মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
কুমিল্লার
মুরাদনগরে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার তিন
ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার বিল্লাল মেহেদীর বিরুদ্ধে। গত ৩
দিনেও এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনরূপ দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায়
জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আঞ্চলিক নির্বাচন
কর্মকর্তা মোঃ দুলাল তালুকদার জানান, বিষয়টি জেনেছি। অভিযুক্ত ওই
কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে
জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই রিটার্নিং অফিসার বিল্লাল
মেহেদী গত বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন ত্যাগ করে ব্যক্তিগত রুমে
গিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করছেন এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও চিত্র
এসেছে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে। ভিডিওতে দেখা গেছে যাচাই-বাছাইয়ের সময়
প্রার্থীতা বাতিলের ভয় দেখিয়ে ওই কর্মকর্তা ৫০০-১০০০ টাকা করে নিয়েছেন।
জানা
যায়, ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ৩১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে মুরাদনগর
উপজেলার ২১ ইউনিয়নে। গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারী) ছিল প্রার্থীতা যাচাই
বাছাই। ২১ ইউনিয়নের বিপরীতে সাতটি বুথ তৈরি করা হয় বাছাইয়ের জন্য। সেই
সুবাধে হোমনা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিল্লাল মেহেদী উপজেলার যাত্রাপুর,
বাঙ্গরা পূর্ব ও বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে
রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, যাত্রাপুর ইউনিয়নে
চেয়ারম্যান পদে ৬, সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৪ ,
বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬, সাধারণ সদস্য পদে ৩১ ও সংরক্ষিত
মহিলা সদস্য পদে ১২, বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১৩, সাধারণ
সদস্য পদে ৭ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৪১ জন প্রার্থী রয়েছে। ওই তিন
ইউনিয়নে মোট প্রার্থী রয়েছেন ১শ ৪৪ জন। রিটার্নিং অফিসার বিল্লাল মেহেদী
প্রার্থী ভেদে ৫শ থেকে এক হাজার টাকা করে নিয়েছেন বলে প্রার্থীরা
জানিয়েছেন। গড়ে পাঁচশত টাকা করে হিসাব করলে তিনি ৭২ হাজার টাকা নেয়। শুধু
তাই নয়, ভিডিও চিত্রে নির্বাচনে প্রার্থীদের বিভিন্ন রকম সহযোগীতার আশ্বাসও
দেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও
সাধারণ সদস্য প্রার্থী বলেন, দরজা বন্ধ করে রিটার্নিং অফিসার বিল্লাল
মেহেদী একেকজন করে রুমে নিয়েছেন। তিনি সরাসরি আমাদের কাছ থেকে টাকা চান।
টাকা না দিতে চাইলে বিভিন্ন অজুহাতে তালবাহানা করেন। এক সংরক্ষিত মহিলা
সদস্য প্রার্থী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে তাকে রুম থেকে বাহির করে
দেন তিনি। ঝামেলা এড়াতে আমরা তাকে টাকা দিয়ে চলে আসি।
এ বিষয়ে জানতে
চাইলে রিটার্নিং অফিসার বিল্লাল মেহেদী দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ‘টাকা
নেওয়ার কোন প্রমাণ থাকলে আপনি আমাকে দেখাবেন। আমি হল রুমে সবার সামনে
যাচাই-বাছাই করেছি। কিছুক্ষণ হলরুমে থেকে পরে আপনি নিজস্ব কক্ষে
যাচাই-বাছাই করেছেন, এমন প্রশ্নে? তিনি মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন। পরে
একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।’
কুমিল্লা জেলা নির্বাচন
অফিসার মোহাম্মদ মুঞ্জুরুল আলম দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট
অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিব।’