বৃষ্টিতে একদিন ভেসে যাওয়ায় লর্ডস টেস্ট ড্র হওয়ার সম্ভাবনাটাই ছিল বেশি। তবু প্রথম ইনিংসে বড় লিড পাওয়া নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস তড়িঘড়ি ছেড়ে দিয়ে শেষ দিনে রোমাঞ্চের ডাক দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ইংল্যান্ড সাড়া দিল না সেই আহবানে। চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় টিম সাউদি, নিল ওয়্যাগনারদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে ইংলিশরা বেছে নিল নিরাপদ পথ। ব্যাট-বলের লড়াই তাই জমল না খুব একটা। ডম সিবলি, জোর রুটদের দৃঢ়তায় ম্যাড়মেড়ে ড্রয়ে শেষ হলো লর্ডস টেস্ট।
তবে এই ড্রয়ে খুশি হয়েছে ভারত। এই টেস্টে কোনও একটি দল জিতলে স্বস্তি বা অস্বস্তিতে পড়তে পারত বিরাট কোহলির দল। কারণ ১৮ জুন থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কোহলিরা মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের। এই টেস্টে কিউইরা জিতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত। আর হেরে গেলে স্বস্তিতে থাকত ভারতীয় দল।
রবিবার (০৬ জুন) লর্ডস টেস্টে নির্ধারিত সময়ের ৫ ওভার আগেই ড্র মেনে নেয় দু'দল। কিউইদের দেওয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্যে ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ১৭০ তোলার পর শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি শেষেও তাই থাকল সমতা।
২০৭ বলে ৬০ রান করে ম্যাচ বাঁচানো ফিফটিতে অপরাজিত ছিলেন ওপেনার সিবলি। জো রুট করেন ৭১ বলে ৪০। ওলি পোপ ৪১ বলে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আগের দিনের ২ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে নেমে নাইটওয়াচম্যান নিল ওয়েগনারকে শুরুতে হারায় সফরকারীরা। দ্রুত রান তোলার লক্ষ্যে খেলা নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা এরপর খেলেছেন ছোট ছোট কয়েকটি ইনিংস। টম ল্যাথাম আগের দিনের ৩০ রানের সঙ্গে আর ৬ রান যোগ করতে পেরেছেন। কিন্তু তাকে এক পাশে রেখে রস টেইলর রান এনেছেন ওয়ানডে স্টাইলে।
শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৬৯ রান করে ইনিংস ছেড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানের লিডের সঙ্গে যোগ করে ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। দিনের তখনো বাকি প্রায় ৭৫ ওভার। সামান্য ঝুঁকি থাকলেও জেতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে ইনিংস ঘোষণার বিকল্প ছিল না কেন উইলিয়ামসনদের।
তবে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ার দিকে পা বাড়িয়ে বিপদ আনতে চায়নি ইংলিশরা। ম্যাচ বাঁচানোতেই মন দেয় তারা। দুই ওপেনার টিকে থাকেন ২৩ ওভারের বেশি। রান আসে কেবল ৪৯ । আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ররি বার্নস ৮১ বলে ২৫ রান করে ওয়েগনারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
এরপর জ্যাক ক্রলিকে দ্রুত তুলে নিয়েছিলেন টিম সাউদি। কিন্তু অধিনায়ক রুটের সঙ্গে ৮০ রানের জুটিতে বিপদ বাড়তি দেননি সিবলি। ৪০ করে রুট ফিরলেও পোপকে নিয়ে বাকি ২৫ ওভার কাটিয়ে দেন সিবলি। এই ২৫ ওভারে টিকে থাকার দিকেই মন ছিল তাদের, রান আসে তাই কেবল ৩৪।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৩৭৮
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ২৭৫
নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: ৫২.৩ ওভারে ১৬৯/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (ল্যাথাম ৩৬, কনওয়ে ২৩, উইলিয়ামসন ১, ওয়েগনার ১০, টেইলর ৩৩, নিকোলস ২৩ ওয়েটলিং ১৫*, গ্র্যান্ডহোম ৯* ; অ্যান্ডারসন ০/৪৪, ব্রড ১/৩৪, রবিনসন ৩/২৬, উড ০/৩১, রুট ১/১৬)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৩):( বার্নস ২৫, সিবলি ৬০*, ক্রলি ২, রুট ৪০, পোপ ২০* ; সাউদি ১/৩৭, জেমিসন ০/২৮, গ্র্যান্ডহোম ০/১২, স্যান্টনার ০/৩৮, ওয়েগনার ২/২৭, উইলিয়ামসন ০/১০)