শান্তিরঞ্জন ভৌমিক ||
ষষ্ঠ অধ্যায়
কবিগুরুর শান্তিনিকেতন : চোখে দেখা, মনে রাখা, হৃদয়ে ধারণ এবং অনাবিল পরিতৃপ্তি যাপন।
শান্তিনিকেতনে গিয়ে পৌছলাম ৩১ অক্টোবর ২০০৮। কলকাতা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টার ট্রেনের রাস্তা। বোলপুর রেলস্টেশনে নামার পর রাস্তায় বের হলেই শান্তিনিকেতনের যাবার রাস্তায় একটি সুন্দর তোরণ, তাতে রবীন্দ্রনাথের আশ্রম-বালকদের জন্য লিখিত গানটির প্রথম কয়েকটি পংক্তি
‘আমাদের শান্তিনিকেতন
আমাদের সব হতে আপন
তার আকাশভরা কোলে,
মোদের দোলে হৃদয় দোলে,
মোরা বারে বারে দেখি তারে নিত্যই নূতন।’
মনে হলো আমরা যারা শান্তিনিকেতন ভ্রমণে যাচ্ছি তারা যেন এ গানটি গেয়ে গেয়ে প্রবেশ করি। তবে উল্লেখ্য, এ তোরণ থেকে প্রায় দুই বা আড়াই কি.মি. দূরে শান্তিনিকেতন। রিক্সা চড়ে যেতে হয়। রাস্তার দু'পাশে বিপণি, বাণিজ্যিক ব্যাংক, হোটেল ও অন্যান্য স্থাপনা। মিনি শহর। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নামকরণ রবীন্দ্র-ছোঁয়া।
আমার স্নেহভাজন পুত্রপ্রতিম ছাত্র উত্তম রায়, বিশ্বভারতীতে পিএইচ.ডি করছে, তার সহযোগিতায় ও সঙ্গদানে তার আস্তানা গুরুপল্লীতে গিয়ে পৌঁছি। উল্লেখ্য, বীরভূম জেলার দক্ষিণ সীমান্তের শহর বোলপুর। দেড়শ বছর আগে ছিল সুপুর পরগণার অধীন। ছোট্ট গ্রাম, বর্তমানে তা এখন আন্তর্জাতিক শহর। এই বীরভূমের শিকড়-নিষ্ঠ কথাশিল্পী হলেন তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁর রচনায় বীরভূমের মাটি ও মানুষের কথা রয়েছে ঘনিষ্ঠভাবে, আন্তরিকতায়।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এ অঞ্চলে যাবার আগে বোলপুরের যে অঞ্চলটি ‘কালিকাপুর’ নামে পরিচিত, মূল গ্রামটির অবস্থান ছিল ঐ স্থানে। তখন রেল-লাইন ছিল না, পাকা রাস্তা ছিল না, বাংলাদেশের আর দশটি গ্রামের মতোই একটি গ্রাম। চারদিকে ধান-জমি, পুকুর, গাছপালার জঙ্গল, মাঝে লাল কাঁকরের রুক্ষ খোয়াই, আর দূরে দূরে গ্রামমুলুক, সিয়ান, ডিহিপাড়া, খোসকদমপুর, পারুলডাঙা, গোয়ালপাড়া, বল্লভপুর, বাঁধগোড়া, সুরুল, সুপুর, রায়পুর।
বর্তমানে রোলপুর রেলস্টেশনে পৌছলেই রিক্সা-মোটরগাড়ি ইত্যাদি যানবাহনের সহজলভ্যতা রয়েছে। অথচ ১৯৪৬/৪৭ সালেও গরুগাড়ী যা উচ্চবিত্ত মানুষেরা ভাড়া করে গন্তব্য স্থানে যাতায়াত করতেন। আর বাকী সকলে পায়ে হেঁটেই আসা-যাওয়া করতো। তখন বিশ্বভারতীর গাড়ী ছিল। জানা যায়- এই রাস্তা ধরেই দেবেন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ পাল্কী চড়ে এসেছিলেন। সে সময় ঘর-বাড়ি ছিল না, হাই স্কুলের পর থেকে কেবল আম, জাম, শাল, মহুয়া গাছের জঙ্গল। মাঝে মধ্যে প্রাচীন এক একটা বটগাছ। দক্ষিণ দিকের গ্রাম সুরুল। গ্রাম শেষ হলেও আবার জঙ্গল, না হয় খোয়াই। ‘চিপকুঠি’র পর বল্লভপুর, কোপাই নদী। বলে রাখছি,-কোপাই নদী ততটা গভীর নয়। তার উপর একটি পাকা সেতু আছে। বর্ষাকালে ভীষণ মূর্তি ধারণ করে। এ নদীর পাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশটা মনোরম। শুনেছি, এখানে সিনেমার শোটিং হয়। প্রমথনাথ বিশী লিখেছেন-
‘কোপাই বিশেষভাবে বীরভূমের নদী, বীরভূমের মধ্যেই তাহার জীবনের আদ্যন্ত; এই জেলার পশ্চিমপ্রান্তে তাহার জন্ম এবং এই জেলার পূর্বপ্রান্তে বক্রেশ্বরের নদীতে তাহার লীলাশেষ; অজয়ের সঙ্গে প্রায় সমান্তরালভাবে কোপাই প্রবাহিত; ইহার উৎসমূলে কোনো পাহাড় বা নদী নাই, সেখানে এক ভূবিবর হইতে ইহার উদ্ভব। উৎস হইতে জলের সঞ্চয় পায় না, কিন্তু পথে চলিতে চলিতে বীরভূমের দক্ষিণ-অংশ-ধৌত জল সংগ্রহ করিয়া কোপাই পথের শেষে পৌছিয়াছে।
উৎস হইতে আরম্ভ করিয়া কোপাইয়ের গতিপথের মাঝামাঝি পর্যন্ত তীরভূমি অত্যন্ত নিচু, অনেক স্থানেই নদীর সমতল; দুই তীরে মাঠ, সে মাঠে ধান ছাড়া আর কিছু ফসল ফলে না। নদীর শেষের অংশটায় তীরভূমি অত্যন্ত উচ্চ, নদীগর্ভ গভীর; গ্রীষ্মকালেও হাঁটুজল থাকে, তীরভূমিতে কোথাও কোথাও গভীর বন শাল তাল পলাশ সেগুনের।’
খোয়াই হলো প্রাকৃতিক নিয়মে মাটি ক্ষয় হয়ে নতুন আদল তৈরি হয়, নতুন রূপ লাভ করে, ক্ষয়ের মধ্যেও নতুন অবয়ব সৃষ্টি করার ফলে প্রতি বছরই নব নব বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। প্রমথনাথ বিশীর ভাষায় ঃ
বীরভূমে প্রকৃতির এক খেয়াল আছে; এই অঞ্চলের লোকে তাহাকে খোয়াই বলে; খোয়াই আর কিছুই নয়, বর্ষার জলে ক্ষইয়া-যাওয়া কঙ্কর-বাহির-হওয়া ভাঙা-ভাঙা-ডাঙা; এই খোয়াই বীরভূমের বৃহৎ একটা অংশ জুড়িয়া পড়িয়া আছে। বর্ষার বারিধারা অজস্র আঙুলে ইহাকে রচনা করিতেছে; জল চলিয়া গেলে কার্তবীর্যাজুনের হাজার হাতের হাজার হাজার আঙুলের কীর্তি পড়িয়া থাকে; তখন এই শূন্য প্রান্তরগর্ভে দাঁড়াইলে যতদূর চোখ যায়, উত্তরে পূর্বে, পশ্চিমে দক্ষিণে, ধূসর, রক্তিম, গহ্বর দৃষ্ট হয়; চারি দিকে উঁচু নিচু মাঝারি কঙ্করের গিরিমালার মতো; নীচে বালুর শয্যা; বালুশয্যার একান্তে কোথাও কোথাও স্বচ্ছ ক্ষীণ জলরেখা; এই জলরেখার তীরে তীরে কেতকী-ফুলের ঝোপ; যেখানে মাটির অংশ বেশি সেখানে হৈমন্তিক ধানের ক্ষেত; এই ক্ষেতের পাশে পাশে শরৎকালে কাশের ফুল ফোটে, বর্ষায় আর শরতে প্রকৃতির এই দিগন্তব্যাপী গেরুয়ার মধ্যে সাদা আর সবুজের প্রক্ষেপ দেখা যায়; বৎসরের বাকি সময়ে এই দগ্ধ ধূসর রক্তিম বন্ধুর তরঙ্গায়িত ভূখণ্ড আনন্দমঠের সন্তানবাহিনীর পুঞ্জ পুঞ্জ গেরুয়া বস্ত্ররাশির মতো পড়িয়া থাকে; খোয়াই আর কিছুই নয়, জলহীন জনহীন নিস্তব্ধ লোহিত সমুদ্র মাত্র।
তবে একথা স্বীকার্য যে, বর্তমান বোলপুরের ব্যাপ্তি, বৃদ্ধি ও পরিচিতির পশ্চাদপটে রয়েছে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের আগমন, ধর্মচর্চার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় স্থাপন এবং পরবর্তী সময়ে বিশ্বভারতীর পূর্ণ বিকাশ। এছাড়াও দ্রুত উন্নতির মূলে রয়েছে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানী’ কর্তৃক রেলওয়ে বিস্তার।
শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে ১২৯৫ সনের ৪ কার্তিক যে সভা অনুষ্ঠিত হয় তার বিবরণটি নিম্নরূপ ঃ
‘জেলা বীরভূমের অন্তর্গত বোলপুর রেলওয়ে ষ্টেশনের অনতিদূরে ভক্তিভাজন শ্রীমহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের শান্তিনিকেতন নামক একটি সুন্দর উদ্যান ও উদ্যান মধ্যস্থ শোভাময় পরম রমণীয় প্রকাণ্ড প্রাসাদ আছে। এই উদ্যানবাটীর চারিদিকেই উন্মুক্ত আকাশ ও সুপ্রশস্ত প্রান্তর। উদ্যানের চতুর্দিকে শাল প্রভৃতি বৃক্ষশ্রেণী মুক্ত বায়ুতে সর্বদাই ক্রীড়াশীল। তরুরাজি, বিহঙ্গ কূজিত হইয়া সংসার তাপিত হৃদয়ে শান্তি বর্ষণ করিতেছে। নিকটে নির্মলতোয়া সুপ্রশস্ত বাঁধ ও উদ্যান, ভিতরে সুগভীর প্রশস্ত ইঁদারা। এই স্থান সাধনার অতীব অনুকূল, যেমন নির্জন, তেমনি শান্তিময়, পবিত্র ও রমণীয়। এখানে আসিলে সংসার কোলাহল আপনিই অন্তর্হিত হয়। মানব হৃদয় স্বভাবতই ঈশ্বর চিন্তার জন্য ব্যাকুল হয়। এই নিকেতন যথার্থই শান্তিনিকেতন। ধর্মপিপাসু নির্জন সাধকের অতি প্রিয় পদার্থ। এই স্থানে পূজ্যপাদ মহর্ষি মহাশয় বহুকাল ঈশ্বরের ধ্যান ধারণায় অতিবাহিত করিয়াছেন। সম্প্রতি তিনি উদ্যান ও উদ্যান মধ্যস্থ প্রাসাদ প্রভৃতি বহু অর্থ ব্যয়ে মেরামত ও সুসজ্জিত করিয়া সাধারণের আধ্যাত্মিক কল্যাণ্যেদ্দেশে উৎসর্গ করিয়াছেন।
ইতিহাস বলে- প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪৬ সালে ১ আগস্ট মৃত্যু বরণ করেন। সে সময় পিতার অপরিমিত ব্যয়ের জন্য দেবেন্দ্রনাথ ঋণভারে জর্জরিত হন। পরে তা পরিশোধও করেন। বিরাট সংসারের দায়দায়িত্ব পালন করলেও মানসিকতায় অধ্যাত্ম ভাবনায় আচ্ছন্ন থাকতেন। ‘ব্রাহ্মধর্ম’ নামে পরিচিত নতুন এক ধর্মবোধ জনমানসে জাগ্রত করার চেষ্টা করতেন তিনি। এই ধর্মবোধ তৎকালে অনেককে আকৃষ্ট করেছিল এবং সেই অনেকের মধ্যে একটি ছিল বোলপুরের সন্নিকট ‘রায়পুরের সিংহ পরিবার।’ ব্রাহ্মধর্মকে কেন্দ্র করেই সিংহ পরিবার ও ঠাকুর পরিবারের মধ্যে সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে এবং সম্ভবত সে কারণেই দেবেন্দ্রনাথ একবার রায়পুর এসেছিলেন ১২৬৮ সনের (১৮৬১ সাল) মাঘ মাসের কোনো একদিন। ১৮৫৯ সালে বোলপুর রেল স্টেশনের কাজ শুরু হয়, দেবেন্দ্রনাথ আসেন ১৮৬১ সালে, ধরে নেয়া যায় তিনি রেলপথেই এসেছিলেন। রায়পুরে অবস্থান কালে কোনো একদিন পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ভ্রমণে বের হন,- সুরুল, চীপ সাহেবের কুঠী, গোয়ালপাড়া, তালতোড়, পারুলডাঙা, মাঝে ফাঁকা মাঠ, গাছপালার জঙ্গল আর খোয়াই, বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। ঘুরে ঘুরে দিগন্ত প্রসারিত ঐ মাঠের মাঝে দুটি ছাতিম গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেন এবং তখনই তার মনে হয় এই রকম একটি নির্জন জায়গা উপাসনার পক্ষে আদর্শ স্থান। রায়পুরের জমিদার ভূবন মোহন সিংহের সহায়তায় ভুবন মোহনের ‘ডাঙা’ বা ‘ভুবন ডাঙা’ নামে পরিচিত ছাতিমতলা সমেত কুড়ি বিঘা জায়গা ভুবন মোহনের উত্তর পুরুষ প্রতাপনারায়ণ সিংহের কাছ থেকে ১২৬৯ সনের ১৮ ফাল্গুন (১৮৬৩, মার্চ) কোম্পানী নির্দিষ্ট বার্ষিক পাঁচ টাকা খাজনায় মৌরসী পাট্টা পেলেন। উদ্দেশ্য একটাই- নির্জন প্রান্তরে নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা করা। এই অঞ্চলটি ‘আশ্রম এলাকা’ নামে পরিচিত। এখানে প্রথমে একতলা, পরে দোতলা বাড়ি তৈরি করে চারদিকে কিছু গাছ রোপণ করা হলো। একটি শান্ত পরিবেশের মধ্যে বাড়ি-নাম দেয়া হলো ‘শান্তিনিকেতন’। ‘শান্তিনিকেতন’ নামে বাড়ির নাম থেকেই সমগ্র অঞ্চলটির নাম ‘শান্তিনিকেতন’ হয়েছে। ১৮৯৫ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ সপরিবারে ‘শান্তিনিকেতন’ বাড়িতে বাস করতে থাকেন। তখন ঘর বাড়ি বেশি ছিল না।
এক সময় রবীন্দ্রনাথের কাছে নিজ সন্তানদের শিক্ষা একটা সমস্যারূপে দেখা দেয়। তার মনে তখনও সাধারণ বিদ্যালয় সম্বন্ধে আপন বালক বয়সের ভীতি ছিল। বহু চিন্তার পর ভারতের পুরাতন আশ্রমিক পদ্ধতিতে শিক্ষার ব্যবস্থার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তখন মহর্ষি পিতার অনুমতি নিয়ে ১৩০৮ (১৯০১) সনে ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’ নামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরে নামকরণ পরিবর্তন করে ‘ব্রহ্ম বিদ্যালয়’ রাখা হয়। রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যায়তন আশ্রমের ভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে অগ্রসর হবে। রবীন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন-
‘এখানে সকল বিচিত্র সাধনার স্থান হইবে, সকল সাধনার উপরে থাকিবে ব্রহ্মের সাধনা, ভূমার সাধনা। এখানে জ্ঞানী আসিবেন, বৈজ্ঞানিক আসিবেন, শিল্পী আসিবেন, কর্মী আসিবেন- ক্রমে হয়ত বিশ্ববিদ্যালয় হইয়া উঠিবে... বিশ্ববিদ্যালয় এখানে একটা বিশ্বতীর্থের মতই হইয়া উঠিবে।’
পরবর্তীতে এ বিদ্যালয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যলয়ে পরিণত হয়। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ আন্তর্জাতিকতাবাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং সেই বিশ্বাস থেকেই ‘বিশ্বভারতীর জন্ম’। তিনি বলেছেন-
‘ঠরংাধ ইযধৎধঃর ৎবঢ়ৎবংবহঃং ওহফরধ যিবৎব ংযব যধং যবৎ বিধষঃয ড়ভ সরহফ যিরপয রং ভড়ৎ ধষষ. ঠরংাধ ইযধৎধঃর ধপশহড়ষিবফমবং ওহফরধ'ং ড়নষরমধঃরড়হ ঃড় ড়ভভবৎ ঃড় ড়ঃযবৎং ঃযব যড়ংঢ়রঃধষরঃু ড়ভ যবৎ নবংঃ পঁষঃঁৎব ধহফ ওহফরধ'ং ৎরমযঃ ঃড় ধপপবঢ়ঃ ভৎড়স ড়ঃযবৎং ঃযবরৎ নবংঃ.’
এ লক্ষ্যে তিনি ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা উপস্থাপন করে বলেছেন-
(যত্র বিশ্বং ভবত্যেকনীড়ম)
(ডযবৎব ঃযব ড়িৎষফ সধশবং রঃং যড়সব রহ ধ ংরহমষব হবংঃ.)
‘.. ভারতবর্ষে যদি সত্য বিদ্যালয় স্থাপিত হয় তবে গোড়া হইতেই সে বিদ্যালয় তাহার অর্থশাস্ত্র, তাহার কৃষিতত্ত্ব, তাহার স্বাস্থ্যবিদ্যা, তাহার সমস্ত ব্যবহারিক বিদ্যাকে আপন প্রতিষ্ঠা স্থানের চতুর্দিকবর্তী পল্লীর মধ্যে প্রয়োগ করিয়া দেশের জীবনযাত্রার কেন্দ্রস্থান অধিকার করিবে। এই বিদ্যালয় উৎকৃষ্ট আদর্শে চাষ করিবে, গো-পালন করিবে, কাপড় বুনিবে এবং নিজের আর্থিক সম্বল লাভের জন্য সমবায় প্রণালী অবলম্বন করিয়া ছাত্র শিক্ষক ও চারিদিকের অধিবাসীদের সঙ্গে জীবিকার যোগে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হইবে। এইরূপ আদর্শ বিদ্যালয়কে আমি ‘বিশ্বভারতী’ নাম দিবার প্রস্তাব করিয়াছি’। - রবীন্দ্রনাথ।
(ক্রমশঃ)
লেখক: সাহিত্যিক, গবেষক ও সাবেক অধ্যাপক
মোবাইল: ০১৭১১-৩৪১৭৩৫