করোনাভাইরাসের
নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা
আবার দেড় হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার
ফের ৬ শতাংশের উপরে উঠে গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল
পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১ হাজার ৪৯১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর একদিনে
এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সেদিন ১ হাজার ৫৬২ জনের মধ্যে সংক্রমণ
ধরা পড়েছিল। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭০০ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ১০২ জনের মৃত্যু
হল এ ভাইরাসে।
রোববার দেশে মোট ২১ হাজার ৯৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এর
আগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৭
দশমিক ৬৯ শতাংশ। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময় গতবছর
জুলাই-অগাস্ট সময়ে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর তা
নামতে নামতে জুলাই মাসে ২ শতাংশের নিচে চলে আসে।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি
সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে
শুরু হয় ওমিক্রনের ত্রাস। ৩ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশ এবং ৬
জানুয়ারি তা ৫ শতাংশ ছাড়ায়।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ২১৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৯০৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই
হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৯৩ জন, যা এক সপ্তাহ
আগে ছিল ৮ হাজার ৮৩২ জন। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে সক্রিয় রোগী বেড়েছে ৬৬
শতাংশের বেশি।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১২৫৪ জনই ঢাকা বিভাগের
বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৮৪ শতাংশের বেশি। দেশের ২৯টি জেলায় একদিনে
কারও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
যে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন নারী আর একজন পুরুষ। দুজন ঢাকার, একজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
তাদের দুজনের বয়স ছিল বয়স ছিল ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনের ২১ হাজার ৯৮০টি নমুনা মিলিয়ে এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৭৯৫টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। গত বছর ৩১
অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক
বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত
হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম
মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে
মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে
মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৪ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩০ কোটি ৫২ লাখের বেশি রোগী।