Published : Saturday, 5 February, 2022 at 12:00 AM, Update: 05.02.2022 1:02:32 AM
তানভীর
দিপু: সারাদেশের মত কুমিল্লাতেও গতকাল দুপুর থেকে হালকা থেকে মাঝারি
বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শীতকালে মাঘ মাসে এমন বৃষ্টিতে কাবু শীতার্ত মানুষ। গত
কয়েকদিন ধরে টানা ঠান্ডা আবহাওয়া সাথে ঝিরঝির বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছে
সাধারণ শ্রেণী পেশার লোকজন। খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ
বেশি। এদিকে অসময়ে এই বৃষ্টিপাত কৃষিতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের
প্রভাব পরতে পারে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান। তিনি জানান, এই বৃষ্টি বোরো ধানের জন্য
আশির্বাদ। তবে আলু, টমেটো ও সরিষার ফলনে কিছুটা ক্ষতিকর প্রভাব পরতে পারে।
এজন্য কৃষকদের প্রতি পরামশর্- বৃষ্টি শেষেই যেন এসব ফলনের জমিতে ছত্রাকনাশক
ঔষধ ব্যবহার করেন।
কুমিল্লার আবহাওয়া কর্মকর্তা ঈসমাইল ভুইয়া জানান,
শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশের মতো
কুমিল্লাতেও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে শুক্রবার
সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমিল্লাতে কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া যায় নি।
এদিকে
গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই কুমিল্লায় হালকা দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত
শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টানা হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়।
শীতের এই বৃষ্টি ও শীতল বাতাসে মাঘ মাসের শীতে যেন কাবু হয়ে পরে নগরবাসী।
বিকালের পর রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা দেখা যায়। রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল কমে
আসে। শীতল বাতাসে হকার এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের অনেককেই মালপত্র গুটিয়ে চলে
যেতে দেখা গেছে। এছাড়া টাউন হল মাঠসহ বিভিন্ন খোলা জায়গায় ভাসমান মানুষদের
আগুণ জ¦ালিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা গেছে।
রিকশা চালক আলমগীর বলেন, হঠাৎ
করে এমন বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে ভিজলে জ¦র চলে আসতে পারে। তাই প্রায় আড়াই
ঘন্টা রিকাশা থামিয়ে চা দোকানে বসেছিলাম। আয় রোজগারও তেমন হয়নি। একই পেশার
মাসুম বলেন, বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা চালালাম। হাড়কাঁপানো শীত। কিন্তু কিছু
করা নেই। রিকশার জমা দিতে হবে। তাই কষ্ট করে হলেও চালাতে হবে।
কান্দিরপাড়
লিবার্টি মোড়ে মাটির তৈজসপত্র বিক্রেতা হেলাল বলেন, এমনিই প্রশাসনের কারনে
রাস্তায় দাঁড়ানো যায় না। তার উপর এই আবহাওয়ায় রাস্তায় মানুষের সংখ্যা কমে
গেছে। বেঁচা কেনা তো একবারেই নেই।
মাঘ মাসে অসময়ে বৃষ্টিতে কৃষিতে
দ্বিমুখী প্রভাব পরবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বোরো ধান
আবাদরে জন্য এই বৃষ্টি খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করবে। অন্যদিকে যেসব ফলনের
জন্য শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন যেমন- আলু, টমেটো, সরিষায় প্রভাব পরবে। যদি
বেশি বৃষ্টি হয় গাছের গোড়ায় কাঁদা জমে গাছ মরে যেতে পারে। আর না হয়
ছত্রাকের আক্রমন হতে পারে। কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক
মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ডিসম্বরেও এমন বৃষ্টিতে একবার কৃষকরা ক্ষতির
মুখে পরেছিলো। আমরা সেটি সামাল দিয়ে উঠতে পেরেছি। আশা করি এই বৃষ্টিটাও আর
একদিনের বেশি দিন থাকবে না, আবহাওয়ায় পূর্বাভাস তাই বলে। তবে কৃষকদের যেন
ক্ষতির মুখে পরতে না হয় কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা সচেষ্ট আছে।