Published : Thursday, 13 January, 2022 at 12:00 AM, Update: 13.01.2022 12:37:25 AM
তানভীর
দিপু: কুমিল্লা জেলায় শহর এলাকাগুলো টিকা গ্রহনের দিক থেকে কিছু এগিয়ে
থাকলেও পিছিয়ে গেছে উপজেলা গুলো। গত ডিসেম্বরেও টিকা গ্রহনে পিছিয়ে থাকা
দেশের ১৫ টি জেলার মধ্যে অবস্থান ছিলো কুমিল্লার। অসচেতনতার কারণে টিকার
নিবন্ধন কম হওয়ায় হার কমেছে টিকা প্রদানেরও। তবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায়
কুমিল্লা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। প্রত্যন্ত এলাকা ও
পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দেয়া হচ্ছে করোনার টিকা। ইউনিয়ন
পর্যায়ে এসব টিকা গ্রহিতার নিবন্ধনের জন্যও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জেলা
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনা টিকার জন্য নিবন্ধিত
জনগোষ্ঠীর ৪২ শতাংশ মানুষকে টিকার এক ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সিটি
কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান কিছুটা এগিয়ে ৬০ শতাংশের কাছাকাছি।
তবে উপজেলা পর্যায়ে এই হার মাত্র ৩৯ শতাংশ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে,
ডিসেম্বর কম থাকলেও জানুয়ারিতে এর উন্নতি হবে। কারন এবার জেলায় কলেজ ও
স্কুল শিক্ষার্থীদেরও করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। তার পাশাপাশি স্কুল কলেজে
যায়না এমন শিশু ও কিশোরদেরও টিকার আওতায় আনা হচ্ছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি
যারা অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন কিছু বুঝেনা তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য মহল্লায়
বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য কর্মীরা। তাছাড়া বিভিন্ন আশ্রয়ন
প্রকল্পের লেকজন, তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন, কলকারখানার শ্রমিকদের জন্য বিশেষ
ক্যাম্পেইনসহ নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ।
এ জন্য জানুয়ারি মাস থেকে
শুরু হয়েছে বিশেষ প্রকল্পের কার্যক্রম। প্রকল্পটি জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলায়
প্রাথমিকভাবে শুরু হলেও এখন কয়েকটি উপজেলায় কাজ চলছে। সম্প্রসারিত টিকাদান
কর্মসূচি (ইপিআই) কর্মীরা যারা স্কুল কলেজে যায়না তাদের বাড়িতে গিয়ে টিকা
প্রদান করছে। সাপ্তাহে দুদিন বিশেষ ক্যাম্পেইনে ২০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলায় করোনা টিকার জন্য মোট নিবন্ধিতদের সংখ্যা ২৬
লাখ ৭৯ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে ২৬ লাখ ৯ হাজার ৮৩ জন এক ডোজ টিকার আওতায়
এসেছেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকতা মোঃ ইউনুছ ফারুকী বলেন, খুব দ্রুতই স্কুল
কলেজ শিক্ষার্থী ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকার আওতায় আনা হচ্ছে। আমাদের মোট
শিক্ষার্থী রয়েছে পাঁচ লক্ষ ৮০০শত ৩৭ জন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত চার লক্ষ
২১ হাজার ৭১২ জন শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ
নিয়েছেন ১৪ হাজার ৭৩৫ জন। এ সাপ্তাহের মধ্যে আমাদের লক্ষমাত্রা পূরন বলে
বলে আশা করি।
জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন,
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী কোভিডের টিকা প্রান্তিক পর্যায়ে সকলের জন্য
সহজলভ্য করতে চাই। সে লক্ষে আমাদের পিছিয়ে পড়া লোকজন, যারা স্কুলে যায়না
আবার বিভিন্ন আশ্রয় প্রকল্পের লোকজন, তৃতীয় লিঙ্গেও লোকজনদের স্থানীয়
জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় তালিকা করে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তাদের টিকার
ব্যবস্থা করছি। তিনি আরো বলেন ডিসেম্বর মাসে টিকা গ্রহিতার দিক দিয়ে দেশের
পিছিয়ে পড়া ১৫ জেলার মধ্যে কুমিল্লা রয়েছে। বর্তমানে জানুয়ারি মাসে
শিক্ষার্থীদের টিকাসহ আমাদের বিশেষ প্রকল্প মাধ্যমে টিকা প্রদানের ফলে আমরা
টিকা কার্যক্রমে আরো অনেকদুর এগিয়ে যাব। আমাদের বিশেষ প্রকল্পের
পরিকল্পনাটি কুমিল্লা থেকেই শুরু হয়েছে। এটি এখন দেশের অন্যান্য জেলায়ও
শুরু করা হচ্ছে।