এক কোটি ডোজ কোভিড টিকা প্রয়োগে এক দিনের যে গণটিকাদান কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, তা আরও দুদিন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম ডোজ দেওয়া শেষ হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার দেশজুড়ে গণটিকাদানে এক কোটি ব্যক্তিকে প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল।
তবে সকাল থেকে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক ভিড়ের প্রেক্ষাপটে গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রথম ডোজ দেওয়ার সময় আরও দুদিন বাড়ানোর কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও প্রচুর ভিড় দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। মানুষকে দীর্ঘসময় ধরে কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। সে কারণে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানোর।”
বিকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যেহেতু টিকা নিয়ে মানুষের অনেক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। অনেক লোক আজ (শনিবার) টিকা না-ও নিতে পারে, সেজন্য আমরা এই কার্যক্রম আরও দুদিন বৃদ্ধি করলাম, দেশের মানুষের সুবিধার্থে।”
যারা এতদিন টিকা নিতে পারেননি, এমন হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে ভিড় করছেন দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে। এরমধ্যে অনেকেই আছেন, যারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন কিন্তু এসএমএস আসেনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত যে খবর পেয়েছি, তাতে আজ এক কোটির বেশি টিকা মানুষকে দেওয়া হবে।”
সবাইকে টিকা নিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “এখন পর্যন্ত যারা করোনাভাইরাসের টিকা জন্য নিবন্ধন করেছেন বা করেননি, এমন সবাই এই সময়ের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে নেবেন। কেউ এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করবেন না।”
তবে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ বাদ পড়লে স্থায়ী কেন্দ্র থেকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারবেন।
“আমরা কখনও বলিনি, করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। আমরা বলেছি, ২৬ তারিখের মধ্যে সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরমধ্যে যৌক্তিক কারণে কেউ যদি টিকার প্রথম ডোজ নিতে না পারেন, তারা আমাদের যে স্থায়ী কেন্দ্রগুলো আছে যেখানে দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে সেখানে আসলে টিকা নিতে পারবেন।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রীও সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গণটিকা কর্মসূচির আওতায় প্রথম ডোজ টিকাদান আরও দুদিন চলবে। পাশাপাশি প্রথম ডোজও দেওয়া হবে।
“বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের এমন ভিড়! টিকা নিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্যানিক ভাব আছে। হয়ত ভাবছে আজকের পর টিকা পাবে কি না। আমি আশ্বস্ত করছি, আজকের পরও টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজ এবং বুস্টার ডোজ চলমান থাকবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ৮১ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ১৯ লাখ এবং বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৫ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ।