বাংলাদেশের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ার
স্বপ্ন দেখছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে সেই দলটিই নাকানি-চুবানি খেলো
পুরোপুরি। বাংলাদেশের ১৮২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনোভাবেই ব্যাট হাতে
মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। তাদের ৮৪ রানে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত
করেছে বাংলাদেশ। পিএনজিকে গুটিয়ে দিয়েছে ৯৭ রানে।
অথচ পাওয়ার
প্লেতে ১৪ রানে ৪ উইকেট তুলে তাদের চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২৯ রানে পতন
হয় সপ্তম উইকেটের। পরিস্থিতি এমন ছিল যে তাদের অল্পতেই রুখে দেওয়ার সুযোগ
ছিল। কিন্তু বোলিংয়ের শুরুর ছন্দটা বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারেনি। সেই সুযোগে
কিপলিন ডরিগার দায়িত্বশীল ব্যাটিং হারের ব্যবধান কমায় মাত্র।
পিএনজির
শুরুর আঘাতটা হানেন সাইফউদ্দিন। তৃতীয় ওভারে তুলে নেন ওপেনার সিয়াকার
উইকেট। ফ্লিক করতে গিয়ে লেগ বিফোরে এই ওপেনার বিদায় নেন ৫ রানে। এক ওভার
বিরতি দিয়ে হানা দেন পেসার তাসকিনও! অধিনায়ক আসাদ ভালাকে ৬ রানে
গ্লাভসবন্দি করান তিনি। নুরুল হাসানের ক্যাচ নেওয়ার ভঙ্গিটাও ছিল দর্শনীয়।
ব্যাট
হাতে আলো ছড়ানো সাকিব তাসকিনের পরের ওভারেই বল তুলে নেন। এসে সাজঘরে পাঠান
চার্লস আমিনিকে। লং অনে তার দুর্দান্ত ক্যাচটি নিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম। দুই
বল পর নতুন নামা সিমোন আতাইকেও সাকিব বিদায় দেন রানের খাতা খোলার আগেই।
ব্যাটিংয়ে
কেঁপে ওঠা পিএনজির রক্ষাকর্তা পাওয়া যায়নি এরপর। সাকিবের বলে সেসে বাউ ৭
রানে ফিরলে স্কোর দাঁড়ায় ২৪ রানে ৫ উইকেট। আগের ম্যাচে ত্রাস ছড়ানো নরমান
ভানুয়া আজ হাতই খুলতে পারেননি। শূন্য রানে তাকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন অফস্পিনার
মেহেদী। সাকিব তার পর হিরি হিরিকে বিদায় দিয়ে তুলে নেন চতুর্থ উইকেট।
তার
পর অবশ্য কিপলিন ডরিগার সঙ্গে জুটি করে কিছুটা ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা
করেছেন চ্যাড সপার। তবে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি। তাকে বোল্ড করেছেন
সাইফউদ্দিন। মরেয়া ৩ রানে ফিরলে ডরিগা একপ্রান্ত আগলে সান্ত্বনা পুরস্কারের
খোঁজে ছিলেন। সেটা পেয়েছেনও। ৩৪ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে হারের ব্যবধান
কমিয়েছেন। তার ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়। তার প্রতিরোধে পিএনজিকে অলআউট
করতে পারা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রাভুকে নুরুল হাসানের
ক্যাচ বানিয়ে পিএনজিকে ১৯.৩ ওভারে গুটিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন তাসকিন।
৪
ওভারে ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন সাকিব। ব্যাট হাতেও ৪৬ রান করায় ম্যাচসেরা
তিনি। এছাড়া ১২ রানে দুটি নিয়েছেন তাসকিন। সাইফউদ্দিন ২টি নিলেও রান
দিয়েছেন ২১। ২০ রানে একটি নেন মেহেদী।
এর আগে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে
সুপার টুয়েলভ নিশ্চিতের ম্যাচে আলো ঝলমলে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে
বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তো বটেই,
প্রতিযোগিতারই সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছে।
বৃহস্পতিবার ওমানের আল আমিরাত
স্টেডিয়ামে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে টস জিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে
১৮১ রান করে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি (২৮ বলে ৫০), সাকিব
আল হাসানের কার্যকর ইনিংস (৩৭ বলে ৪৬) এবং আফিফ হোসেন (১৪ বলে ২১) ও
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের (৬ বলে ১৯*) ছোট ঝড়ে বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে
লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তবে সুবিধা করতে পারেননি নাঈম শেখ (০), মুশফিকুর
রহিম (৫) ও নুরুল হাসান সোহান (০)। ২৩ বলে ২৯ রান করেছেন লিটন দাস।
পিএনজির তিন বোলার কাবুয়া মোরেয়া, দামিয়েন রাভু ও আসাদ ভালা নেন দুটি করে উইকেট।