Published : Wednesday, 10 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 10.11.2021 12:49:38 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর:
কুমিল্লার চান্দিনায় নিরাপত্তাহীনতায় উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় অংশ নেয়নি ১২ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত পৃথক দুইটি সভায় উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানই অনুপস্থিত ছিলেন!
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা জানান, ৩০ অক্টোবর চান্দিনা থানায় ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ উদযাপনে থানার ওসি’র দাওয়াতে অন্যান্যদের মতো অংশ নেন শুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমাম হোসেন সরকার। ওই সময় থানার ভিতরেই ওই চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করেন বরকইট ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান সহ একটি বাহিনী। অপরদিকে, উপজেলা পরিষদে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা চলাকালিন সময়ে উপজেলা পরিষদ মাঠে মাধাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অহিদ উল্লাহকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন একই ব্যক্তি। ওইসব ঘটনায় সম্মানহানীর ভয়ে এবং অনেকটা প্রতিবাদ স্বরূপ উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভায় অংশ নেয়নি ১২ চেয়ারম্যান।
শুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমাম হোসেন সরকার জানান, ‘গত ৩০ অক্টোবর চান্দিনা থানায় ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ আমি ওসির আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম। র্যালি শেষে আমি থানার বারান্দা যাওয়ার পর হুন্ডা চোর শাহজাহান আমাকে ওসি ও উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সামনে হামলা করে। এক পর্যায়ে আমার প্রাইভেটকার নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে যায় শাহজাহান। আমি প্রাণ ভয়ে ওসি’র কক্ষে আশ্রয় নেই। পরে ওসির হস্তক্ষেপে প্রাইভেটকার ফিরত দিলেও গাড়িতে থাকা দেড় লক্ষ টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী ফেরত দেয়নি’। আমার মতো অনেক চেয়ারম্যানই নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এ বিষয়টি আপনি বর্তমান সংসদ সদস্যকে অবহিত করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, আমি আওয়ামী লীগের অনেক নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি। তবে এমপিকে জানাইনি’।
মাধাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অহিদ উল্লাহ জানান, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থানায় নিরাপত্তা পায়নি। আমাকে উপজেলায় একটি অপমানিত করে ওই শাহজাহান। এমন একটি ছেলের কাছে যদি আমাদের নিরাপত্তা না থাকে আর তার বিরুদ্ধে যদি প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা কোথায় যাব?
বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম জানান, ‘থানায় ওসি’র কক্ষে গিয়েও যদি একজন চেয়ারম্যান নিরাপত্তা না পায় তাহলে কিভাবে চলবে। আমরা ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন- ‘চেয়ারম্যানের গায়ে কেউ হাত দেয়নি। তবে তার ড্রাইভারের সাথে হাতাহাতি হয়েছে। আর থানা থেকে গাড়ি নিয়ে গেলেও আবার সেই গাড়ি আমরা ফেরতও এনে দিয়েছি। এছাড়া চেয়ামর্যানকে থানা থেকে পুলিশের সহযোগিতায় সুহিলপুর পৌঁছে দিয়েছি। এছাড়া এমপি মহোদয়ের নির্দেশ দিয়েছেন, যারাই বিশৃঙ্খলা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি’।
এব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুন নাহার বলেন- ‘আজকের মিটিংয়ে সব চেয়ারম্যানদেরকেই চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তারা কেন আসেনি আমি জানি না।’
এব্যাপারে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী বলেন- ‘আমি কয়েকজন চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছে- আপনারা চেয়ারম্যানদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না। আপনাদের মিটিংয়ে কিভাবে যাবো ?