডাউন ১৪ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা করেছে।
তামিলনাডু, কর্নাটক, হিমাচল প্রদেশ ও গোয়া এর আগেই তাদের ‘করোনাভাইরাস কারফিউ’ কিছুটা শিথিল করে ১৪ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে।
ভারতে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর এক কোটি ছাড়িয়েছিল, এরপর মাত্র সাড়ে চার মাসের মধ্যে ৪ মে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যায়; আর এখন ৭ জুন দেশটিতে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা তিন কোটির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
তারপরও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশটিতে প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি।