ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ভুয়া টিকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড়
Published : Saturday, 26 June, 2021 at 8:04 PM
ভুয়া টিকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড় করোনার ভুয়া টিকা দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভুয়া টিকাকাণ্ডে তদন্ত চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে টিকা নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে শুভেন্দু জানিয়েছেন, ‘ভোটার স্লিপের মতো টিকার কুপন দেওয়া হচ্ছে শাসকদলের তরফে। শুধু তাই নয়, যেখানে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য টিকাকরণে প্রতিদিন রেকর্ড করছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের অনীহায় এই কর্মসূচি অনেক পিছিয়ে পড়ছে।’

সম্প্রতি কলকাতার কসবায় ভুয়া টিকা শিবিরকাণ্ডে গ্রেফতার হন দেবাঞ্জন দেব, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। কসবার সেই শিবিরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শুভেন্দু চিঠিতে লিখেছেন, ‘ওই টিকা শিবির থেকে যারা আধার কার্ড দেখিয়ে টিকা নিয়েছেন, তারা কেউই টিকার শংসাপত্র পাননি। শুধু কসবা-ই নয়, এ ধরনের শিবির চালানো হয়েছিল আমহার্স্ট স্ট্রিট, সোনারপুরেও। যেখানে কয়েকশো মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আর এসবই হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের নজরদারিতে।’

এদিকে কসবার ভুয়া টিকাকাণ্ডে তৃণমূলের নেতারা জড়িত বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার শিলিগুড়িতে তিনি বলেন, ‘এখন পিঠ বাঁচাতেই দেবাঞ্জন দেবকে চিনতে পারছেন না কেউ।’
টিকাকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জনের সঙ্গে তৃণমূলের অনেক নেতার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অভিযোগ করে দিলীপ বলেন, ‘এমন ঘটনা আরও বড় আকারে চলছে রাজ্যজুড়ে। এখনও তাদের কেউ ধরা পড়েনি। শিলিগুড়িতে পুরনিগম টাকা নিচ্ছে বলে শুনেছি। ৩৫০ টাকা করে ভ্যাকসিন বিক্রি করা হচ্ছে। কলকাতায় টিকাকাণ্ডে ধৃতকে সরকার নিরাপত্তা দিয়েছে। সকলে চিনতেন। ফটোও আছে। ধরা পড়ে গেলে একটা তদন্ত কনিশন গড়ে দায় সারা হচ্ছে। নেতারা বলছেন, চিনি না। কিন্তু ছবিতে দেখা যাচ্ছে নেতারা ওর (দেবাঞ্জন) থেকেই ফুল নিচ্ছেন। রাজ্য সিবিআই তদন্ত চাইছে না। কারণ তারা জড়িত।’

অপরদিকে কসবার শিবির থেকে করোনার ভুয়া টিকা নিয়ে টিকাপ্রাপ্তদের শরীরে কী প্রভাব পড়েছে, তা খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। কমিটির সদস্যরা টিকাপ্রাপ্তদের শরীরে কী প্রভাব পড়েছে, তা খতিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি, এই ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে যাতে না তৈরি হয়, তার জন্য কী কী নিয়ম মেনে চলা দরকার তারও একটি বিধি তৈরি করবেন। এই দলে রয়েছে চিকিৎসক শান্তনু ত্রিপাঠী, জ্যোতির্ময় পাল, সৌমিত্র ঘোষ ও জেকে ঢালি। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কমিটি যত দ্রুত সম্ভব তার রিপোর্ট জমা দেবে। পাশাপাশি, টিকাপ্রাপ্তদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার ব্যবস্থাও করবে রাজ্য সরকার।

স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কসবার ওই বেআইনি শিবির থেকে টিকা নেওয়া প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। কসবা নিউমার্কেট এলাকায় শনিবার একটি শিবির করে তাদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। ভুয়া টিকা নেওয়ার ফলে শরীরে কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তা নথিভুক্ত করবেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। তারপর একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ভবন আলাদা করে ২ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করেছে। এই কমিটির সদস্যরা খতিয়ে দেখবেন, করোনা টিকার বদলে ঠিক কী দেওয়া হয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়া দেখভাল করার পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে কী করা যায়, সে বিষয়ে বিধি তৈরি করবে রাজ্য সরকারের ৪ সদস্যের কমিটি।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা