ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
যাত্রী উঠলেই হাতে দেওয়া হয় প্রেসক্রিপশন
প্রাইভেটকারে প্রতিদিন আয় ২৫ হাজার!
Published : Friday, 30 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 30.07.2021 12:10:03 AM
প্রাইভেটকারে প্রতিদিন আয় ২৫ হাজার!রণবীর ঘোষ কিংকর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌঁনে ২টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনে দাঁড়িয়ে ঢাকাগামী যাত্রী উঠাচ্ছিলেন এক প্রাইভেটকার চালক। সংবাদকর্মীদের ক্যামেরা দেখে যাত্রী উঠানো বন্ধ করে দ্রুত স্থান ত্যাগের চেষ্টা তার। সংবাদকর্মীরা তার গাড়ির সামনে থাকায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
গাড়িতে তখন এক নারীসহ তিন যাত্রী। হাতে একটি এক্স-রে রিপোর্ট ফাইল। তারা কোথায় যাবেন, কোন জায়াগা থেকে উঠেছে? প্রশ্নে তিনি জানান- ‘ওই (মহিলা যাত্রী) আমার স্ত্রী, আর তারা ২জন (পুরুষ যাত্রী) আমার ভাই’। বলতেই ক্ষেপে উঠেন ওই নারী। ‘এই ড্রাইভার, কি যা-তা বলছেন’।
ওই নারী যাত্রী জানান- ‘না ভাই, আমি আমার ভাইকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। ক্যান্টনমেন্ট থেকে ১ হাজার টাকা করে ২ হাজার টাকা ভাড়ায় তার গাড়িতে উঠেছি’। আর সামনের জন (চালকের সাথে বসা যাত্রী) এখান থেকে উঠেছেন।
ওই নারীর তথ্যের পর মুখে খুলেন চালক মিজানুর রহমান। তিনি জানান- ‘ভাই, লকডাউন। কোন রিজার্ভ ভাড়া নাই। আমার সাথের কয়েকজন ড্রাইভার গাড়ির সামনে স্টিকার লাগাইয়া ভাড়া টানে। তাদের দেইখা আমিও নামছি। সোমবার প্রথম দিনই যাত্রাবাড়ি থেইক্কা ৩ যাত্রী ৬ হাজার টাকায় ফেনী রিজার্ভ ভাড়া পাইছি। ওই দিনই কুমিল্লাসহ ঢাকায় কয়েকটা টিম মাইরা ২৬ হাজার টাকা পাই। গ্যাস ও মালিক খরচ দিয়া আমার ১৫ হাজার থাকে। তারপর থেইক্কা প্রতিদিনই এই রোডে গাড়ি চালাই।
পুলিশ আটক করে না? এমন প্রশ্নে তিনি জানান- ‘গাড়িতে একটি এক্স-রে কাগজ ও প্রেসক্রিপসন রাখছি। যাত্রীরা উঠলেই তাদের হাতে ধরাইয়া দেই। পুলিশ ধরলে যাত্রীরা রোগীর কথা বলেন, তখন পুলিশও ছাইড়া দেন’!
জানা যায়- সরকার ‘লকডাউন’ ঘোষণা করলেই যেন আকাশের চাঁদ হাতে পান মিজানুর রহমান এর মত প্রাইভেট পরিবহনের অনেক চালক।
‘কঠোর লকডাউনে’ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকারই তখন হয়ে উঠে গণপরিবহন। করোনা সংক্রামণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ উপেক্ষা করে  যাত্রী পারাপারে ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। প্রাইভেটকারে যাত্রী নিয়ে ঢাকা-ফেনী-কুমিল্লা রুটে যাতায়াত করে প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করেন ওই চালকরা! যা স্বাভাবিক সময়ে এক সপ্তাহেও আয় করা কঠিন।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আনিছুর রহমান জানান- এমন তথ্য আমাদের জানা ছিল না। এখন থেকে আমরা রোগীর কাগজপত্রও খতিয়ে দেখবো এবং প্রাইভেট পরিবহন বা এ্যাম্বুলেন্সের  উপর নজর বাড়াবো।