জহির
শান্ত : সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠেয় কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে
প্রার্থী বাছাই নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। ৫ম ধাপের ভোটে একই
সংসদীয় আসনের অপর উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়ায় আওয়ামী লীগের ভরাডুবির পর বিষয়টি
নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেনো বুড়িচংয়েও না হয়-
সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্ক দৃষ্টি ক্ষমতাসীন দলটির।
গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠের অবস্থান,
জনসম্পৃক্ততা এবং দলে অবদানের বিষয়টি। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি এ উপজেলার ৯টি
ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্কতার বিষয়টির সাথে একমত
পোষণ করে বুড়িচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৫
(বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের এমপি এডভোকেট আবুল হাসেম খান বলেন, ইতোমধ্যে
৯টি ইউনিয়নে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আরো যাচাই-বাছাই
করে চূড়ান্ত তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে অর্ধশতাধিক নেতা আগ্রহ প্রকাশ
করেছেন। যোগ্যতার ভিত্তিতেই কেন্দ্রে মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তালিকা পাঠানো
হবে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর (শেখ হাসিনা) উপর আমাদের আস্থা আছে;
নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যাকে নৌকা প্রতীক দিবেন- তার পক্ষেই
সবাইকে কাজ করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে ছাড় দেয়া হবে না।
এমপি হাসেম খান
বলেন, দলীয় মনোনয়ন না পেলে যারা ‘বিদ্রোহী’ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিবেন- তারা
আর আওয়ামী লীগ করার সুযোগ পাবেন না। তাদেরকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।
ভবিষ্যতে যদি বিদ্রোহীরা সুযোগ পান, তবে দলীয় শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটবে। সুতরাং
‘বিদ্রোহের’ চিন্তা মাথায় থাকলে, বহিস্কারের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।’
‘তবে
দলীয় মনোনয়ন চেয়েও যারা পাবেন না- তারা যদি দলের সার্থে নৌকার হয়ে কাজ
করেন, ভবিষ্যতে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। তারা দলের নেতৃত্বে সুযোগ পাবেন
পাবেন।’ যোগ করেন হাসেম খান।
এদিকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়ায়
ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে
বুড়িচংয়ের রাজনীতিতেও। এ উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, দল থেকে
যদি প্রার্থী বাছাইয়ে সঠিক ব্যক্তি নির্ধারণ করা না হয়- সেক্ষেত্রে
বুড়িচংয়েও ভরাডুবির শঙ্কা থেকে যায়। কারণ এ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাই তারা
বলছেন, নৌকার প্রার্থী হিসেবে যেনো সঠিক ব্যক্তিকেই বেছে নেয়া হয়। ভুল
সিদ্ধান্তে যেন ডুবতে না হয় আওয়ামী লীগকে।
আগামী ৭ জানুয়ারি বুড়িচং
উপজেলার রাজাপুর, বাকশীমূল, বুড়িচং সদর, ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, ময়নামতি,
মোকাম, ভারেল্লা উত্তর ও ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ হবে।
তফসিল
অনুযায়ী- চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা ১২ জানুয়ারি
পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়ন
যাচাই-বাছাই হবে ১৫ জানুয়ারি। এ ছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২
জানুয়ারি।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান,
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বুড়িচংয়ে
যেনো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়- সে লক্ষ্যে জেলা
প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯টি
ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে
সকল প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।